ভারতীয় আইনশিক্ষায় অন্তর্ভুক্ত হোক বেদ, রামায়ণ, মহাভারত: সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি
Vedas, Ramayana, Mahabharata should be included in Indian legal education: Supreme Court judge

Truth Of Bengal: সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পঙ্কজ মিথাল মনে করেন, ভারতীয় আইনশিক্ষায় এখন সময় এসেছে নিজেদের শিকড়ে ফিরে যাওয়ার। তিনি বলছেন, পশ্চিমা চিন্তা থেকে ধার করা ন্যায় বা সমতার ধারণা নয়, বরং প্রাচীন ভারতীয় দর্শনের ভিত্তিতে তৈরি হওয়া আইনি জ্ঞানই হোক আইন শিক্ষার মূল ভিত্তি।
ভোপালে জাতীয় আইন ইনস্টিটিউট বিশ্ববিদ্যালয়ে (NLIU) সুপ্রিম কোর্টের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সম্মেলনে বিচারপতি মিথাল বলেন, “বেদ, রামায়ণ, মহাভারত, মনুস্মৃতি, অর্থশাস্ত্র — এ সব কেবল পুরনো ধর্মীয় বই নয়, এদের মধ্যে রয়েছে গভীর আইনতত্ত্ব, শাসন, বিচার ও নৈতিকতার শিক্ষা। এসব না পড়লে ভারতীয় আইন ব্যাখ্যা অসম্পূর্ণ থেকে যায়।”
তিনি প্রস্তাব দেন, আইন কলেজগুলোতে ‘ধর্ম ও ভারতীয় আইনি ভাবনা’ বা ‘ভারতীয় আইনি দর্শনের ভিত্তি’ নামে একটি নতুন পাঠ্যক্রম চালু করা হোক। তিনি চান, ছাত্রছাত্রীরা যেন জানে সংবিধান ছাড়াও গীতা, বেদ ও পুরাণ ভারতের আইনি চিন্তার অংশ।
বিচারপতি মিথাল বলেন, “আমরা যদি এমন এক প্রজন্ম তৈরি করতে পারি যারা সংবিধান পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ‘সমত্ব’ বা ন্যায়ের ধারণা রিগবেদ বা মহাভারতের আলোকে বোঝে, তাহলে আইন ও নৈতিকতার মধ্যে আর বিভাজন থাকবে না।”
তিনি আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই আঞ্চলিক ভাষায় রায় প্রকাশ করছে যাতে সাধারণ মানুষ আইনের কথা বুঝতে পারে। পাশাপাশি, ‘লেডি জাস্টিস’-এর নতুন মূর্তিতে এখন তিনি শাড়ি পরা, হাতে বই ধরা এবং চোখে কোনও কাপড় নেই — যা এক নতুন ভারতীয় চেতনার প্রতিফলন।
বিচারপতি বলেন, “ধর্ম শব্দটি আইনের আগের। পশ্চিমে যেখানে আইন ও নৈতিকতা আলাদা, সেখানে আমাদের শাস্ত্রে ধর্ম মানেই ন্যায়, কর্তব্য, শৃঙ্খলা ও সুবিচারের সমন্বয়। ভারতীয় সংবিধানের মূল চেতনাও এটাই।”
পরিবেশ রক্ষায় সুপ্রিম কোর্টের পদক্ষেপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অথর্ববেদে বলা হয়েছে — প্রকৃতি যেন নষ্ট না হয়। আর সমতার বিষয়ে ঋগ্বেদে আছে — “কেউ বড় নয়, কেউ ছোট নয়, সবাই ভাই।”
সবশেষে বিচারপতি মিথাল বলেন, “এটা কোনও অতীতমুখী ভাবনা নয়, বরং আমাদের সাংবিধানিক ভবিষ্যৎ আরও শক্তিশালী করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”