কলকাতা

ফল- মিষ্টি নয়, চাউমিন-মাঞ্চুরিয়ানে সন্তুষ্ট হন কলকাতার এই মা কালী!

This Kolkata mother Kali is satisfied with fruit - not sweets, but chow mein-Manchurian!

Truth Of Bengal: ভারত এমন এক দেশ যেখানে বৈচিত্র্যই তার সবচেয়ে বড় পরিচয়। প্রতিটি রাজ্যে, প্রতিটি শহরে লুকিয়ে থাকে ইতিহাস, ঐতিহ্য আর অজস্র বিস্ময়। কলকাতার বুকেও রয়েছে এমনই এক চমকপ্রদ জায়গা—চায়না টাউন, ট্যাংরা। এখানেই অবস্থিত এক ব্যতিক্রমী কালী মন্দির, যেখানে চিরচেনা লাড্ডু বা ফল নয়, মা কালীর প্রসাদ হিসেবে দেওয়া হয় চাউমিন, স্টিকি রাইস আর সবজি।

প্রথম শুনলে আশ্চর্য লাগতেই পারে—ভোগে চাইনিজ খাবার? কিন্তু এই মন্দির আসলে চীনা সংস্কৃতি আর বাঙালিয়ানা একসাথে মিশে যাওয়ার এক বাস্তব উদাহরণ। ১৮০০ সালের দশকে কলকাতায় চিনাদের আগমন হয়। ট্যাংরা-তপসিয়ার এই অঞ্চল ধীরে ধীরে হয়ে ওঠে তাঁদের ঘরবাড়ি।

ইন্দো-চিন যুদ্ধের পর অনেকেই ফিরে গেলেও, যারা থেকে যান, তারা রেস্তোরাঁ ব্যবসা শুরু করেন। ধীরে ধীরে চাইনিজ খাবার বাঙালির প্রতিদিনের খাবারের অংশ হয়ে ওঠে। সেই সম্পর্কই আরও গভীর করে তোলে এই কালী মন্দির।

এই মন্দিরে একজন বাঙালি পুরোহিত দেবীর পূজা করেন, আর চীনা রীতি অনুযায়ী, অশুভ শক্তিকে দূরে রাখতে পোড়ানো হয় কাগজ। দীপাবলির সময়ে জ্বলে ওঠে চাইনিজ ধূপকাঠি, আর মন্দির চত্বর ভরে ওঠে এক ভিন্ন ধরণের সুবাসে।

চাইনিজ কালী মন্দির শুধু ধর্মীয় স্থল নয়, এটি কলকাতার সাংস্কৃতিক বহুত্বের প্রতীক। এখানকার প্রসাদ যেমন আলাদা, তেমনই আলাদা তার আবহ, ইতিহাস আর মেলবন্ধনের গল্প। এটি প্রমাণ করে দেয়, ধর্ম আর সংস্কৃতির ভিন্নতা যতই থাকুক, ভালবাসা আর শ্রদ্ধায় সবকিছুই একসূত্রে বাঁধা যায়।

Related Articles