
Truth Of Bengal: অর্ক গোস্বামী: বিশ্ব জুড়ে নতুন মায়েদের কাজের সুযোগ এবং সুরক্ষা উভয়ই ক্রমসংকোচনের শিকার হচ্ছে। সদ্য মা হওয়ার আনন্দ বছর ঘুরতে না ঘুরতে আর্থিক অনিশ্চয়তায় ম্লান হয়ে আসছে। প্রায় ৫২ শতাংশ মহিলা সন্তান জন্ম দেওয়ার এক বছরের মধ্যে চাকরি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। এমনই তথ্য ‘দ্য ফিমেল লিড’ সংস্থার করা একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে।
বিশ্বব্যপী করা এই সমীক্ষায় কর্মক্ষেত্রে সদ্য মা হয়েছেন এমন নারী কর্মীবান্ধব পরিবেশ না থাকাকেই কর্মজীবনকে বিদায় জানাবার জন্য মুলত দায়ী করা হয়েছে। সমস্যাটি বিশেষ করে বেসরকারি এবং অসংগঠিত ক্ষেত্রে আরও ভয়াবহ। সারা বিশ্বের সামগ্রিক জিডিপি-র প্রায় ৯ শতাংশ মূল্য সৃষ্টি করেন কর্মরত মায়েরা। টাকায় যার অঙ্ক প্রায় ৮.৯ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমান। এই বিশাল সংখ্যক কর্মীকে সুস্থ পরিবেশে কাজ করার সুনিশ্চিত ব্যবস্থা করা তাই সরকারি, বেসরকারি এবং নাগরিক সমাজের দায়িত্ব। উপরোক্ত সমীক্ষায় প্রায় এক তৃতীয়াংশ মহিলা জানিয়েছেন যে, কর্মক্ষেত্রে তাদের দৈনন্দিন সমস্যাগুলি সমাধান করার বিশেষ কোনও ব্যবস্থা থাকে না।
কুড়ি শতাংশ মহিলার বক্তব্য, পুরুষদের পিতৃত্বকালীন ছুটি যদি বাড়ানো হয় তবে সন্তানপালনের দায়িত্ব দু’জনেই ভাল ভাবে করতে পারেন এবং বিশেষ করে কর্মক্ষেত্রে মহিলা দের ‘ড্রপ আউট’ কমবে। যদিও সব দেশে পরিস্থিতি এক নয়। প্রথম বিশ্বের কিছু দেশে যেমন ইংল্যন্ড এবং স্ক্যানডিনেভিয়ান দেশগুলিতে বেশ কিছু কোম্পানি কর্মক্ষেত্রে সদ্য মা হওয়া কর্মীদরে জন্য সাপ্তাহিক কাজের পরিমাণ এক রেখে অফিসে আসা যাওয়ার সময়ের ব্যাপারে কিছুটা ছাড় দেন। ফলস্বরূপ দেখা যায়, সামগ্রিক ভাবে ওই কর্মীদের কর্মদক্ষতা এবং আউটপুট গর্ভাবস্থার পূর্ববর্তী সময়ের সমান বা তার কাছাকাছি বজায় থেকেছে। ভারতে বিপুলে সংখ্যক নারী কর্মীর এই জাতীয় ব্যবস্থা প্রচলন করতে পারলে আশা করা যায় পরিস্থিতি বদলাবে। বিষয়টি রাজনৈতিক দলগুলি তাদের নির্বাচনী প্রচারপত্রে অগ্রাধিকার দিলে আশা করা যায় মূলধারার প্রচারমাধ্যমে এই বিষয়ে আশানুরূপ চর্চা শুরু হবে।