Smriti Mandhana: স্মৃতির জীবনের আম্পায়ার কী রায় দেন, জানার অপেক্ষায় দুনিয়া

জয়ন্ত চক্রবর্তী: বিগত এক সপ্তাহের খবরের কাগজ খুলে দেখছি যে ফেলে আসা সপ্তাহে দুটি ঘটনা ভারতীয় জন্যজীবনকে খুবই স্পর্শ করেছে– এক, ভারতের বিশ্বকাপ জয়ী মহিলা ক্রিকেট দলের সহ অধিনায়িকা স্মৃতি মান্ধানার বিয়ে ভাঙার খবর। দুই, বিশিষ্ট অভিনেতা ধর্মেন্দ্র প্রয়াত হয়েছেন, তাঁর বিপুল সম্পত্তির ভাগাভাগি কী ভাবে হবে? ভারতীয় জনগণের রাতের ঘুম উড়ে গেছে এই দুই ঘটনায়। স্মৃতি মান্ধনার ফ্যান ফলোয়ার্স ভালই। মহিলা ক্রিকের্টের এই তারকা নিজগুণেই আজ এক হাউসহোল্ড নেম। তাঁর বিয়ে ঘিরে যে হইচই হবে, তাতে আর বিস্ময়ের কী! কিন্তু, হইচই যে এইরকম সর্বভারতীয় মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করবে তা কি কেউ ভেবেছিল? এই কলমচি যে ভাবেনি তা নিশ্চিত। ফ্রান্স বিশ্বকাপ জেতার পর বিশ্বকাপ জয়ী ইমানুয়েল পেতিত-এর বিয়েও ভণ্ডুল হয়ে গিয়েছিল। তবে, কারণটা ছিল অন্য। বিশ্বজয়ী ফ্রান্স দলের খেলোয়াড়রা ইমানুয়েল পেতিত-এর আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে ওই গ্রামে পৌঁছতেই ফ্রান্সের বিজয়ী খেলোয়াড়দের ঘিরে প্রবল উৎসাহের প্লাবনে বিয়েটা পিছিয়ে যায়।

স্মৃতি মান্ধানা এবং পলাশ মুচ্ছলের বিয়েটা বাতিলই হয়ে গেল এক অদ্ভুত কারণে। তার আগে পর্যন্ত আমরা রোমাঞ্চিত হয়েছি স্মৃতি মান্ধানার প্রাক বিবাহ অনুষ্ঠানগুলি ঘিরে। একটি ম্যাচের আয়োজন হয়েছিল স্মৃতি মান্ধানা একাদশ বনাম পলাশ মুচ্ছল একাদশের মধ্যে। দুই দলেই ছিলেন তথাকথিত সেলিব্রিটিরা। পলাশও কম যান না, তিনি বলিউডের উঠতি গায়িকা পলক মুচ্ছলের ভাই। নিজেও বলিউডের সঙ্গীত পরিচালক। তাই, এই ক্রিকেট ম্যাচে সেলিব্রিটির উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। এই পর্যন্ত ঠিক ছিল। এরপরই সংবাদ মাধ্যমে খবর দেখছি যে স্মৃতি মান্ধানার বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আইসিসিইউ-তে ভর্তি হয়েছেন এবং বিয়েটাতাই স্থগিত রাখা হচ্ছে। পাড়ার পিসিমা-মাসিমারা যখন স্মৃতির দুঃখে বিগলিত হচ্ছেনন– মেয়েটার ভাগ্যটা খারাপ বলে, তখনই খবর এল যে পলাশ মুচ্ছলও হাসপাতালে গেছেন আসিডের প্রকোপে। তবে, হাসপাতালে রুটিন চেক আপের পড়ে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। স্মৃতির ভাগ্য বিপর্যয়ে প্রথমে বাবাটা গেল পড়ে স্বামীটাও গেল– এই দুঃখে বিদীর্ণ মাসিমা-পিসিমাদের আর একটু বিস্ময়ের বাকি ছিল। মঙ্গলবারের প্রভাতী কাগজ জানিয়ে দিল যে, স্মৃতি মান্ধানার সঙ্গে পলাশ মুচ্ছলের বিয়েটা আর হচ্ছে না। পলক মুচ্ছল এই খবর জানিয়ে বলেন যে অনিবার্য কারণে বিয়েটা ভেঙেছে। বিয়ের আগের রাতের সঙ্গীত অনুষ্ঠানের পরও বিয়েটা ভাঙল কেন? স্মৃতির বাবা শ্রীনিবাস মান্ধানার হার্ট আটাকটাই কি কারণ? পলাশকে স্মৃতির পরিবার দুর্ভাগ্যের দূত বলে মানছেন? না, আসল কারণটা জানিয়ে দেওয়া যাক। সঙ্গীট অনুষ্ঠানে দেদার পান করেছিলেন পলাশ। পারমিসিভ সোসাইটিতে এসব হয়েই থাকে। এরপর যে ঘটনাটি ঘটে তা অভাবিত ছিল। স্মৃতির বান্ধবী, ওই সঙ্গীত অনুষ্ঠানের কোরিওগ্রাফার মেরি ডি’কোস্টা কণ্ঠলগ্ন হন পলাশ। মদ্যপ অবস্থায় মেরি ডি’কোস্টাকে বুকে টেনে নেন পলাশ। গোটা ঘটনাটাই ঘটে স্মৃতি মান্ধানার চোখের সামনে। এরপর মেরি ডি’কোস্টা তাঁর এবং পলাশের আগের কথোপকথনের স্ক্রিনশট প্রকাশ করেন।

এই স্ক্রিনশট নিছকই নিরামিষ ছিল না এবং মেরি ডি’কোস্টা ও পলাশ মুচ্ছল একে অপরকে বহুদিন ধরেই চিনতেন যদিও তাঁদের দু’জনের কখনও দেখা হয়নি। পলাশের মহিলা প্রীতির আরও কুকীর্তি ফাঁস হতেই স্মৃতি বেঁকে বসেন পলাশকে বিয়ে করতে। কিন্তু এসকেপ রুট তো চাই! তাই, শ্রীনিবাস মান্ধানার হার্ট অ্যাটাক হল। হাসপাতালে গেলেন তিনি। আবার ছাড়াও পেয়ে গেলেন। এইরকম হাই ভোল্টেজ নাটকের চিত্রনাট্যের রচয়িতা নাকি স্মৃতি মান্ধানা স্বয়ং। পলাশ হাসপাতালে গিয়েছিলেন অত্যাধিক মদ্যপানের বাই প্রোডাক্ট সামলাতে। স্মৃতি মান্ধানা কি জানতেন না যে পুরুষ মানুষ হল আংটির মতো। আংটির আবার বাঁকা সোজা থাকে নাকি। ধর্মেন্দ্রকে দেখে স্মৃতি কিছু শিখতে পারতেন নাকি? এক স্ত্রী বর্তমান থাকতে ধর্মেন্দ্র হেমা মালিনীকে বিয়ে করেন হিন্দু ম্যারেজ আক্টকে কলা দেখিয়ে। ধর্মেন্দ্র ও হেমা দু’জনেই ধর্ম পরিবর্তন করে মুসলমান হয়ে যান। ধর্মেন্দ্রর নাম হয় দিওয়ার খান এবং হেমা মালিনী হন আয়েশা। বাহ, কী অদ্ভুত নিয়ম। মুসলিম হলেই বহু বিবাহে ছাড়! এই আইনের ফাঁক গলেই স্ত্রী প্রকাশ বেঁচে থাকলেও হেমা মালিনীকে বিয়ে করেন ধর্মেন্দ্র। স্মৃতি কি পড়ে দেখেননি হিম্যান-এর কার্যকলাপ! পুরুষদের একটু আধটু ত্রুটি তো থাকতেই পারে! ধর্মেন্দ্রর ছিল না? তা হলে পলাশ মুচ্ছল কি দোষ করলেন? এই যে ধর্মেন্দ্রর ছয় সন্তান– সানি, ববি, বিজয়া, আজিতা, এষা ও অহনার মধ্যে কে কত সম্পত্তি পাবেন তাই নিয়ে পাড়া-পড়শির ঘুম নেই। পলাশ মুচ্ছল আর যা করুন প্রথম স্ত্রীর গর্ভের চার সন্তান বেঁচে থাকতে তো আর দ্বিতীয় স্ত্রীর গর্ভে দুই সন্তান উৎপাদন করেনি। পলাশ মুচ্ছল একটু এদিক ওদিক করে ফেলেছেন। চিরকাল স্ট্রেট বাটে খেলতে পারদর্শী স্মৃতি বিয়েতেও স্ট্রেট বাটে খেলতে চেয়েছেন। জীবনের আম্পায়ার কী রায় দেন তা জানার অপেক্ষায় গোটা দুনিয়া!