
The Truth of Bengal: বিভিন্ন জায়গায় কালীপুজো নিয়ে নানা জনশ্রুতি আছে। আছে অনেক লৌকিক-অলৌকিক কাহিনি। তেমনই একটি পুজো হল মালদার হবিবপুরের মানিকোড়া ডাকাত কালী পুজো। ভক্তদের কাছে জাগ্রত বলে পরিচিত এই পুজো। নিয়ম নিষ্ঠার সঙ্গে পুজোর পাশাপাশি পুজোকে ঘিরে সাতদিন ব্যাপী চলে মেলা। বসে গানের আসর। মালদা থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মানিকোড়া কালী মন্দির। আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম। তার পাশাপাশি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা। প্রাচীন রীতি মেনে এখনও মশাল জ্বালিয়ে পুজো হয় মানিকোড়া ডাকাত কালীর। আগে পাঁঠা বলির সময় শেকল দিয়ে বাঁধা থাকত দেবীমূর্তি। তবে এখন আর শেকলে বাঁধা হয় না। তবে দেবীর চক্ষুদানের সময় কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয় মন্দিরের সদর দরজা।
এই পুজো সম্পর্কে কথিত আছে, একবার মায়ের মন্দিরের পাশ দিয়ে এক শাঁখারি শাঁখা বিক্রি করতে যাচ্ছিলেন। সেই সময় এক অল্পবয়সী যুবতী তার কাছ থেকে শাঁখা নিয়ে হাতে পরে। শাঁখারি দান চাইলে উত্তরে যুবতী জানায় বাবা দাম মিটিয়ে দেবে। কিন্তু কোথায় তার বাবা? এদিক-ওদিক মুখ ঘোরাতেই শাঁখারি দেখতে পান সেই যুবতী নেই। ঠিক সেই সময় উল্টো দিক থেকে মন্দিরের সেবায়েত আসছিলেন। তখন শাঁখারি তাকে বলেন তার মেয়ে যে শাঁখা পরেছে তার দাম দিতে। শুনে সেবায়েত অবাক হয়ে জানান তাঁর কোনও মেয়ে নেই। তাই শাঁখা পরার প্রশ্নই উঠে না। তখন সেবায়েতের দৃষ্টি যায় মন্দিরের পাশে পুকুরের দিকে। দেখতে পান জল থেকে দুটি হাত উঠে আছে।
সেই দুই হাতে শাঁখারির পরানো শাঁখা দেখা যাচ্ছে। সেবায়েতের বুঝতে দেরি হয়নি যে স্বয়ং মা কালীই সেই শাঁখা পরেছে। এই মন্দিরটি অত্যন্ত জাগ্রত বলে বিশ্বাস ভক্তদের।ডাকাতদের হাত ধরে পুজোর সূচনা। তবে ঠিক কত প্রাচীন এই কালীপুজো তা জানা নেই স্থানীয়দের। শুধুমাত্র লোকমুখেই প্রচলিত রয়েছে ডাকাতদের হাত ধরেই শুরু পুজো। সেই পুজো জমিদার বাড়ির হাত ঘুরে বর্তমানে সার্বজনীন। শুধুমাত্র জেলা নয় রাজ্য ও রাজ্যের বাইরে থেকে বহু ভক্তের সমাগম ঘটে এই কালীপুজোয়। জাগ্রত এই মন্দিরে সারা বছর মঙ্গল ও শনিবার পুজো হয়ে থাকে। ভক্তদেরও ভিড় থাকে চোখে পড়ার মতো।
Free Access