দেশ

গেমিং-এর নেশায় বিপুল ঋণ! অবশেষে আত্মঘাতী মহারাষ্ট্রের যুবক

পরদিন ভোররাতে, প্রায় পাঁচটার সময় মা গরম জল দিতে গিয়ে ঘরের লোহার হুকে ছেলের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান।

Truth Of Bengal: ফের অনলাইন গেমিং-এর নেশা কেড়ে নিল এক তরতাজা প্রাণ। গেমের নেশায় ডুবে গিয়ে বিপুল ঋণের জালে জড়িয়ে পড়েছিলেন মহারাষ্ট্রের বারশির বাসিন্দা সমাধান তুকারাম নানভারে। শেষ পর্যন্ত সেই বোঝা আর সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন ৩২ বছর বয়সি এই যুবক।পরিবারের সদস্যরা তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত সমাধানের একটি বিউটি পার্লার বা স্যালনের ব্যবসা ছিল। পরিবার সূত্রে জানা যায়, ঘটনার আগের রাতে মা ও বোনদের সঙ্গে রাতের খাবার খেয়ে নিজ ঘরে ঘুমোতে যান সমাধান। পরদিন ভোররাতে, প্রায় পাঁচটার সময় মা গরম জল দিতে গিয়ে ঘরের লোহার হুকে ছেলের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে অনলাইন ‘চক্রি’ নামের একটি গেমে আসক্ত হয়ে পড়েন সমাধান। প্রথম দিকে ছোট অঙ্কে টাকা লাগালেও পরে বড় ক্ষতির মুখে পড়েন তিনি। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়, ব্যাংক ও বেসরকারি সংস্থা—সব জায়গা থেকে ঋণ নিতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে ঋণের পরিমাণ এতটাই বেড়ে যায় যে আর সামলাতে পারেননি তিনি। মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে তাঁর পরিবারে। বাবা-মা, তিন বোন, স্ত্রী এবং তিন বছরের এক পুত্রকে রেখে গিয়েছেন তিনি। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন সমাধান। জানা গেছে, মাত্র ছ’মাস আগে বাবার হার্ট সার্জারির জন্য আরও একটি ঋণ নিয়েছিলেন তিনি। এখন সেই ঋণ শোধ করার মতো কোনও উপায় নেই পরিবারের হাতে।

উল্লেখ্য, অনলাইন গেমিংয়ের নেশা নিয়ে মহারাষ্ট্র জুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে। গত জুন মাসেই ধরাসিব জেলায় একই কারণে ঋণের চাপে আত্মহত্যা করেছিলেন এক পরিবারের তিন সদস্য। বারবার এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটায় রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া।শিবসেনা ইতিমধ্যেই অনলাইন গেম নিষিদ্ধের দাবি তুলেছে। রাজ্যের বিধায়ক কৈলাস পাটিল এবং সাংসদ ওমরাজে নিম্বলকর এই প্রসঙ্গ তুলেছেন রাজ্য বিধানসভা ও লোকসভায়। যদিও সরকার কিছু গেমের উপর কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে, স্থানীয় নেটওয়ার্কে নতুন নামে সেই গেমগুলি ফের চালু হচ্ছে, ফলে সমস্যা থেকেই যাচ্ছে আগের মতোই।

Related Articles