অফবিট

হারিয়ে যাচ্ছে বিখ্যাত বাঙালি চিত্রশিল্পী যামিনী রায়ের জন্মভিটে, সঠিক পৃষ্ঠপোষকতার অপেক্ষায় গ্রামবাসীরা

Ruind Jamini Ray’s birthplace at Bankura beliatore

The Truth of Bengal: দাদা, যামিনী রায়ের বাড়িটা কোথায় বলতে পারবেন?

-কে বলুনতো? ঠিকানা কী আছে?

-বিখ্যাত চিত্র শিল্পী যামিনী রায়ের কথা বলছি।

-ও আচ্ছা, ওই যে ওই রাস্তা, স্কুলের পাঁচিলের পাশে, একফালি রাস্তা, ওই যে দেখছেন আগাছা হয়ে রয়েছে, ওটা দিয়ে ভিতরে। কিন্তু ওখানে কী করে ঢুকবেন? সাপ খোপে ভর্তি। বাড়ির দরজা বন্ধ। ওদের লোকেরাতো কলকাতায় থাকে!

সকাল আটটা, বেলিয়াতোড় মোড় থেকে ডান দিকে গাড়ি ঘুরিয়ে বেশ কিছুটা যাওয়ার পর চৌরাস্তায় গিয়ে জিজ্ঞেস করে ফের একটা মোড়ে এসে দাঁড়ালাম। সেই মোড় থেকে সোজা রাস্তা ধরে চলে যাওয়া যায় বেলিয়াতোড়ের বিখ্যাত ধর্মরাজের মন্দিরে। ইচ্ছে ছিল, যামিনী রায়ের বাড়ি দেখার, কিন্তু তা আর হল না। বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ে বিখ্যাত চিত্রশিল্পী যামিনী রায়ের বাড়ি দেখতে চাওয়া, দেশি বিদেশী পর্যটকদের কাছে অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে অল্প বিস্তর উপরিউক্ত ঘটনার মতোই বর্ণনা মেলে।

বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় একটা সময় শুধু, যামিনী রায়ের জন্মস্থান হিসেবেই বিখ্যাত ছিল না, তারও অনেক আগেই লোকসংস্কৃতির পীঠস্থান ছিল বেলিয়াতোড়। প্রায় আড়াইশো বছর আগে রায় বংশের পূর্বপুরুষ কচুরায় প্রথম আসেন জগন্নাথপুরে। পরে সেখান থেকে বেলিয়াতোড়ে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। কচু রায়ের তিন পুত্র আত্মারাম, বাঞ্ছারাম ও পঞ্চানন যথাক্রমে বড়, মেজ ও ছোট রায় বংশ হিসেবে পরিচিত হয় এলাকায়।  ছোট রায়বংশের পঞ্চানন রায়ের  প্রপৌত্র  শিল্পী যামিনী রায়।

আনুমানিক আড়াইশো বছর আগে জমিদার রায়বংশের  পূর্বপুরুষ কচু রায় যখন বেলিতোড়ে আসেন  তখন এই এলাকা ছিল জঙ্গলে পরিপূর্ণ। যদিও এখনও বেলিয়াতোড় এলাকায় বড় মাপের জঙ্গল রয়েছে। এই অঞ্চলে ছিল অনুচ্চবর্ণের বাস। স্থানীয় লোকশ্রুতি রয়েছে, এই অঞ্চলে একটা সময় ধর্মরাজের পুজো হত, কিন্তু রায়বংশ এখানে আসার পরে ধর্মরাজ পুজোয় পৃষ্ঠপোষকতা শুরু করেন। সেই ধর্মপুজোর ধারা এখনও এখানে বজায় রয়েছে।