অটিজমকে জয় করে ইতিহাস, স্কেটিং-এ বাংলার জন্য জোড়া সোনা আনল ফারদিন
পশ্চিমবঙ্গের ৬৩ বছরের রোলার স্কেটিং-এর ইতিহাসে এই প্রথম কোনও খেলোয়াড়জাতীয় মঞ্চে এই অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করলেন।
Truth Of Bengal: সমস্ত শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধকতাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে এক অনন্য ইতিহাস গড়লেন বাংলার বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কিশোর ফারদিন হোসেন। অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমে আয়োজিত জাতীয় রোলার স্কেটিং প্রতিযোগিতায় বাংলার ঝুলিতে এল জোড়া স্বর্ণপদক। পশ্চিমবঙ্গের ৬৩ বছরের রোলার স্কেটিং-এর ইতিহাসে এই প্রথম কোনও খেলোয়াড়জাতীয় মঞ্চে এই অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করলেন। তাও আবার ফারদিন অটিজম আক্রান্ত।
চলতি মাসের ১৪ তারিখ বিশাখাপত্তনমে অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় স্তরের এই রোলার স্কেটিং প্রতিযোগিতা। সেখানে বাংলার হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে নেমে দুটি ভিন্ন বিভাগে সোনা জয় করে ফারদিন। সে ‘ওয়ান ল্যাপ’ এবং ‘৫ হাজার মিটার প্লাজ ডি’ এই দুই বিভাগেই সেরার শিরোপা ছিনিয়ে নেয়। প্রতিযোগিতার ট্র্যাকে ফারদিনের গতি ও দক্ষতার কাছে হার মানতে বাধ্য হয় অন্যান্য প্রতিযোগীরাও।
ফারদিন বর্তমানে ২০২৬ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে। জন্ম থেকেই অটিজমের শিকার হওয়ায় পড়াশোনার ক্ষেত্রে তাকে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়। তবে সেই সীমাবদ্ধতা তার চলার পথ থামাতে পারেনি। ফারদিনের মায়ের কথায়, “অটিজমের কারণে পড়াশোনা করা ফারদিনের জন্য বেশ কঠিন, তবুও সে নিজের চেষ্টায় প্রতি বছর সফলভাবে পাশ করে আসছে।” পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলার প্রতি অদম্য টান আর জেদই তাকে আজ এই ঐতিহাসিক উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।
ক্রীড়া বিশেষজ্ঞদের মতে, ফারদিনের এই জয় কেবল একটি পদক নয়, বরং এটি একটি সামাজিক দৃষ্টান্ত। পশ্চিমবঙ্গের ৬৩ বছরের স্কেটিং ইতিহাসে আগে কখনও কোনো বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন খেলোয়াড় জাতীয় স্তরে এমন কৃতিত্ব দেখাতে পারেননি। ফারদিন প্রমাণ করে দিয়েছে যে, সঠিক প্রশিক্ষণ এবং অটুট পারিবারিক সমর্থন থাকলে অটিজম কোনো বাধা হতে পারে না।
বাংলার এই কৃতী সন্তানের সাফল্যে এখন খুশির হাওয়া ক্রীড়ামহলে। এখন ফারদিনের লক্ষ্য আরও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করা এবং দেশের জন্য পদক জয় করা।





