সম্পাদকীয়

নির্বাচন কমিশনের কি নাগরিকত্ব নির্ধারণের অধিকার আছে?

এক মাসের মধ্যে বিএলও-দের বাড়ি বাড়ি তিনবার যাওয়া বাস্তবিক খুবই দুরূহ ব্যাপার।

সৈয়দ আনসার উল আলাম, ঘাটাল, পশ্চিম মেদিনীপুর: নির্বাচন কমিশন বিশেষ নিবিড় সংশোধনে জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছে। আমার প্রশ্ন এই ভোটার তালিকা সংশোধনের মাধ্যমে যাদের নাম বাদ যাচ্ছে তারা কি ভারতের নাগরিক নয়? নির্বাচন কমিশনের কি নাগরিকত্ব নির্ধারণের অধিকার আছে? নির্বাচন কমিশনের কাজ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পূর্ণ করার জন্য যাবতীয় পরিকল্পনা গ্রহণ করা। এক মাসের মধ্যে বিএলও-দের বাড়ি বাড়ি তিনবার যাওয়া বাস্তবিক খুবই দুরূহ ব্যাপার। তাছাড়া যাঁদের বিএলও নিযুক্ত করা হয়েছে, তাঁদের সংখ্যাগরিষ্ঠই শিক্ষক।

নির্বাচন কমিশন অতি দ্রুত ভোটার তালিকা সংশোধনের যে প্রক্রিয়া শুরু করেছে তাতে সাধারণ মানুষ তথা বিলও সবার উপরে প্রচণ্ড চাপ পড়বে। যেহেতু বিএলও-দের বড় অংশ শিক্ষক, তাই পড়াশুনার ক্ষেত্রেও প্রভূত ক্ষতি হবে। সামনেই ডিসেম্বরে বাৎসরিক পরীক্ষা শুরু হবে। বিশেষ নিবিড় সংশোধন এর দায়িত্বে থাকা শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত হয়ে যাবেন। অনেক প্রাথমিক স্কুলে তো মাত্র দুজন করে শিক্ষক, একজন শিক্ষককে বিএলও নিযুক্ত করা হয়েছে, সুতরাং পড়াশোনা এক্কেবারে লাটে উঠে যাবে। আর একজন শিক্ষক ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বাৎসরিক পরীক্ষার জন্য লেজেগোবরে হয়ে যাবেন!

বড় বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে অন্য রাষ্ট্রের সীমান্তবর্তী রাজ্য মেঘালয়, ত্রিপুরা, আসাম রাজ্যে কিন্তু এখন এস আই আর হচ্ছে না। পরিষ্কার ষড়যন্ত্র সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছে যে আসামেও অতিসত্ত্বর ভোট সত্বেও সেই আসাম রাজ্যে এসআইআর লাগু হল না। আসাম, ত্রিপুরা মেঘালয় রাজ্যে বিজেপির সরকার আছে। তাই কি সেখানে এসআইআর নয়?

পশ্চিমবঙ্গের অনেক অশিক্ষিত শ্রমজীবী মানুষ পুরো পরিবারকে নিয়ে বছরের পর বছর অন্য রাজ্যে এমনকি নেপালেও বসবাস করছে। তাদের পরিবারের কেউ কেউ এখন পশ্চিমবঙ্গে ফিরে বসবাস শুরু করছে, তাদের তো কোন ভোটার তালিকায় নামই নাই, তারা কি ভোটার হতে পারবে না? নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি যে কোন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হোক।

Related Articles