আন্তর্জাতিক

শ্রদ্ধা-সম্মানের জায়গায় জুতোর মালা! মুক্তিযোদ্ধা হেনস্থার ঘটনায় তোলপাড় নেটপাড়া

Garland of shoes in place of respect! There is an uproar over the harassment of freedom fighters

Truth Of Bengal: এ কেমন বাংলাদেশ? বিজয়  দিবসের দিন প্রশ্ন তুলেছিলেন শেখ হাসিনা। সেই ছবিই কিন্তু এবার আরও স্পষ্ট হচ্ছে। হিংসা,বিদ্বেষ আর চরম অরাজকতা। বীর মুক্তিযোদ্ধাকে চরম অপমান। গলায় জুতোর মালা পরিয়ে ঘোরানো হল গোটা এলাকা। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের সেই ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক মাধ্যমে। যা দেখলে লজ্জায় মাথা নিচু হয়ে যাবে। ‘বীর প্রতীক’ খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুকে হেনস্থা করা হয়েছে বলে অভিযোগ।

জানা যায়, রবিবার দুপুরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের কুলিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এই ধরণের বর্বরোচিত ঘটনা ঘটে। পরে রাতে এই ঘটনার ভিডিয়ো ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ১ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের সেই ভিডিয়োতে দেখা যায়, দুজন ব্যক্তি জুতোর মালা পরা অবস্থায় ওই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে টানাহেঁচড়া করছেন। বারংবার ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করলেও রেহাই মেলেনি ওই মুক্তিযোদ্ধার। এই ঘটনার পরেই আবদুল হাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। বর্তমানে ফেনীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।

বাংলাদেশ সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, আবদুল হাই কৃষক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও একই সংগঠনের কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার সাবেক সহসভাপতি। পরিবারের অভিযোগ, অভিযুক্তরা সবাই স্থানীয় জামায়াত-শিবিরের নেতা–কর্মী। আবদুল হাইকে এলাকা ছাড়ার জন্য হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ।

এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি। অভিযুক্তদের শনাক্ত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ। মুক্তিযোদ্ধাকে হেনস্থার ঘটনায় নিন্দার ঝড় নেটপাড়ায়। কি করে মানুষ এতটা নিম্নরুচিসম্পন্ন কাজ করতে পারে সেই প্রশ্নই তুলছে ওয়াকিবহাল মহল।

মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই বলেন,” মানুষের স্বাধীনতার জন্য দেশ স্বাধীন করেছি, কিন্তু স্বাধীনতার সুফল আজও পাইনি। চৌদ্দগ্রামের সাবেক আওয়ামী লীগের এমপি মুজিবুল হকের অনিয়ম, অত্যাচার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলায় আট বছর বাড়িতে আসতে পারিনি। আমার বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছিল।কার জন্য দেশ স্বাধীন করেছিলাম? এভাবে জুতার মালা পরার জন্য অবশ্যই নয়।”

এ প্রসঙ্গে শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেন, “বাংলাদেশের কিছু মানুষ আর মানুষ আছে বলে মনে হয় না। এটা সোজা কথায় আমানবিক একটা ঘটনা। মানুষ এসব করতে পারে এবং আমরা এসব দেখে সহ্য করতে পারি, এটা ভাবা যায় না। মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা এবং সম্মান প্রাপ্য। তাঁরা বাংলাদেশকে অন্ধকার থেকে তুলে এনেছেন। এখন সব চলছে অন্ধকারের দিকে, পিছনের দিকে। মানবতার পক্ষে এটা লজ্জার কথা। প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধাকে এভাবে তাঁরা অত্যাচার করছেন। অমানবিক নিষ্ঠুরতার চরম বলে মনে হয়।”

Related Articles