লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের অর্থে সেবা গৃহলক্ষ্মীদের, বাংলার সমাজজীবনে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের নবধারা
Service to householders in the sense of Lakshmi Bhandar, a new trend of revolutionary change in the social life of Bengal

The Truth Of Bengal : একুশে বাংলায় নারী ক্ষমতায়নে বড় সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। চালু করা হয় লক্ষ্মীর ভাণ্ডার।মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন,জেনারেল কাস্টের মহিলারা এককালীন ৫০০টাকা আর তফসিলি মহিলারা ১হাজার টাকা নগদ অনুদান পাবেন। ঘোষণামতো রাজ্যের মহিলারা সেই অর্থ হাতে পান।এখন সেই নগদ অনুদানের পরিমাণ দ্বিগুণ হয়েছে।৫০০টাকার বদলে ১হাজার টাকা পাচ্ছেন বঙ্গ লক্ষ্মীরা।যারজন্য তাঁরা পরিবারের হাল ফেরানোর পাশাপাশি সমাজসেবার কাজেও লাগাচ্ছে।দেখা যায়, পূর্ব বর্ধমানের মহিলারা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের অর্থ দিয়ে লক্ষ্মীর আরাধনা করেন।নরনারায়ণ সেবাতেও অর্থ ব্যয় করছেন।এবার হাওড়ার জোমজুড়ে মানব সেবার নজির গড়লেন মহিলারা। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা দিয়ে পথচারীদের দেওয়া হচ্ছে ঠাণ্ডা জল ও বাতাসা।পথে নেমে মানুষের জলতৃষ্ণা মেটানোর এই অভিনব ভাবনা সমাজে আলো ছড়িয়েছে।বিরোধীরা এই লক্ষ্ণীর ভাণ্ডারকে খয়রাতির রাজনীতি বা ভিখারির দান বললেও এর প্রভাব অস্বীকার করতে পারবেন কী ? একবার ভেবে দেখুন দিলীপ ঘোষ,সুকান্ত মজুমদাররা।
ইতিমধ্যে কোচবিহারের বিজেপি নেত্রী হুমকি দিয়েছেন,বিজেপি ক্ষমতায় এলে ৩মাসের মধ্যে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প তুলে দেওয়া হবে।প্রকাশ্য মঞ্চে এই হুমকি দেন তিনি।তাতে বিতর্ক দানা বেঁধেছে।মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছেন,ক্ষমতার স্পর্ধা থাকলে মা-বোনেদের প্রকল্পে হাত দিয়ে দেখুক বিজেপি।বাংলার দেওয়া অর্থে চলা এই প্রকল্প বন্ধ করা যে এত সহজ হবে না তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। তবে ভোট বাজারে ভোট পেতে সুকান্ত মজুমদার সহ অন্য বিজেপি নেতারা লক্ষ্ণীর ভাণ্ডারের অনুদানের পরিমাণ ৩গুণ করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।সমালোচকরা বলছেন,আসলে ডবল ইঞ্জিনের তাত্ত্বিকরা ডবল চাল ছেড়ে দিয়ে বাংলার মহিলাদের মন জরিপ করছেন।রাজনীতির পাশা খেলায় যেনতেন প্রকারেণ জেতার মরিয়া ছক কষছেন।কিন্তু রাজনীতির জন্য বিরোধীরা যাই বলুক,বাংলার প্রকল্পকে নকল করে
মধ্যপ্রদেশের সরকার লাডলি বহেনা যোজনা চালু করেছে,ত্রিপুরাতেই একই পথে মহিলাদের কাছে টানার চেষ্টা চলছে।আসলে অর্থনীতিবিদ অর্মত্য সেন বা অভিজিত্ বিনায়ক সেন যে বিকেন্দ্রীকৃত উন্নয়নের মডেল তুলে ধরেন,সেই পথেই বাংলার সরকার যে হাঁটছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এই ধরণের প্রকল্পের মাধ্যমে দুটো কাজ একসঙ্গে সম্ভব হচ্ছে বলে সমাজকর্মীরা মনে করছেন ।প্রথমতঃ মহিলারা নগদ অর্থ পেয়ে সংসারে তা খরচ করতে পারেন,তাঁদের আর্থিক শক্তি বাড়ে।দ্বিতীয়তঃ বাজার অর্থনীতির যুগে নারীসমাজ যেখানে আর্লি অ্যাডপটর সেখানে তাঁরা নগদ অর্থ কাজে লাগিয়ে বাজারে ইচ্ছেমতো খরচ করতে পারে।যার সুফল হাতে হাতে মিলছে বলে প্রতীচী ট্রাস্টের সমীক্ষাতেও ধরা পড়ে।দেখা যায়, রাজ্যের মহিলারা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা দিয়ে কেউ ছেলে-মেয়ের পড়াশোনার উন্নতি করছেন,কেউ সঞ্চিত অর্থে বাড়ির সম্পদ তৈরি করছেন।তাই লক্ষীর ভাণ্ডার নিয়ে বিরোধীরা যে কটাক্ষ বা বিদ্রূপ করেছিল তাঁরা রাজনীতির পাশা খেলায় যেমন হেরে যেতে বসেছেন তেমনই আবার অর্থনীতির দাঁড়িপাল্লায় ব্যাকফুটে চলে যাচ্ছেন।