রান্নাঘর

রবিবার, গিটার আর পার্ক স্ট্রিটে ব্রেকফাস্ট

Flurys

The Truth of Bengal: ফ্লুরিজ। রবিবার। ব্রেকফাস্ট। আসলে এই তিনটে শব্দ একে অপরের পরিপূরক। রবিবারের ব্রেকফাস্ট মানেই ফ্লু ফুরিজ। দার্জিলিং চা অথবা ফার্স্ট ফ্লাশ-এর অর্ডার দিয়ে বাইরের পার্ক স্ট্রিটকে দেখা। এটাকে কলোনিয়াল হ্যাঙওভার বলতে পারেন কিংবা কলকাতার মৃদুমেদুর রোমান্টিক নস্টালজিয়া, যে ব্যাখ্যাই দেওয়া হোক না কেন, রবিবারের ফ্লুরিজ-এর কোনও বিকল্প নেই। ফ্লুরিজের এই অমোঘ আকর্ষণ আছে বলেই না গসিপ এবং আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা সন্তানসম্ভবা নুসরত জাহান যশ দাসগুপ্তকে নিয়ে এক বৃষ্টিভেজা রবিবারে পার্ক স্ট্রিটের এই রেস্তোরাঁয় চলে এসেছিলেন। কিংবা এই শহরের সাহেব পাড়া আর অ্যাংলো ইন্ডিয়ানরা যাঁর সৃজনশীলতার অভিমুখ, সেই অঞ্জন দত্তেরও আড্ডাস্থল ফ্লুরিজ। ফ্লুরিজ-এ গেলে কী পছন্দ? আমার কন্যা যেমন কন্টিনেন্টাল ব্রেকফাস্ট আর রামবল অর্ডার করবেই, আমার তেমনই পছন্দ ক্লাব স্যান্ডউইচ।

তিন লেয়ারের সবকিছু দিয়ে ননভেজ ক্লাব স্যান্ডউইচ আর ফ্রেঞ্চ ফ্রাই চাই-ই-চাই। তবে সেদিন এক অনুজ সাংবাদিক বন্ধুর সঙ্গে খেতে গিয়ে আমি ফ্লুরিজ-এর ফিশ ফ্রাইয়েরও মুগ্ধ অনুরাগী হয়ে গেলাম। জোড়া ফিশ ফ্রাইয়ের যেমন সাইজ, তেমনই মাছের স্বাদ! রবিবারের সকালের জন্য যদি ক্লাব স্যান্ডউইচ আইডিয়াল হয়, তাহলে সন্ধ্যার আড্ডার জন্য ফিশ ফ্রাই। ছোটবেলায়, খুব ছোটবেলায় যখন দাদুর সঙ্গে, কিংবা আর একটু বড় হয়ে বাবার সঙ্গে ফ্লুরিজ- [-এর মালিকদের অতিথি হিসেবে যেতাম, তখন দার্জিলিং চাষের মাহাত্ম্য তেমন বুঝতাম না। কফি-কফি করে লাফঝাঁপ করতাম। এখন বয়স বেড়েছে।

বদলে যাওয়া পার্ক স্ট্রিটের বদলে যাওয়া ফ্লুরিজ। প্রেমের চাইতে দার্জিলিং টিতে চুমুক দেওয়াটাই বেশি কাঙ্ক্ষিত। হাফ সেঞ্চুরির দোড়গোড়ায় দাঁড়িয়ে তাই আমি আর ফার্স্ট ফ্লাশ ছাড়া কিছু খাই না। সাদা পাত্রে মানে চায়ের কাপে সোনালি পানীয় যে কুহুকী মায়াবিয়ানা এনে দেয়, তার বিকল্প কোথায়! আসলে পার্ক স্ট্রিটের ফ্লুরিজ কলকাতার একটা মাইলফলক, যে রেস্তোরাঁয় রবিবারের সকাল অথবা অলস সন্ধ্যা না কাটিয়ে থাকলে এই শহরের সঙ্গে সহবাস সম্পূর্ণ হয় না। শহর বদলে যায়, টেবিলের মুখগুলো আরও দ্রুত বদলায়, কিন্তু ফ্লুরিজের রোমান্টিক আবেদন এরকমই থাকে।

Related Articles