রাজ্যের খবর
Trending

৪৬ বছরের অতন্দ্র প্রহরী ভূমিকার অবসর, বিদায় বেলায় আদরের ছাত্রদের চোখে জল…

Ghanashyam Thapa's Retirement of 46 years of vigilante role

The Truth Of Bengal: নেপাল থেকে বাংলায় এসেছিলেন ঘনশ্যাম থাপা। সামান্য বেতনের বিনিময়ে ৪৬বছর অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করেন তিনি। তেলেনিপাড়া ভদ্রেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়কে  স্নেহের ছায়ায় বেঁধে রাখার চেষ্টা করেন ঘনশ্যাম।তাঁর প্রতি আলাদা মায়া রয়ে গেছে স্কুলের শিক্ষক থেকে পড়ুয়া সবারই।পুরনো দিনের স্মৃতির পাতায় চোখ ফেরাতে গিয়ে স্মৃতিমেদুর হয়ে পড়েন ভিনদেশ থেকে আসা এই প্রবীণ মানুষটি।

এমন কিছু মানুষ আছেন,যাঁরা অর্থের থেকেও কাজকে গুরুত্ব দেন।জীবনের কথা চিন্তা না করে জীবন উত্সর্গ করেন শুধুই মানুষের জন্য।সেরকমই এক দরদী মানুষ হলেন ঘনশ্যাম থাপা।যিনি ৪৬বছর ধরে মানুষের মনে আলো জ্বালানোর কারখানাকে আগলে রেখেছিলেন।একেবারে দায়িত্বশীল সিকিউরিটি গার্ডের মতো। ৯০-এর দশকে বাংলা বা হিন্দি সিনেমায় দেখা যেত রক্ষীর ভূমিকায় রয়েছেন নেপালি মানুষগুলো।যাঁরা আন্তরিকভাবে সবাইকে আগলে রাখতে ভালোবাসেন। দেশ-কালের সীমানা অতিক্রম করে আসা নেপালের এইসব মানুষগুলোই  কার্যতঃ সুরক্ষার গ্যারান্টি দেন।রিল লাইফের মতোই রিয়েল লাইফেও মায়া-য় মোড়া সম্পর্কের সেতুবন্ধন করেছিলেন ঘনশ্যামা থাপা। ৪৬বছর আগে নেপাল থেকে এদেশে এসেছিলেন তিনি।নামমাত্র বেতন পেতেন। মাত্র ৪হাজার টাকায় জনসেবায় জীবন সঁপে দেন। তবু কোনও দিন কর্তব্যে হানি ঘটাননি।এখন সেই নিরাপক্তার নজরদারের কার্যকাল শেষ হয়ে যাওয়ায় তেলেনিপাড়া-ভদ্রেশ্বর উচ্চবিদ্যালয়ের  শিক্ষক থেকে পড়ুয়া,অভিভাবক থেকে শিক্ষানুরাগী সবার মন খারাপ।

একবার এই বাহদুরদাকে দুষ্কৃতীরা ভয় দেখায়। তবু তিনি কর্তব্যপালনে কোনও গাফিলতি করেননি।তিনি ১৯৭৬ এর নেপাল থেকে এসেছিলেন কাজের সন্ধানে, হুগলির ভদ্রেশ্বরে। দৈনিক ৭৫ টাকা মজুরিতে তিনি কাজ করেন। সারা জীবন অস্থায়ী কর্মী রূপেই থেকে গেলেন।   শেষবার ২০০২ সালে স্কুল থেকে ছুটি নিয়ে নেপাল গিয়েছিলেন মায়ের মৃত্যুতে। এবার স্কুল ছেড়ে পুরোপুরিভাবে চলে যাওয়ার পালা।সুকান্তের রানারের মতো ভূমিকা পালন করা এই প্রবীণ মানুষটির দায়িত্বের প্রশংসা করছেন প্রধান শিক্ষক।

বিদায় বেলায় তাঁর আদরের ছাত্রদের চোখে জল, পড়ুয়ারা ফুল মিষ্টি দিয়ে তাকে বিদায় জানিয়েছে।সবার একটাই প্রার্থনা বাকি জীবনটা কাটুক আনন্দে …

Free Access

Related Articles