নয়নতারা বালিকা বিদ্যালয়ে উপপ্রধাই এখন শিক্ষক
The vice principal is now a teacher at Nayantara Girls' School

Truth Of Bengal: সৌভিক গোস্বামী, আরামবাগ: হুগলি জেলার গোঘাট থানার কামারপুকুর নয়নতারা বালিকা বিদ্যালয়ে সম্প্রতি শিক্ষিকার অভাবে পড়াশোনায় বিপত্তি দেখা দেয়। তবে এই সংকটে বিদ্যালয়ের উপপ্রধান শুভ্রপ্রকাশ লাহা সহ পরিচালন কমিটির আরও দুজন সদস্য একযোগে দায়িত্ব গ্রহণ করে শিক্ষা চালু রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
কামারপুকুরের একমাত্র মেয়েদের বিদ্যালয়, নয়নতারা বালিকা বিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রায় ৮০০ ছাত্রীর পাঠদান চলছে। বিদ্যালয়ে শুরুর দিকে ১০ জন শিক্ষিকা থাকলেও সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২৬ হাজার চাকরি বাতিল হওয়ায়, এর আঁচ পড়েছে এই বিদ্যালয়েও। ৩ জন শিক্ষিকার চাকরি বাতিল হওয়ার পর তাদের স্কুলে না আসার কারণে শিক্ষার মানে ভাঁটা পড়ে যায়, বিশেষত যখন পরীক্ষা চলছিল। ৭ই এপ্রিল থেকে ওই শিক্ষিকারা আর বিদ্যালয়ে আসেননি, ফলে ছাত্রীরা পড়াশোনায় সমস্যায় পড়তে থাকে।
এই অবস্থায়, কামারপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শুভ্রপ্রকাশ লাহা, যিনি ইংরেজিতে মাস্টার ডিগ্রি ও ডিএলএড করেছেন, নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং দায়িত্ববোধের মাধ্যমে এগিয়ে আসেন। শুভ্রপ্রকাশ লাহা শুধুমাত্র উপপ্রধান নন, তিনি নয়নতারা বালিকা বিদ্যালয়ের পরিচালন কমিটির সভাপতি। তিনি দ্রুত সিদ্ধান্ত নেন এবং স্কুলে ছাত্রীদের শিক্ষা চালু রাখতে চক ডাস্টার তুলে নেন এবং ক্লাস নেওয়া শুরু করেন। তাঁর সঙ্গে সহায়তা করতে এগিয়ে আসেন আরো দুজন সদস্য।
এই উদ্যোগের ফলে ছাত্রীরা পুনরায় পড়াশোনা করতে শুরু করে এবং তাদের পড়াশোনায় আগের মতো আগ্রহ দেখা যায়। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ভাস্বতী বন্দোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ৩ জন শিক্ষিকার অনুপস্থিতির ফলে যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল, তা শুভ্রপ্রকাশ লাহা এবং তাঁর সহযোগীদের কারণে কিছুটা হলেও সমাধান হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে, শিক্ষিকার অভাব মেটাতে শুভ্রপ্রকাশ লাহা ও তাঁর সহকর্মীরা ভালোভাবে ছাত্রীদের পড়াশোনা পরিচালনা করেছেন এবং শিক্ষার মান অব্যাহত রেখেছেন।
বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা জানিয়েছেন, এই তিনজন শিক্ষকের ক্লাসে তাদের ভিত্তি আরও দৃঢ় হয়েছে। তারা আনন্দিত যে, এই সময়েও তাদের শিক্ষার প্রতি মনোযোগ বাড়ছে। শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, তাঁদের শিক্ষা যেন কখনো ব্যাহত না হয়, তাই এই উদ্যোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
এই ঘটনা আরও একবার প্রমাণিত করল যে, শিক্ষা শুধু একটি পাঠ্যবইয়ের বিষয় নয়, বরং এটি সামাজিক দায়িত্বও বটে, যা সংকটের সময় সবার সহযোগিতায় মীমাংসা করা সম্ভব।