দেশরাজনীতি

বিহারের জননায়ক কর্পূরী ঠাকুরকে মরণোত্তর ভারতরত্ন, কেন্দ্রের প্রশংসায় নীতীশকুমার

Bihar's public hero Karpuri Tagore posthumously awarded Bharat Ratna, Nitishkumar praises Centre

The Truth Of Bengal: বিহারের জননায়ক কর্পূরী ঠাকুরকে মরণোত্তর ভারতরত্ন দিচ্ছে কেন্দ্র।সেই ঘটনায় কেন্দ্রের প্রশংসা করেছেন নীতীশকুমার। কেউ কেউ বলছেন,বিরোধীশিবিরের জাতগণনার দাবিকে নসাত্ করতেই এটা বিজেপির নয়া চাল। সেই চালে তাঁরা কিস্তিমাত করতে চায় আগামী লোকসভা ভোটে,  ক্ষমতার রাশ হাতে রাখার জন্য আসলে বুঝেও বুঝছেন না।আরজেডির প্রশ্ন,যে বিজেপির পূর্বতন দল জনসংঘ কর্পূরী ঠাকুরকে ক্ষমতা থেকে নামাতে দ্বিধা করেনি তাঁদের বন্ধু কী করে মনে করছেন নীতীশকুমার ?

বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী  কর্পূরী ঠাকুর।যার প্রভাব এখনও রয়েছে উত্তরভারতের পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মধ্যে।সেই অনগ্রসর শ্রেণির সংরক্ষণের অন্যতম প্রধান রূপকারকে মরণোত্তর ভারতরত্ন পুরস্কার দিচ্ছে কেন্দ্র।এই ঘোষণার মাধ্যমে ডবল চাল দেয় কেন্দ্রের বিজেপির সরকার। প্রথমতঃ নীতীশকে কাছে টানার ফন্দি আঁটে।দ্বিতীয়তঃ অনগ্রসর ভোট ব্যাঙ্কের সমর্থন নিশ্চিত করে লালুপ্রসাদ-কংগ্রেস-বামেদের  জনভিত্তিতে  ধাক্কা দেওয়া যাবে।তাতে বিজেপি একটি চেষ্টায় সফল হয়েছে।নীতীশকুমার গদগদ কন্ঠে বিজেপির প্রশংসা করে শিবির বদলেও কুন্ঠা করেনি।অবশ্য দ্বিতীয় ভাবনা অনুযায়ী বিজেপি লোকসভা ভোটে ফসল তুলতে পারবে কিনা তা সময়ই উত্তর দেবে। কে এই কর্পুরী ঠাকুর ? দেখে নেব জননায়ক বলে পরিচিত সেই ব্যক্তিত্বের জনপ্রিয়তার পরিধি।আসলে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির আর্থ-সামাজিক মাণোন্নয়নে বরবার লড়াই করেছেন তিনি। আর সেই শ্রেণির প্রতিনিধি হয়েই ১৯৭০-৭১সালে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি। একইভাবে তিনি ১৯৭৭-৭৯সালেও পাটালিপুত্রের মসনদে আসীন  হন। ১৯৭৮ সালে কর্পুরী ঠাকুর    প্রথম বিহারে অনগ্রসর শ্রেণির   জন্য সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। জনতা পার্টির আমলেই গঠিত হয়েছিল মণ্ডল কমিশন, যাকে ভিত্তি করে বিহারের রাজনীতিতে উত্থান লালু প্রসাদ যাদব, নীতিশ কুমারদের।কিন্তু এই রাজনীতির বাঁকে দুটো প্রশ্ন উঠছে,

  • কর্পূরী ঠাকুর সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে জনসংঘ
  • অনগ্রসর মুখ্যমন্ত্রীকে সেদিন সহ্য করেনি বিজেপির পূর্বসূরীরা
  • সেই জনসংঘের  নেতারাই পরবর্তী সময়ে বিজেপির মাথা হন
  • বর্তমান সময়ে বিজেপির সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখছেন নীতীশ
  • জোট গড়ে সরকার গড়ার মতো বড়সড় সিদ্ধান্তও নেন
  • যে বিজেপির পূর্বসূরীরা, কর্পূরী ঠাকুরকে ক্ষমতাচ্যুত করে, কেন তাঁদের সঙ্গে সমঝোতা ?
  • মণ্ডল কমিশনকে  যারা খর্ব করতে চায়,তাঁরা কীকরে নীতীশের বন্ধু হলেন ?
  • নীতীশের অনগ্রসর বন্ধু ইমেজ, ধাক্কা খাওয়ার বিপুল সম্ভাবনা

‘‘সামাজিক ন্যায়ের জন্য নিরন্তর যুদ্ধরত কর্পূরী ঠাকুরের জন্মশতবর্ষ পালন হয়েছে। অনগ্রসর শ্রেণির সবথেকে মহান আন্দোলনকারী ছিলেন কর্পূরী ঠাকুর,তাঁর সমাজদর্শনকে যারা ঢেকে রাখতে চেয়েছিল তাঁদের কাছে টানার জন্য নীতীশের প্রতি ক্ষুব্ধ যাদব,কুর্মি থেকে অনগ্রসর শ্রেণির মানুষেরা।  মণ্ডল কমিশনের প্রভাব খর্ব করতে যাঁরা রামরথ চালিয়েছিল, সেই  বিজেপির  মোহে পড়লে আগামীতে কী     নীতীশকুমারকে মাসুল গুণতে হবে না ?এই প্রশ্নই রাখছেন বিরোধী শিবিরের নেতারা।

Free Access

Related Articles