রাজ্যের খবর

ট্রেকারের হেল্পার থেকে হাতে সন্দেশখালির ‘স্টিয়ারিং’, শেষ শাহজাহান-অধ্যায়

This time, Sikh Shahjahan chapter ended in Sandeshkhali

The Truth of Bengal: শেখ শাহজাহান। এই নামটি ঘিরে প্রায় ২ মাস রাজ্য রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিল সন্দেশখালি। সরবেড়িয়া গ্রাম থেকে যে অধ্যায়ের সূচনা হয়, তা ছড়িয়ে পড়ে জাতীয় রাজনীতিতেও। সেই সন্দেশখালিতে অবশেষে ‘বাঘ-বন্দি’ করল পুলিশ। গ্রেফতার শাহজাহান সেখ। ঘটনার ৫৬ দিন পর পুলিশ গ্রেফতার করে তাঁকে। কে এই শাহাজাহান? বেশ চমকপ্রদ এই নেতার জার্নি। ট্রেকারের হেল্পার থেকে হয়ে ওঠেন প্রভাবশালী। শোনা যায়, তার নামে সন্দেশখালিতে বাঘে-গরুতে এক ঘাটে জল খেত।

ট্রেকারের হেল্পার হিসেবে কর্মজীবন শুরু। সিপিএম নেতা মামার হাত ধরে বাম রাজনীতিতে প্রবেশ। দাপট বাড়তে বেশিদিন সময় লাগেনি। হয়ে ওঠেন প্রভাবশালী। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সন্দেশখালি এলাকার রাজনীতি ও ক্ষমতার স্টিয়ারিং চলে আসে এই ট্রেকার হেল্পারের হাতে। সিপিএম দিয়ে রাজনীতি শুরু করে পরে তৃণমূলে আসেন। খুন, জমি দখল, ধর্ষণ সহ অজস্র অভিযোগে অভিযুক্ত শেখ শাহজাহান। অনুগামীরা ধরা পড়লেও অধরা ছিলেন শাহজাহান। অবশেষে ৫৬ দিন পর সন্দেশখালির ‘বাঘ’-কে ‘খাঁচাবন্দি’ করল পুলিশ।

রেশন দুর্নীতি মামলায় গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালির শেখ শাহজাহানের বাড়িতে হানা দিয়েছিল ইডি। সেখানে শাহজাহান বাহিনীর হাতে আক্রান্ত হতে হয় ইডি কর্তাদের। সেই থেকে বাংলার রাজনীতিতে অন্যতম আলোচ্য নাম হয়ে ওঠেন শাহজাহান। তবে তার আগে গত প্রায় ২ দশক এলাকায় তিনি ছিলেন শেষকথা। রাজনীতি করার সঙ্গে সঙ্গে শুরু করেন মাছের ভেড়ির ব্যবসা। বলা হয় সন্দেশখালিতে নাকি জলে ভাসে টাকা। সেই টাকা কুড়িয়ে অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়ে ওঠেন। বাড়তে থাকে প্রভাব-প্রতিপত্তি।

সন্দেশখালির মাছের ভেড়ি নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি প্রথমদিকে নিজের খাসতালুক আকুঞ্জিপাড়ায় গরিবদেরও সাহায্য করতেন শাহজাহান। তাই অনেকের কাছে তিনি ‘রবিনহুড’ ইমেজ তৈরি করে ফেলেন। বাম জমানার শেষের দিকে স্থানীয় বিধায়ক অনন্ত রায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন। সেই সময় থেকেই নাকি তার যাবতীয় অপকর্মের শুরু। জমি দখলের অভিযগ উঠতে থাকে তার বিরুদ্ধে। রাজ্যে রাজনীতির পালাবদলের সঙ্গে জামা পাল্টাতে সময় নেননি শাহজাহান। আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন ২০১৬ সালে। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হাত ধরে ভিড়ে যান রাজ্যের শাসক দলে। পরে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ কর্মাধ্যক্ষ হন। এছাড়াও সন্দেশখালি ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি ছিলেন সেখ শাহজাহান। সেই শাহজাহানের বাড়িতে তদন্তে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিল ইডি। তারপর থেকে পলাতক ছিলেন। অবশেষে সন্দেশখালির ‘বাঘ’ সেখ শাহজাহানকে ‘খাঁচাবন্দি’ করল পুলিশ। এবার সন্দেশখালিতে সমাপ্ত সেখ শাহজাহান অধ্যায়।

Related Articles