ভ্রমণরাজ্যের খবর

পর্যটকদের কাছে হোমস্টেকে আকর্ষণীয় করে তুলতে মালিকদের প্রশিক্ষণ দেবে রাজ্য

State Government will be training for Homestay Owner

The Truth of Bengal, Mou Basu: রাজ্য ও দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকদের কাছেও দিনে দিনে আকর্ষণীয় পর্যটন স্থল হয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গ। এর জলজ্যান্ত প্রমাণ পাওয়া গেছে সাম্প্রতিক কেন্দ্রীয় সরকারের পরিসংখ্যানেও। সম্প্রতি কেন্দ্র India: Tourism Statistics at a Glance প্রকাশ করেছে। ২০২২ সালে কত সংখ্যক বিদেশি পর্যটক কোন কোন রাজ্যে গেছে তা তুলে ধরা হয়েছে এই তালিকায়। বঙ্গবাসীর কাছে সুখবর হল এই তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছে বাংলা। বাংলার আগে রয়েছে গুজরাত ও মহারাষ্ট্র। গত বছর বাংলায় ১০ লাখ ৪০ হাজার বিদেশি পর্যটকের পা পড়েছে। ২০২১ সালে বিদেশি পর্যটকের আসার নিরিখে পঞ্চম স্থানে ছিল বাংলা। বিদেশিদের পাশাপাশি দেশের অন্য রাজ্য থেকে আসা পর্যটকদের নিরিখেও অষ্টম স্থানে আছে বাংলা। বেশ কয়েক বছর ধরে আমাদের রাজ্যে অসংখ্য হোমস্টে গড়ে উঠেছে। পর্যটক মহলে হোমস্টেকে আরো জনপ্রিয় করে তুলতে আরো উদ্যোগ নিচ্ছে রাজ্য সরকার। হোমস্টে মালিকদের হাতেকলমে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে রাজ্যের পর্যটন দফতর।

গত মে মাসে রাজ্য পর্যটন দফতরের টাস্ক ফোর্সের বৈঠকে হোমস্টে মালিকদের হাতেকলমে প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয় আলোচনা হয়। সেই বৈঠকেই নতুন কোর্সের বিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হোমস্টে মালিকরা যাতে নিজেদের সময়মতো প্রশিক্ষণ নিতে পারেন তাই কোর্স হবে সম্পূর্ণ অনলাইনে। রাজ্য পর্যটন দফতর সূত্রে খবর, ২০১১ সালে রাজ্যে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যের পর্যটন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। পর্যটক মহলে হোমস্টে ব্যবস্থাকে এখন আরো বেশি করে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। গন্তব্য বা বাড়ি তৈরির পাশাপাশি প্রশিক্ষণ, নথিভুক্তিকরণ ও ঋণের দিকেও নজর দেওয়া হয়েছে। এবার পরিষেবা, মানোন্নয়ন ও হোমস্টে ব্যবস্থাকে আরো বেশি করে জনপ্রিয় করে তুলতে অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। অনলাইনে নানান রকম ভিডিও আপলোড করা হবে। কোর্স সম্পূর্ণ করার পর পরীক্ষাও হবে। ২০ ঘণ্টার কোর্স মডিউল। থিওরি ক্লাস ৮ ঘণ্টার আর প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস ১২ ঘণ্টার। ১১টি টপিক শেখানো হবে কোর্সে। প্রতিটি ক্লাস হবে ৩৫-৪০ মিনিটের। হাতেকলমে ঘরদোর কীভাবে পরিষ্কার করে রাখতে হবে, খাবার কী রাখতে হবে, পরিষেবা কীভাবে দিতে হবে তার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

উত্তরবঙ্গের ৮টি জেলায় সরকারি ভাবে নথিবদ্ধ হোমস্টের সংখ্যা ১৬০৮টি। নথিভুক্ত না হওয়া হোমস্টের সংখ্যা কমপক্ষে ২ হাজার। সবচেয়ে বেশি নথিবদ্ধ হোমস্টে রয়েছে কালিম্পংয়ে-১০৩৪টি। পাহাড়ের নিরিবিলি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে হোমস্টের জুড়ি মেলা ভার। অনেকেই হোটেলে নয় প্রত্যন্ত পাহাড়ি গ্রামের কোণায় সুসজ্জিত হোমস্টেগুলিকেই বেছে নিচ্ছেন। সে কারণে বেশ কয়েক বছর ধরে দার্জিলিং, কার্শিয়াং, কালিম্পং থেকে শুরু করে লাভা, লোলেগাঁও-সহ একাধিক জায়গায় হোমস্টে নির্ভর পর্যটন ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। এজন্যই পর্যটকদের কথা মাতায় রেখে পাহাড়ের সমস্ত হোমস্টের তথ্যসমৃদ্ধ মোবাইল অ্যাপ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা জিটিএ। পুজোর আগেই যাতে মোবাইল অ্যাপ চালু করা যায় সে লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। সে জন্য জোরকদমে মোবাইল অ্যাপ তৈরির কাজ চলছে। উত্তরবঙ্গের পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গেও ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে হোমস্টে ব্যবস্থা। সে কারণে  পরিষেবা উন্নত করে তুলতে কী কী করণীয় সে ব্যাপারে সুস্পষ্ট প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে হোমস্টে মালিকদের।

Related Articles