অন্যের ঘরের ব্যবস্থা করতে গিয়ে ভাঙা ঘরেই বাস তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যার
Trinamool Panchayat member lives in a broken house while arranging someone else's house

Truth Of Bengal: নিজে না পেলেও গ্রামের অন্যান্য দুঃস্থ মানুষদের ঘর পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন একসময়। এখন সেই তৃণমূল দলের নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্যাই রয়েছেন ভাঙ্গাচোরা ঘরে। গত দুইবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর পাকা ঘর পাওয়ার আবেদন করেছিলেন তৃণমূল দলের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যা রেখা মহলদার।
কিন্তু তাঁর ভাগ্যে এখনও পাকা ঘর জোটে নি। পুরাতন মালদা ব্লকের মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতটি বিজেপি পরিচালিত। আর ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের গোলাপট্টি এলাকায় বাড়ি রয়েছে রেখা মহলদারের। টালি, টিন ও চাটাই দেওয়া ভাঙাচোরা বাড়িতেই কোনরকম দিন কাটছে রেখাদেবীর পরিবারের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রেখা মহলদারের পরিবারে রয়েছেন স্বামী সজল মহলদার। তিনি পেশায় কৃষক। তার একমাত্র ছেলে স্থানীয় একটি স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণীতে পাঠরত। রেখাদেবীর উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পরেই বিয়ে হয়ে যায়। তারপরেই মুখ্যমন্ত্রী আদর্শে রাজনীতিতে সামিল হন বর্তমান তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য রেখা মহলদার। যদিও তাঁর স্বামী সজল মহলদার তৃণমূলের জন্ম লগ্ন থেকেই রাজনীতি করছেন। সজলবাবুর সংশ্লিষ্ট এলাকায় দুই বিঘার একটি জমির রয়েছে।
যেখানে বিভিন্ন সময় ফুল চাষ করেই সংসারের চালানোর জন্য উপার্জন করেন । বিগত দিনে সজল মহলদারও তিনবারের তৃণমূল দলের মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য রয়েছেন। কিন্তু এলাকার জন প্রতিনিধি হয়েও ভাগ্যে জোটে নি একটা পাকা ঘর । অথচ রেখা মহলদারের সহযোগিতায় একের পর এক অনেকেই পাকা ঘরের সুবিধা পেয়েছেন। কিন্তু এখন মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের আইনি জটিলতার কারণেই পাকা ঘরের তালিকা প্রকাশিত কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল দলের সদস্য রেখা মহলদার বলেন, টালি, চাটায়ের ঝুপড়ি ঘরে বাস করি। ২০১৮ সাল থেকেই পরপর দুইবার তৃণমূল দলে নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য রয়েছি। যদি ওই গ্রাম পঞ্চায়েতটি বিজেপি পরিচালিত। জানি না আগামীতে ভাগ্যে পাকা ঘর জুটবে কিনা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে স্বামীর হাত ধরে রাজনীতি শুরু করেছি। যতদিন বাঁচবো তৃণমূল দল করবো। আমাদের পরিবারটি খুব কষ্টে আছে। শুধুমাত্র এখন ছেলের ভবিষ্যতের দিকেই তাকিয়ে রয়েছি।
রেখাদেবীর স্বামী সজল মহলদার বলেন, বছরের বিভিন্ন সময় নিজের জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফুল চাষ করে রোজগার করি। ছেলে দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ে। ওকে মানুষ করাই এখন লক্ষ্য। ভাঙাচোরা ঘরের অবস্থা আর দেখা যায় না। প্রথমে তো ভেবেছিলাম আগে এলাকার প্রকৃত উপভোক্তারা পাকা ঘর পাক। তারপরে আবেদন করবো। কিন্তু আমার স্ত্রী আবেদন করে পাকা ঘর পায় নি। রোজগার কম, পাকা বাড়ি করবো কি করে। স্ত্রী পাকা ঘর পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিল দীর্ঘদিন আগে। কিন্তু তালিকায় নাম আসে নি। জানি না আগামীতে পাকা ঘরের সুবিধা পাব কিনা। তবে তৃণমূল দল ছাড়বো না। যতদিন বাঁচবো তৃণমূল দলটা করে যাব।