লাইফস্টাইল

কফিতেই তরতাজা চুল-ত্বক

Lifestyel

The Truth of Bengal, Mou Basu: দোরগোড়ায় এসে গেছে বাঙালির শ্রেষ্ঠ কার্নিভাল দুর্গাপুজো। পুজোর ক’টা দিন সকলেই চান নিজেকে আকর্ষণীয় করে তুলতে। কিন্তু ত্বক আর চুলের স্বাভাবিক ঔজ্জ্বল্য না থাকলে সব সাজই মাটি। মলিন ত্বক ও চুল হলে দামি দামি পোশাক পরেও আকর্ষণীয় লাগবে না। তাই এবারের পুজোয় নিজেকে আকর্ষণীয় করে তুলতে দামি দামি ক্ষতিকর টক্সিন রাসায়নিক মেশানো কসমেটিকস নয় এবার রূপচর্চায় ভরসা রাখুন প্রাকৃতিক ঘরোয়া উপাদানের ওপর। রান্নাঘরের অতি প্রয়োজনীয় উপাদান হল কফি। কফির কাপে তুফান তোলার পাশাপাশি এবার পুজোর আগে চুল ও ত্বকের স্বাভাবিক জেল্লা ফিরিয়ে আনতে ব্যবহার করুন কফি গুঁড়ো।

চুল কমছে? কমে গেছে চুলের বৃদ্ধি? চুলের ডগা ফেটে যাচ্ছে? চুল নিয়ে এমন সব সমস্যায় যদি জেরবার হন তবে চুল নিয়ে চুলোচুলি না করে ব্যবহার করুন কফি মাস্ক।কীভাবে চুলে ব্যবহার করবেন কফি মাস্ক?চুলে শ্যাম্পু দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে নিন। একটা বাটিতে ৪ চা চামচ কফি গুঁড়ো নিন। ফোটানো জল দিন। তবে জলের তাপমাত্রা যেন বেশি গরম না হয় তা দেখবেন। চাইলে এই মিশ্রণের মধ্যে ডিমের সাদা অংশ দিয়ে ভালো করে ফেটিয়ে নিন।মিশ্রণটি মাথার তালুতে লাগিয়ে ভালো করে ম্যাসাজ করুন।

চুলটা তোয়ালে দিয়ে বেঁধে রাখুন ৩০-৪০ মিনিট। ঈষদুষ্ণ গরম জলে চুল পরিষ্কার করে ধুয়ে নিন।ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরোন হরমোনের নিঃসারণ কমে গেলে চুলের গোড়া নরম হয়ে যায়। চুলের বৃদ্ধি আটকে যায়। ডগা ফেটে যায়। আমেরিকান ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশনর গবেষণায় দেখা মেলে, কফি থেকে বেরোয় এটিপি নামে এক যৌগের প্রভাবে চুলের গোড়ায় থাকা কোষ সক্রিয় হয়ে ওঠে। এই যৌগ ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরোন হরমোনের নিঃসারণ বাড়িয়ে তোলে। চুলের গোড়া শক্ত করে চুলের বৃদ্ধি ঘটায়। ডগা ফেটে যাওয়া আটকায়, চুলকে মজবুত করে। চুলের জেল্লাও ফিরিয়ে আনে কফি। মাথার তালুতে কফি মাস্ক লাগালে তালুতে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। কফি তালুতে জমে থাকা দূষিত পদার্থ ডিটক্সিফাই করতে বা দূর করতে সাহায্য করে। কফি দূর করে খুশকিও।

অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও অ্যান্টিইনফ্লেমটরি গুণ থাকা কফিতে চুলের পাশাপাশি দূর হয় ত্বকের যাবতীয় সমস্যাও।
দেখে নিন কীভাবে কফির মাধ্যমে ত্বকের পরিচর্যা করবেন –
১) কফি গুঁড়ো ত্বকের জন্য দারুণ এক্সফোলিয়েটরের কাজ করে। অল্প পরিমাণে কফি গুঁড়োর সঙ্গে নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিয়ে ত্বকে লাগিয়ে নিন। আলতো হাতে গোলাকার ভাবে ম্যাসাজ করুন। কফিতে থাকা ক্যাফেইন ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। কফিতে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকে বলে তা ফ্রি র্যাডিকেলসের হাত থেকে বাঁচায়।

২) কফি ফেস মাস্ক ত্বকের স্বাভাবিক জেল্লা ফিরিয়ে আনে। ত্বক টানটান করে। অল্প পরিমাণে কফি গুঁড়োর সঙ্গে মধু, নারকেল বা আমন্ড অয়েল মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে নিন। ১৫-২০ মিনিট রেখে পরিষ্কার ঠান্ডা জলে ধুয়ে নিন। কফিতে ক্যাফেইন থাকে যা ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। ত্বকের ফোলাভাব কমায়। মধু ত্বক ময়েশ্চারাইজ করতে সাহায্য করে।

৩) চোখের তলায় অনেক সময় ফোলাভাব ও ডার্ক সার্কেল বা কালো দাগ দেখা যায়। এই সমস্যা দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা নেয় কফি মাস্ক। অল্প পরিমাণে কফি গুঁড়ো ঠান্ডা জলে মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে নিন। মিশ্রণটি চোখের তলায় লাগিয়ে নিয়ে ১৫-২০ মিনিট রাখুন। জলে ধুয়ে নিন। কফিতে থাকা ক্যাফেইন রক্তনালিকে টানটান করে, ফোলাভাব কমায়। কফিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ত্বককে ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিকেলস থেকে বাঁচায়।

৪) ঠোঁটের ওপর কালচে ভাব দূর করে কফি। ডেড ডেল বা মরা কোষ দূর করে ঠোঁট মসৃণ করে তোলে। কফি গুঁড়োর সঙ্গে মধু ও নারকেল তেল মিশিয়ে আলতো ভাবে ঠোঁটে লাগিয়ে রাখুন। কিছু সময় পর জল দিয়ে ধুয়ে নিন। মধু আর নারকেল তেল ঠোঁটের খসখসে ভাব দূর করে নরম করে।

Related Articles