Bengaluru Police Inspector: পুলিশ ইন্সপেক্টরকে নিজের রক্ত দিয়ে প্রেমের চিঠি লিখলেন তরুণী! অতঃপর যা হল…
সরকারি কাজে বাধা, উত্যক্ত করা ও ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে এক মহিলার বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে রামমূর্তি নগর থানায়।
Truth of Bengal: প্রেমের প্রস্তাব থেকে শুরু করে আত্মহত্যার হুমকি—অভিযোগের পর অভিযোগে অস্বস্তিতে বেঙ্গালুরুর এক পুলিশ ইন্সপেক্টর। সরকারি কাজে বাধা, উত্যক্ত করা ও ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে এক মহিলার বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে রামমূর্তি নগর থানায়। অভিযোগকারী আধিকারিক সতীশ জিজে বর্তমানে ওই থানার স্টেশন হাউস অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি চলতি বছরের ১৯ আগস্ট থেকে এই পদে কর্মরত।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৩০ অক্টোবর থেকে ওই ইন্সপেক্টরকে লাগাতার ফোন করে বিরক্ত করা শুরু হয়। তাঁর সরকারি ফোন নম্বরে এক অচেনা নম্বর থেকে বারবার হোয়াটসঅ্যাপ কল আসতে থাকে। ফোনের অপর প্রান্তে থাকা মহিলা নিজেকে সঞ্জনা ওরফে বনজা বলে পরিচয় দেন এবং অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে থাকেন। তিনি দাবি করেন, তিনি ওই পুলিশ আধিকারিকের প্রেমে পড়েছেন এবং সেই প্রেমের স্বীকৃতি চাইছেন। প্রথমে বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিলেও, ক্রমাগত বিভিন্ন নম্বর থেকে কল আসায় পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে। একাধিক নম্বর ব্লক করলেও মহিলা নতুন নম্বর ব্যবহার করে যোগাযোগ চালিয়ে যান।
ধীরে ধীরে এই ঘটনার মধ্যে রাজনীতির ছায়াও পড়ে। ওই মহিলা নিজেকে কংগ্রেস কর্মী বলে দাবি করেন এবং মুখ্যমন্ত্রী, উপ-মুখ্যমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে বলে জানান। নিজের প্রভাব দেখাতে তিনি প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেত্রীদের সঙ্গে তোলা ছবিও পাঠান। কিছুদিনের মধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও উপ-মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে থানায় ফোন আসে, কেন তাঁর অভিযোগ শোনা হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন তুলে। তখন ইন্সপেক্টর স্পষ্ট জানান, ওই মহিলা কোনও লিখিত অভিযোগ জানাতে আসেননি, বরং অস্বাভাবিক আচরণ করছেন।
পরিস্থিতি আরও জটিল হয় যখন ওই মহিলা একদিন ইন্সপেক্টরের অনুপস্থিতিতে থানায় হাজির হন। তিনি নিজেকে তাঁর আত্মীয় পরিচয় দিয়ে অফিসে ফুলের তোড়া ও মিষ্টি রেখে যান। এর কিছুদিন পর, বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও গত ৭ নভেম্বর তিনি থানায় ঢুকে সরাসরি সতীশের হাতে একটি খাম তুলে দেন। সেই খামের ভিতরে ছিল তিনটি চিঠি এবং ঘুমের ওষুধের কয়েকটি পাতা। চিঠিতে লেখা ছিল, তাঁর প্রেম প্রত্যাখ্যান করা হলে তিনি আত্মহত্যা করবেন এবং তার দায় থাকবে ওই পুলিশ আধিকারিকের উপর। আরও চাঞ্চল্যকরভাবে, নিজের রক্ত দিয়ে হৃদয়ের চিহ্ন এঁকে সেখানে ভালোবাসার বার্তাও লেখা ছিল।
পুলিশি তদন্তে সামনে এসেছে, এই মহিলা অতীতেও একাধিক সিনিয়র ও জুনিয়র পুলিশ কর্মীর সঙ্গে একই ধরনের আচরণ করেছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশের একটি দল তাঁর বাড়িতে গিয়ে কাউন্সেলিংয়ের চেষ্টা করলেও মহিলা ও তাঁর পরিবার কোনওরকম সহযোগিতা করেননি। এরপর গত ১২ ডিসেম্বর তিনি ফের থানায় এসে চিৎকার শুরু করেন এবং প্রকাশ্যে ইন্সপেক্টরের সম্মানহানি ও আত্মহত্যার হুমকি দেন।
ক্রমাগত হেনস্থা এবং সরকারি কাজে বাধা পড়ায় শেষ পর্যন্ত নিরুপায় হয়ে সতীশ জিজে আইনের দ্বারস্থ হন। ওই মহিলার বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, অপরাধমূলক ভীতি প্রদর্শন এবং আত্মহত্যার হুমকির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।






