
The Truth of Bengal: মুমূর্ষু রোগীকে খাটিয়ায় তুলে হাসপাতালে দৌড়। চূড়ান্ত অমানবিক ছবি সামনে এল মালদায়। হাসপাতালে পৌঁছেও হল না শেষরক্ষা। মৃত্যু হল ১৯ বছরের তরুণী মামনি রায়ের। দিনভর চ্যানেলে চ্যানেলে চ্যানেলে ব্রেকিং নিউজ। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল। গ্রামের বেহাল রাস্তায় ঢোকে না অ্যাম্বুলেন্স বা অন্য কোনও যানবাহন। অগত্যা খাটিয়ায় তুলে মুমূর্ষু রোগীকে নিয়ে হাসপাতালে ছোটে পরিবার। প্রশাসনকে কাঠগড়ায় তুলে আক্রমণ করা হচ্ছে। প্রশাসনের দায় নিশ্চই আছে, তবে আমাদের কি দায় নেই? কী দায়িত্ব পালন করলাম আমরা?গ্রামের রাস্তা খারাপ। মুমূর্ষু রোগীকে খাটিয়ায় তুলে হাসপাতালে দৌড় বাড়ির লোকের। চূড়ান্ত অমানবিক ছবি সামনে এল মালদায়। হাসপাতালে পৌঁছেও বাঁচানো গেল গেল না। মৃত্যু হল ১৯ বছরের তরুণী মামনি রায়ের। মালদার বামনগোলার এই ঘটনা দিনভর চ্যানেলে চ্যানেলে ব্রেকিং নিউজ হল। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হল। গ্রামের রাস্তা বেহাল বলে ঢোকে না অ্যাম্বুল্যান্স বা অন্য কোনও গাড়ি। অগত্যা খাটিয়ায় তুলে মুমূর্ষু রোগীকে নিয়ে হাসপাতালে ছোটে পরিবার।
এটা নিঃসন্দেহে অমানবিক ঘটনা। এই ছবি দেখতে মোটেও ভাল লাগার কথা নয় সভ্য সমাজের। কিন্তু, সভ্য সমাজের মানুষ হিসেবে আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করেছি কি? মুমূর্ষু রোগীকে খাটিয়ায় তুলে হাসপাতালে দৌড়ের সেই ছবি ক্যামেরাবন্দি করছি আমরা। ক্যামেরায় উঠে আসা সেই ছবি আবার কিছু সংবাদ মাধ্যমে সকাল থেকেই ব্রেকিং নিউজ হিসাবে সম্প্রচারিত হয়েছে। অমানবিক ছবির আড়ালে তুলে ধরা হচ্ছে রাজ্যের হতাশাজনক চিত্র। পিছু পিছু যারা এগিয়ে চলেছেন, তাদের সবার হাতে মোবাইল ফোন। হতে পারে তারা সাধারণ মানুষ। আবার হতে পারেন তারা সংবাদ মাধ্যমের কর্মী। যারা এই ছবি তুলেছেন, তাদের কি কোনও দায়িত্ব ছিল না? তারা কি পারতেন না একটু সহযোগিতা করতে? ওই রাস্তা দিয়ে সহজেই টোটো চলতে পারে। একটা টোটো কি ব্যবস্থা করে দেওয়া যেত না? কিন্তু কেউ তা করেননি। উল্টে সবাই ছবি তুলতে ব্যস্ত। কিন্তু, এটা এই বাংলার পরম্পরা নয়। এই বাংলায় আজও কেউ অসুস্থ হলে পাশে দাঁড়ায় প্রতিবেশীরা। গ্রামগঞ্জে কেউ মারা গেলে তার অন্ত্যেষ্টির সমস্ত দায়-দায়িত্ব পালন করে পড়শিরা। কোনও কিছুর আঁচ পোহাতে হয় না নিকটাত্মীয়কে হারানো পরিবার-পরিজনদের। এটাই বাংলার রীতি। এটাই বাংলার পরম্পরা। কিন্তু সেই বাংলায় এই ছবি তুলে ধরে কী বার্তা দেওয়া হচ্ছে? এই ছবি তুলে ধরে সরব বিজেপি। বেহাল রাস্তা নিয়ে রাজ্য ও স্থানীয় প্রশাসনকে তুলোধনা করেছেন বিজেপি নেত্রী বীণা সরকার কীর্তনিয়া।
তাঁর প্রশ্ন, রাজ্য সরকার ‘পথশ্রী’ প্রকল্প হাতে নেওয়ার পরেও কেন গ্রামীণ রাস্তার হাল ফিরল না? কিন্তু, তিনি এটা বলছেন না, কেন সড়ক যোজনার বকেয়া টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র?সত্যিই গ্রামের রাস্তার হাল খারাপ। কিন্তু, এই এলাকার সাংসদ বিজেপির। এই এলাকার বিধায়ক বিজেপির। সড়ক যোজনার বকেয়া টাকা কেন রাজ্য পাচ্ছে না? কেন কেন্দ্রের কাছে এই প্রশ্ন তুলছে না বিজেপি? উল্টে এমন ঘটনা নিয়ে বিজেপি রাজনীতি করতে ব্যস্ত বলে কটাক্ষ তৃণমূলের। সংবাদ মাধ্যমের অনেক দায়িত্ব আছে সমাজের প্রতি। শুধু খবর তুলে ধরে দায় সারলে হয় না।
পাশাপাশি বামনগোলার গোবিন্দপুর মহেশপুর পঞ্চায়েতে ৫কিমি রাস্তা সংস্কার হবে। মালডাঙ্গা গ্রাম থেকে ৫কিমি রাস্তাকে নতুন রূপ দেওয়া হবে। বরাদ্দ হয়েছে ২ কোটি টাকা। দ্রুত কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বিডিও রাজু কুণ্ডু।