মাটি দিয়ে নয়, কাগজ দিয়ে মূর্তি গড়েন চুঁচুড়ার সৌমজিৎ
নবমী, দশমী দিন নিজেই মায়ের পুজো করেন
হুগলি, রাকেশ চক্রবর্তী: চন্দননগরের মন্ডপে মন্ডপে যখন মৃন্ময়ী মূর্তির আরাধনা চলছে, তখন পাশের শহর চুঁচুড়ার কাগজের জগদ্ধাত্রী তৈরি করে চমক দিলেন স্কুল ছাত্র সৌমজিৎ মন্ডল। চুঁচুড়া পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের ভাগীরথী লেন এলাকায় তার বাড়ি।
আরও পড়ুনঃ কানপুরে মৃত বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবারের পাশে তৃণমূল
ছোট থেকেই আঁকা শেখার পাশাপাশি পুজো করতে ভালোবাসে সৌমজিৎ। বড় হয়ে বিভিন্ন নকশার কাগজের জিনিস তৈরি করত। গত তিন বছর ধরে নিজের বাড়িতেই কাগজের জগদ্ধাত্রী তৈরি করছে সৌমজিৎ। নবমী, দশমী দিন নিজেই মায়ের পুজো করেন। থারমোকল, কার্ডবোর্ড ,গামছা, আর্ট পেপার দিয়ে ১০ ফুট উচ্চতার মূর্তি তৈরি করেছে। তার প্রতিমার থিম ‘বাংলার শিল্পকলা মা জগদ্ধাত্রী’।
লিঙ্কঃ https://www.facebook.com/truthofbengal
মায়ের মূর্তি নির্মাণ করতে পাঁচ থেকে ছয়টা গামছা লেগেছ । একটা গোটা শাড়ি তার সঙ্গে বেনারসি দোপাট্টা ব্যবহার করে মাকে সাজানো হয়েছে। দেবীর চালচিত্র তৈরি হয়েছে পটচিত্র ও যামিনী রায়ের কিছু চিত্র দিয়ে। পড়াশোনার পাশাপাশি চালিয়ে গিয়েছে মূর্তির গড়ার কাজ। সন্ধ্যায় পড়াশোনা করার পর রাত জেগে চলত কাজ করা। তবে তার পরিবার তাকে কোনও বাধা দেয়নি বরং উৎসাহ দিয়েছে। এর আগেও দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতীর মূর্তি কাগজ দিয়ে তৈরি করেছে।
সৌমজিৎ জানায় , “আমিই পুজো করবো, আমার নিজের মতন করে। সেখানে নিষ্ঠা ভরে মায়ের আরাধনা করব। বাড়িতে মাটির মূর্তি করার সেভাবে হতো না, তাই কাগজের মূর্তি দিয়েই দেবীর পুজো করি। মাটির মূর্তি তৈরি করা আমার কাছে কঠিন। কাগজের মূর্তি তৈরি করা আমার কাছে সহজ। দু সপ্তাহের মধ্যে আমি এই মূর্তি তৈরি করেছি। যেটা মাটির মূর্তি হলে অনেক সময় লেগে যেত। ঈশ্বরের পুজো করতে গেলে কোনও মন্ত্র দরকার হয় না, তাকে ভালোবেসে নিষ্ঠাভরে পুজো করলেই হবে।”
সৌমজিৎ এর বাবা সুভাষচন্দ্র মন্ডল একটি বিমা সংস্থায় কর্মরত। তিনি বলেন, “এই পুজো শুরু হয়েছে ছেলের হাত ধরে। ছেলে এটা তৈরি করেই বলেছিল পুজো করবো, তখন আমরা তাকে কোন বাধা দিইনি। তখন থেকেই বাড়িতেই হচ্ছে পুজো। ছেলেকে কোনও সময় বাধা দিইনি। ছোট থেকেই তার ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি।”


