মুড়ির মোয়া যেন, টুপ করে গিলে নেওয়া যাবে বাংলা-বিহার-ওড়িশা!
It's like a giant snail, swallowing Bengal, Bihar, and Odisha whole!

Truth of Bengal,জয়ন্ত চক্রবর্তী: একে ধৃষ্টতা বলবো নাকি পাগলের প্রলাপ? বাংলাদেশের প্রাক্তন কিছু সেনাকর্তা খোয়াব দেখছেন ‘চারদিনের মধ্যে কলকাতা জয়ের’ কিংবা বাংলা-বিহার-ওড়িশা দখলের! এ যেন মুড়ির মোয়া, ইচ্ছে হলেই টুপ করে গিলে নেওয়া যাবে! পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ঠিকই বলেছেন, হিম্মত থাকলে করে দেখাক! আসলে প্রতিবেশী একটি দেশের দায়িত্বশীল সেনাবাহিনীর প্রাক্তন সদস্যরা যে এই ধরনের মন্তব্য করতে পারেন– তা কল্পনার অতীত।
কল্পনার অতীত বলছি কেন, গড়পরতা বাংলাদেশির মনোভাবও কি সেইরকম নয়? তাঁরা কলকাতায় আসবেন চিকিৎসা করাতে, মার্কেটিং করতে, শীতকালে বেড়াতে কিংবা খেলা দেখতে আবার রসগোল্লার মতো কলকাতাকে গিলে নেওয়ার স্বপ্ন কিংবা দুঃস্বপ্ন দেখবেন– এই দ্বিচারিতা বোধহয় বাংলাদেশের মানুষকেই মানায়! বলতে পারেন, বাংলাদেশ সরকার তো বলেনি এই কথা!
তা হলে? প্রশ্ন থেকে যায়, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় বসে যে অর্বাচীনের দল এই সব পাগলের প্রলাপ আউড়ে যাচ্ছে, সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিয়েছে? নাকি ইউনুস সরকার বড় বেশি ব্যস্ত ভারত থেকে আলু-পেঁয়াজ না আমদানি করে যদি ৬টি অন্য দেশের কাছ থেকে আলু-পেঁয়াজ আমদানি করা যায়– সেই বিষয়টি নিয়ে। ভারত নির্ভরতা নাকি কমাতে চাইছে ইউনুস সরকার। আদানিদের বিদ্যুৎ প্রকল্প কাটছাট করা হয়েছে।
শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ এই অপরাধে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলে ইন্টারনেটের ব্যান্ডউইডথ সরবরাহকারী দুটি প্রতিষ্ঠানের অর্ডার বাতিল করা হয়েছে। সব থেকে বড় কথা যে পাকিস্তানিদের বাংলাদেশে আসার ব্যাপারটি সুগম করা হয়েছে। ২০০১-২০০৬ বিএনপি-জামাত বাংলাদেশে ক্ষমতায় থাকার সময় ঠিক এই কাজটি করা হয়েছিল। এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই বাংলাদেশকে তাদের ঘাঁটি বানিয়ে ভারতে বিশেষ করে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলে বেশ কিছু নাশকতার কাজ করেছিল।
পাকিস্তানি বসরা বাংলাদেশে পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গে কি বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনারা কলকাতাকে গিলে খাওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করলেন? হবেও বা। আসলে স্বপ্নে তো পোলাও-বিরিয়ানি খেতে সমস্যা নেই! কিন্তু এই প্রাক্তন সেনা সদস্যরা কি ভুলে গিয়েছেন একাত্তরের কথা? সেদিন ভারত পাশে না দাঁড়ালে কি পূর্ব পাকিস্তান এই পরিচয় মুছে ফেলে স্বাধীন বাংলাদেশ মাথা তুলে দাঁড়াতে পারতো? অকৃতজ্ঞতার একটি মাত্রা থাকে! বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনা কর্তারা সেই কথা ভুলে যেতে পারেন, কিন্তু ভারত আর বাংলাদেশের সামরিক শক্তির কথা তো তাঁদের অজানা থাকার কথা নয়।
যুদ্ধ হলে সামরিক শক্তিতে বিশ্বের ৩৭ নম্বর দেশকে চতুর্থ নম্বর দেশটি যে গিলে খেয়ে ফেলতে পারে তা তো তাঁদের অজানা নয়। তা হলে? আসলে শাম চাচার উস্কানি নয়, চ্যাং ব্যাংদের স্পর্ধাতেই বলিয়ান হয়ে বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনাকর্তারা এই কথা বলেছেন। নাকি তাঁদের দিয়ে বলিয়ে নেওয়া হয়েছে? রক্তচক্ষু দেখানো ভাল, কিন্তু লাল হয়ে থাকা সেই চোখ উৎপাটন করার ক্ষমতা যে ভারতও রাখে!