দেশ

কনৌজ স্টেশনের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় গাফিলতি ঠিকাদারি সংস্থার, পলাতক কর্ণধার

Negligence of contractor, absconding boss in Kannauj station accident

Truth Of Bengal: অমৃত ভারত যোজনার অধীনে কনৌজ রেলওয়ে স্টেশনে নির্মাণ কাজ চলাকালীন একটি ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে শাটারিং ভেঙে ১৫০ ফুট লম্বা লিন্টারটি ভেঙে পড়ে। দুর্ঘটনায় ৪০ জনেরও বেশি শ্রমিক চাপা পড়েন।

সন্ধ্যা নাগাদ ২৬ জন শ্রমিককে ধ্বংসস্তূপ থেকে বের করে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর আহত সাতজনের মধ্যে তিনজনকে কেজিএমইউ লখনউতে রেফার করা হয়েছে। লিন্টার পড়ে গেলে ঠিকাদার ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। ধ্বংসস্তূপের নিচে ১৪ জনেরও বেশি শ্রমিক চাপা পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এনডিআরএফ দল ত্রাণ ও উদ্ধার কাজে নিয়োজিত রয়েছে।

অমৃত ভারত যোজনার অধীনে, ১৩.৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রথম পর্যায়ে স্টেশনে যাত্রীদের ওয়েটিং রুম, বুকিং হল এবং টয়লেট তৈরি করা হচ্ছে। এ জন্য ৪০ ফুট উঁচু কংক্রিটের কাঠামো তৈরি করা হয়েছে। ৭৫০০ বর্গফুটের এই স্থাপত্যে লিন্টার ফেলা হচ্ছিল। নির্মাণ কাজ করছে দেওরিয়ার আশুতোষ এন্টারপ্রাইজ কোম্পানি। দুর্ঘটনার সময় ঠিকাদার রামবিলাস রায় উপস্থিত থাকলেও সুযোগ দেখে পালিয়ে যান।

জানা গিয়েছে, আরপিএফ তাকে খুঁজতে ব্যস্ত। শ্রমিকরা জানান, গত তিন দিন ধরে স্টেশন ভবনে ডাম্পিং লিন্টার ফেলার কাজ চলছে। শনিবার বিকেলে শাটারিং ভেঙে এই দুর্ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যায় রেলওয়ে একটি দুর্ঘটনা সহায়তা বিশেষ ট্রেন পাঠায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন কানপুরের বিভাগীয় কমিশনার বিজয়েন্দ্র পান্ডায়ন, ডিআইজি যোগিন্দর কুমারও।

শনিবার সন্ধ্যায় উত্তর-পূর্ব রেলের ডিআরএম বীণা সিনহা রেলস্টেশনে পৌঁছে পরিদর্শন করেন। গুরুতর আহতদের প্রত্যেককে ২ লক্ষ টাকা এবং আহত শ্রমিকদের প্রত্যেককে পঞ্চাশ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে বলে। উত্তর প্রদেশের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী অসীম অরুণ জানিয়েছেন, ২০ জন শ্রমিক সামান্য আহত হয়েছেন। তাঁদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনজন গুরুতর আহত এবং তাঁদের চিকিৎসার জন্য লখনউতে পাঠানো হয়েছে।

 

দুর্ঘটনার পর নির্বাহকারী সংস্থা নিজেদের মতো করে কাজ করছে বলে জানা গিয়েছে। লিন্টার বসানোর সময় কোম্পানির সাইট ইঞ্জিনিয়ার ও রেলওয়ের ডিজাইন ইঞ্জিনিয়র উপস্থিত ছিলেন না। শ্রমিকদের কাছে নিরাপত্তা সরঞ্জাম ও হেলমেটও ছিল না। পাশাপাশি  শাটারিংয়ে লোহার পাইপ ও কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে কিন্তু মজবুত লোহার গার্ডার স্থাপন করা হয়নি, যার কারণে পাইপটি কংক্রিটের ওজন সহ্য করতে পারেনি এবং লিন্টার পড়ে গিয়েছে। আহত শ্রমিকরা জানান, লিন্টার মোটা এবং শাটারিংও ঠিকমতো বসানো হয়নি। রেলের কর্মকর্তারা বলছেন, নির্মাণ সামগ্রীর নমুনা নেওয়া হয়েছে। মান যাচাই করা হবে।

এদিকে, জানা গিয়েছে, এনডিআরএফ আসার আগে পুরসভার ৫০ জন স্যানিটেশন কর্মীকে ধ্বংসাবশেষ অপসারণ করতে হয়েছিল। এই কাজের জন্য তাদের কাছে পর্যাপ্ত সম্পদ ছিল না বা তাদের প্রশিক্ষণও ছিল না। বেলচা ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি দিয়ে ধ্বংসাবশেষ সরাতে অনেক সময় লেগেছে। পাশাপাশি জানা গিয়েছে, ঘটনাস্থলে এনডিআরএফ দল পৌঁছতে প্রায় চার ঘণ্টা সময় নেয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে দলটি আসার পর ত্রাণ কাজ শুরু হয়।

Related Articles