ব্যবসা

কৃষিপণ্য ব্যবসায় বিপুল আয়ের সুযোগ, সাপ্লাই চেন বুঝে শুরু করতে পারেন নতুন উদ্যোগ

Agro Product Business

The Truth of Bengal: গত কয়েক বছরে, ভারতে কৃষিপণ্যের নতুন বাজার তৈরি হয়েছে। দেশের পাশাপাশি বিদেশেও বড় বাজার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে, দেশের কৃষিক্ষেত্রে বহু কোম্পানি বিনিয়োগ করছে। এমনকি, কৃষি নির্ভর পণ্যের জন্য বেশ কিছু স্টার্ট আপও ভালো কাজ করছে। এই ব্যবসায় এখন বড় সুবিধা হল, ভারত সরকারও এই কৃষিক্ষেত্র শিল্প প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ও সহায়তা করছে। তবে এই ব্যবসায় আসতে গেলে, প্রাথমিক ভাবে কয়েকটি বিষয় প্রথম থেকেই মাথায় রাখা প্রয়োজন। বিষয়টি যতটা সহজ, ঠিক ততটাই জটিল।

কৃষিপণ্য সংক্রান্ত ব্যবসা করতে গেলে সর্বপ্রথম প্রয়োজন কৃষকদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা। কৃষিপণ্য সম্পর্কিত একটু অভিজ্ঞতা অর্জন না করলে, এই ব্যবসায় সফলতা পাবেন না। শুধু কৃষিপণ্য নয়, ব্যবসার ক্ষেত্রে যে কোনও ফিল্ডই বাছুন না কেন, সেই বিষয় সম্পর্কে সম্যাক ধারণা না থাকলে বাণিজ্যে গতি আনতে সমস্যা হবে। মনে রাখতে হবে, অভিজ্ঞতা ও থিওরি জ্ঞানের মধ্যে বিশাল ফারাক রয়েছে, ফলে, প্রত্যেকটি ধাপ হাতে কলমে কিছুটা অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেই এগনো ভালো। অর্থাৎ, কৃষকদের কাছে ভালো করে বুঝে নিতে, কোন ধরণের পণ্য কোন সময় চাহিদা কেমন থাকে। এবং সেই পণ্যের প্যাকেজিং, মার্কেটিং কৌশল কেমন হবে।

ব্যবসার শুরু দিকে আপনার জ্ঞানের প্রয়োজন হবে কিন্তু প্রথম দিকে তেমন অভিজ্ঞতার প্রয়োজন নেই। পণ্য পরিষেবা কাজ করতে গিয়ে, কী কী ধরণের সমস্যা সম্মুখীন হচ্ছেন এবং প্রতিবন্ধকতা আসছে, সেটিকে বুঝে ধীর গতিতে পা ফেললেই হবে। ফলে, ঝুঁকির সম্ভবনা যেমন কম থাকবে, তেমন সাফল্য ও ব্যর্থতার কারণও স্পষ্ট হবে।

আপনার যদি কৃষি সম্পর্কে ধারনা থাকে, তাহলে আপনি নিশ্চিতভাবে জানেন যে, কৃষকরা বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল ও জৈব সার ব্যবহার করে থাকে। কৃষকদের ব্যবহৃত এই জৈবসার ও কেমিকাল গুলো কম টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে উৎপাদন করা যায়। বেশ কিছু সার রয়েছে, যেগুলি আপনার আশেপাশের পরিত্যক্ত আবর্জনা থেকেই তৈরি করতে পারবেন।

আর জৈব সার তৈরি করার ক্ষেত্রে গরুর গোবর বিশেষ করে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাই আপনার এলাকায় যাঁরা গরু প্রতিপালন করে থাকে, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটা প্রাইমারি সাপ্লাই চেন তৈরি করতে পারেন।  তাদের কাছ থেকে গরুর গোবর সংগ্রহ করে জৈব সার তৈরি করে চাষিদের বিক্রি করতে পারেন। বহু বড় মাপের কৃষক রয়েছে, যাঁরা পাইকারি হারে জৈব সার সংগ্রহ করে থাকেন।

আপনি পাইকারি হারে এই ব্যবসা পরিচালনা করতে চাইলে, সরাসরি বিভিন্ন দোকান ও খুচরা বিক্রেতাদের কাছে পাইকারি রেটে বিক্রয় করতে পারেন। এই ব্যবসার সবচেয়ে ইন্টেরেস্টিং পয়েন্ট হল, এখানে বেশ কিছু প্রোডাক্টে বিপুল টাকা লগ্নি না করেই উৎপাদন করতে পারবেন। আপনি যদি আমাকে প্রশ্ন করেন। টাকা বিনিয়োগ না করে কিভাবে একটি পাইকারিতে ব্যবসা শুরু করা যায়? তাহলে আমি আপনাকে কৃষি ব্যবসার আইডিয়াটি দেব।

বিপুল লগ্নি ছাড়াই আয় কীভাবে?

আপনি যদি জৈবসার উৎপাদন করে থাকেন, তাহলে প্রতি কেজি সার বিক্রির জন্য ২৫ টাকা ২৬ টাকা উপার্জন করতে পারেন। আর যদি পাইকারিতে জৈব সার সরবরাহ করতে চান, তাহলে আপনাকে লগ্নি করে পণ্য সরবরাহ করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি খুচরা বিক্রেতাদের পাইকারিতে ১৮ থেকে ২০ টাকা দামে প্রতি কেজিতে জৈব সার বিক্রি করতে পারেন। নিজের লোকাল মার্কেট ছাড়াও, নিজের প্রোডাক্ট দেশের বিভিন্ন কোনায় কৃষকদের কাছে পৌঁছতে চাইলে, সেটিও কয়েকটি ধাপে করতে হবে। যেমন টোটাল সাপ্লাই চেনকে আগে চিনে নিতে হবে। রাজ্যের জেলাস্তরে ডিস্ট্রিবিউটার ও ট্রান্সপোর্ট লাইন ঠিক করে পণ্য পাঠাতে পারেন। তবে আপনি যদি চান যে আপনার প্রোডাক্ট অন্য আর পাঁচজন ব্যবসায়ীর থেকে আলাদা হোক, একদম নিজস্ব চাহিদা তৈরি করুক, তাহলে আপনাকে ব্র্যান্ড বিল্ডিং করতে হবে এবং এখন সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ, অতি কম খরচে সঠিক ক্রেতার কাছে পৌঁছতে এই প্লাটফর্মের জুড়ি মেলা ভার। তাই সঠিক মার্কেটিং কৌশল আপনাকে পৌঁছতে দিতে পারে।

 

Related Articles