ডার্বি জিততে গেলে পেনিট্রেটিভ জোনে সুযোগ তৈরি করে তা কাজে লাগাতে হবে
পাশাপাশি কোচের ট্যাকটিসের ওপরও অনেক কিছু নির্ভর করে।
 
						দেবাশিষ মুখোপাধ্যায়: আগামিকাল গোয়ার ফতোরদা স্টেডিয়ামে আরও একবার পরস্পরের মুখোমুখি হচ্ছে কলকাতার দুই প্রধান। আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি, ডার্বি ম্যাচে কখন কে হিরো, আর কখন কে জিরো হবে তা বলা সম্ভব নয়। তবে যে বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে সেটা হল দুই দলের কোন কোন পজিশনে কি কি খামতি চোখে পড়ছে, এব কে কোন বিভাগে এগিয়ে রয়েছে।

আমি এই কাগজেই বলেছিলাম, ডার্বি ম্যাচে দুই পক্ষকে নিজেদের সেরাটা দিতে হবে। তবেই ম্যাচ জেতা সম্ভব। পাশাপাশি কোচের ট্যাকটিসের ওপরও অনেক কিছু নির্ভর করে। প্রথমেই মোলিনার কথা বলি, ইস্টবেঙ্গল ম্যাচের আগে মোহনবাগান মুখোমুখি হয়েছিল ডেম্পোর বিরুদ্ধে। গোয়ার দলটির বিপক্ষে সেই ম্যাচ আমার মনে হয়, মোলিনা অত্যাধিক বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পথে হেঁটেছিলেন। দলের সাতজন ফুটবলারকে সাইডে লাইনে বসিয়ে রাখার ফল যে কি হতে পারে তা ভালই বুঝলেন বাগানের হ্যাডস্যার।ডার্বির আগে এইরকম সিদ্ধান্ত উনি কেন নিলেন আমার বোধগম্য হল না। আমরা যাঁরা ফুটবল খেলেছি, তাঁরা জানি ডার্বির আগের ম্যাচটিতে জয় পাওয়া মানেই বাড়তি মনোবল তৈরি হয় ফুটবলারদের মধ্যে। কিন্তু বাগানের ক্ষেত্রে সেটা সম্ভব হয়নি।
আমি আগেই বর্তমানে দুই দলের মধ্যে ইস্টবেঙ্গলের মাঝমাঠ অনেকটা বেশি শক্তিশালী মনে হয়েছে মোহনবাগানের থেকে। কেননা মোলিনার দলের মাঝমাঠে একমাত্র আপুইয়া ছাড়া আর কাউকেউ সেভাবে নজরে পড়ছে না। অপর দিকে অস্কারের দলে রশিদ ও মিগুয়েল খেলতে পারলে চাপ বাড়বে মোহনবাগানের কাছে। আর একটা কথা বলতেই হবে পেনিট্রেটিভে জোনে সুযোগ তৈরি করেন ক্রিয়েটিভ মিডফিল্ডাররা। যেমন গত বছর যেটা করেছেন গ্রেগ স্ট্রুয়ার্ট। এবার তিনি চলে যাওযায় ওই পজিশনটা একবারেই দুর্বল হয়ে পড়েছে মোলিনার দল। ফলে বিপক্ষের বক্সে সুযোগ তৈরি হচ্ছে না ঠিকমত। এই বিষয়টা মোলিনাকে অবশ্যই ভাবতে হবে।
অপর দিকে অস্কারের দলে এখনও পর্যন্ত যে দুর্বল জায়গাটা চোখে পড়েছে সেটা হল বক্স টু বক্স স্ট্রাইকার কোথায়? হামিদ অনেকদিন হল দলে যোগ দিয়েছেন, কিন্তু তাঁর পারফরম্যান্স নজর কাড়েনি। একই অবস্থা হিরোশীর ক্ষেত্রেও। মাঠে তো চোখেই পড়ছে না সেইভাবে। উইঙ্গাররা গোল করছেন ঠিক কথাই, কিন্তু স্ট্রাইকারদের গোল কোথায়? আশাকরি ডার্বির আগে এই বিষয়গুলি অবশ্যই মাথায় রাখবেন দুই দলের কোচ।
জীবনে যে কটা ডার্বি খেলার সুযোগ হয়েছে, তার অভিজ্ঞতার নিরিখে সব শেষে একটাই কথা বলা যেতে পারে, সেটা হল ডার্বি জিততে গেলে দুই দলের স্ট্রাইকারদের যেমন পেনিট্রেটিভ জোনে সুযোগ তৈরি হলে, তা থেকে গোল করতে হবে, ঠিক তেমনই মিডফিল্ডারদেরও গোলের জন্য সুযোগ তৈরি করতে হবে। এটা যে ভাল করতে পারবে, সেই বাজিমাত করবে ডার্বিতে।
 
				



