অফবিটরাজ্যের খবর

আমেরিকার বিলাসী জীবন ছেড়ে চাষবাস! দম্পতির অন্য জগৎ শান্তিনিকেতনে

A couple leaves the luxurious life of America and lives in the village of Bengal

The Truth of Bengal: আমেরিকায় বহুজাতিক সংস্থার চাকরি করতেন। প্রচুর টাকার বেতন। কোনও কিছু অভাব ছিল না। তবে সেই জীবন হেলার ছেড়ে ফিরে এসেছেন মাটির টানে। চাকরি ছেড়ে বেছে নিয়েছেন চাষবাস। বিলাসবহুল জীবন-যাপন ছেড়ে মাটির টানে প্রাকৃতিক চাষে নিজেদের নিয়োজিত করেছেন এক দম্পতি। এমন অন্য ধারার জীবন বেছে নিয়েছেন শান্তিনিকেতনের দেবল মজুমদার ও অপরাজিতা সেনগুপ্ত। বর্ধমান জেলার বাসিন্দা দেবলবাবু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে চাকরি পান আমেরিকার কেন্টাকি শহরে একটি বহুজাতিক সংস্থায়। অন্যদিকে, কলকাতার বাসিন্দা অপরাজিতা দেবী প্রেসিডেন্সি ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হয়ে ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে আমেরিকার কেন্টাকি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। পরে সেখানেই পড়ানো শুরু করেন। আমেরিকা থেকে ফিরে শান্তিনিকেতনের অদূরে রূপপুর গ্রামে গড়ে তুলেছেন এক অন্য জগৎ।

মাটির বাড়ি, চাষের জমি, পুকুর নিয়ে তাদের সংসার। রাসায়নিক সার বর্জিত জীবন কাটাচ্ছেন এই দম্পতি। তাদের কাছে হাতেকলমে প্রশিক্ষণ নিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত তো বটেই, বিদেশ থেকেও আগ্রহী পড়ুয়া আসেন৷ চাষে উৎপাদিত ফসল বিক্রি ও পাঠদান থেকে যা উপার্জন হয়, তা দিয়েই সাবলীল জীবন কাটান একদা প্রবাসী এই দম্পতি। কেন এমন জীবন বেছে নিলেন তারা? মূলত ফার্মাকালচার নিয়ে গবেষণা এই দম্পতির। ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত সহ বাংলাদেশ, আমেরিকা, ফ্রান্স, সুইডেন প্রভৃতি দেশ থেকে আগ্রহী পড়ুয়ারা তাদের শান্তিনিকেতনের বাড়িতে থেকে প্রাকৃতিক চাষ সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের পাশাপাশি হাতে-কলমে গবেষণায় অংশ নেন। ফার্মা কালচার নিয়ে পড়ানোর জন্য সাম্মানিক অধ্যাপক হিসাবে ভারতের বিভিন্ন কৃষি প্রতিষ্ঠান সহ নেপাল, বাংলাদেশ, আমেরিকা থেকে ডাক পেয়েছেন এই দম্পতি।

খাদ্যদ্রব্যে কেন স্বাদ কম, খাদ্যে ভেজালে পরিমাণ কেন বাড়ছে–  প্রভৃতি ভাবিয়ে তোলে এই দম্পতিকে। আমেরিকার একাধিক গ্রাম ঘুরে তা উপলব্ধি করতে থাকেন৷ এরপরেই হঠাৎ সিদ্ধান্ত। আমেরিকার বিলাসবহুল জীবন ছেড়ে মাটির টানে, দেশের টানে ফিরে আসেন। চাকরি জীবনের জমানো টাকা থেকে শান্তিনিকেতনের অদূরে রূপপুর গ্রামে পুকুর সহ সাড়ে ৫ বিঘা জমি কিনে শুরু করেন চাষ নিয়ে গবেষণা। এখন তাঁদের অন্য জগৎ। মাটি ও কাঠ দিয়ে তৈরি একটি বাড়িতে বসবাস এই দম্পতির। বর্তমানে তাদের খামারে ৭ রকমের দেশি ধান, ডাল, গম, বিভিন্ন রকমের লেবু, আম, আতা, পেয়ারা, করমচা, সবেদা, কামরাঙা প্রভৃতি চাষ হয়। পাশাপাশি, মাছ, হাঁসের ডিম উৎপাদিত হয়। উৎপাদিত ফসল নিজেরা খান। এছাড়া জ্যাম-জেলি প্রভৃতি তৈরি করে বিক্রি করেন। উদ্বৃত্ত ফসল বিক্রি করে এক কন্যাসন্তান দিনযাপন চলছে এই দম্পতির।

Related Articles