শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের নামে অশান্তি! নবান্ন অভিযানে তান্ডবের ঘটনায় গ্রেফতার ২২০
Unrest in the name of peaceful movement! 220 arrested in Nabanna raid

Truth Of Bengal: আরজি কর হাসপাতালে কর্তব্যরত অবস্থায় তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের প্রতিবাদে আজ ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’ এর পক্ষ থেকে নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছিল। সেখানে বেলা যত গড়াতে থাকে ততই অপ্রীতিকর ঘটনার সৃষ্টি হয়। সেই ঘটনায় মোট ২২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়াও অনেকজনকে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার এই ঘটনার পর সন্ধায় সাংবাদিক বৈঠক করেছিল পুলিশ। সেখানেই নবান্ন অভিযানকে ‘বেলাগাম, বিশৃঙ্খল তাণ্ডব’ বলে অভিহিত করেন তারা।
এডিডি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার বললেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলন হবে বলে বলা হয়েছিল। কিন্তু আমরা দেখলাম অশান্তিপূর্ণ একটি আন্দোলন। এই আন্দোলন কখনও বাংলার প্রকৃত ছাত্রসমাজের হতে পারে না।’’ এছাড়াও এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) মনোজ বর্মা এবং ডিসি (সেন্ট্রাল) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় এই আন্দোলনকে দুষ্কৃতীদের আন্দোলন বলে দাবি করেন।
তবে গতকাল অভিযোগ করা হয়েছিল পুলিশের কাছে নাকি কোনরকম কোন অনুমতি নেওয়াই হয়নি। সেকারনেই আজকের এই আন্দোলনকে ‘বেআইনি’ বলে দাবি করেছিল কলকাতা পুলিশ। সেই ঘটনার সামাল দিতে কিছুটা বেগ পেতে হয় পুলিশকে। পুলিশকে লক্ষ্য করে শুরু হয় ইট বৃষ্টি। ব্যারিকেট ভেঙে এগিয়ে যেতে থাকেন প্রতিবাদীরা। কার্যত নবান্ন অভিযান ঘিরে এখন রণক্ষেত্র পরিস্থিতি।
সাঁতরাগাছিতে পুলিশ আন্দোলনকারীদের মধ্যে তুমুল খন্ড যুদ্ধ। ছড়িয়েছিল তীব্র উত্তেজনা। পুলিশকে লক্ষ্য করে চলে ইট বৃষ্টি। ব্যারিকেড টপকানোর চেষ্টাও করা হয়। শুধু তাই নয় পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে প্রতিবাদীরা এগিয়ে গিয়েছিলেন। পাল্টা জলকামান ছোড়ে পুলিশ। ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল। কয়েকটি জায়গায় লাঠিচার্জও করতে হয়েছে পুলিশকে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে করা বৈঠকে পুলিশ জানিয়েছে, আজকের নবান্ন অভিযান থেকে কলকাতা পুলিশ মোট ১২৬ জনকে গ্রেফতার করেছে। এদের মধ্যে ১০৩ জন পুরুষ এবং ২৩ জন মহিলা রয়েছেন। এছাড়াও রাজ্য পুলিশ মোট ৯৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনায় প্রায় ১৫ জন পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন বলেই খবর। এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) বলেন, ‘‘এঁরা লাশ ফেলা দেওয়ার কথা বলেছিলেন। তার অকাট্য প্রমাণ রয়েছে।’’ এছাড়াও এক পুলিশ কর্তা সমালোচনার সুরে বলেন, ‘‘কিন্তু আন্দোলন কতটা শান্তিপূর্ণ থাকল সেটা দেখলেন সবাই। আন্দোলনকারীরা এলেন। তার পর ব্যারিকেড ধরে ঝাঁকানো শুরু হল। পুলিশ বার বার ঘোষণা করে, ‘ওটা সংরক্ষিত এলাকা। প্ররোচনায় পা দেবেন না।’ তার পরেও ব্যারিকেড ভাঙা হল! বোতল, ইট ছোড়া হল পুলিশের দিকে। সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করা হল। গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হল।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘কর্মব্যস্ত একটি দিনে এমন পরিস্তিতি তৈরি হয় যাতে সাধারণ মানুষের কোনও ক্ষতি হয়। পুলিশ যাতে কোনও প্ররোচনায় পা দেয়। কিন্তু পুলিশ কোনও প্ররোচনায় পা দেয়নি। তারা ধৈর্য এবং সংযমের পরীক্ষা দিয়েছে। রক্তাক্ত হলেন পুলিশকর্মীরা। এর নিন্দার ভাষা আমাদের কাছে নেই।’’ পুলিশকর্তার জানান, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে ছাত্রসমাজের নামে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আন্দোলনের চেহারা দেখে মনে হয়নি যে, রাজ্যের প্রকৃত ছাত্রসমাজ এমন অসভ্যতা করতে পারে। বাংলার কোনও ছাত্র এই রকম গুন্ডামি করবে না বলে আমাদের বিশ্বাস।’’