রাজ্যের খবর

লুকোচুরি খেলা শেষ জিনাতের, বাঁকুড়ায় বন্দি বাঘিনী

The game of hide and seek ended, the tigress Zeenat trapped in Bankura

Truth Of Bengal: সত্তরের দশকে বহু পুরুষের হৃদয়ে কাঁপন ধরায় জিনত আমন। হার্টথ্রব সেই নায়িকার কথা সবার জানা। আর ২৮নভেম্বর থেকে বেপাত্তা হয়ে যাওয়া চারপেয়ে জিনত কাঁপন ধরায় জঙ্গলমহলের মানুষকে। ৬বছর পর আতঙ্ক গ্রাস করে ঝাড়গ্রামের মানুষকে।১৫নভেম্বর,মহারাষ্ট্রের তাবোডা-আন্ধারি ব্রাঘ্য প্রকল্প থেকে ৩বছরের জিনতকে উড়িষ্যার ময়ূরভঞ্জের সিমলিপাল ব্রাঘ্য প্রকল্পে আনা হয়েছিল।

উড়িষ্যার সিমলিপালের রিজার্ভ ফরেস্ট থেকে বেরিয়ে বাঘিনী ঝাড়খণ্ডের চাকুলিয়া এলাকার বনাঞ্চলে চলে আসে।  জামবনি ব্লকের গিধনি এবং জামবনি–সহ অন্যান্য রেঞ্জগুলির অফিসার, বনকর্মীরা নিজেদের মধ্যে সমন্বয় রেখে ঝাড়খণ্ড সীমানা এলাকায় নজরদারি চালান।কিন্তু বাঘিনী চলে আসে পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের রাইকার জঙ্গলে।এরপর চলে দাপুটে বাঘিনীর দেদার লুকোচুরি খেলা। অবশেষে সেই বাঘিনী বন্দি হল। দিন সাতেকের লুকোচুরি শেষে রবিবার দুপুরে বাঁকুড়ার জঙ্গলে ধরা পড়ল উড়িষ্যা  থেকে আসা বাঘিনি।

এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন,পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বনবিভাগের সকল আধিকারিককে আমার আন্তরিক অভিনন্দন বাঘিনী জিনাতকে সফলভাবে উদ্ধার করার জন্য। এই অসাধারণ প্রচেষ্টায় তাঁদের অকুণ্ঠ সমর্থন এবং সহযোগিতার জন্য জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পঞ্চায়েত কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনগণের প্রতি আমি আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। এই উদ্ধার আসলে টিমওয়ার্ক এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের প্রতি নিবেদিতপ্রাণের – একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। আপনাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা শুধুমাত্র এক প্রাণীকেই রক্ষা করেনি, আমাদের প্রাকৃতিক ঐতিহ্য রক্ষার গুরুত্বকেও শক্তিশালী করেছে। আপনাদের এই অসামান্য কাজের জন্য আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ!

উল্লেখ্য, বাঘিনীকে কাবু করতে কম কসুর করেনি বনকর্মীরা। শনিবার থেকে তাকে লক্ষ্য করে বার বার ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়া হয় কিন্তু কিছুতেই বাগে আনা যায়নি। বন দফতর সূত্রে খবর, রবিবার বিকেল ৪টে নাগাদ ফের জিনতকে লক্ষ্য করে ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়েন বনকর্মীরা। সেই গুলি লাগে বাঘিনির গায়ে। তাতেই কাবু হয় সে। পরে তাকে ধরে আনা হয়। বাঁকুড়ার রানিবাঁধ থানার গোঁসাইডিহি গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছিল জিনত। গতিবিধি আঁচ করেই তাকে ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে বন কর্মীরা। বাঘিনিকে কাবু করার পর  বন দফতর তাকে সতর্কতার সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয়।   কয়েক দিন ঝাড়খণ্ডে ঘুরে চাকুলিয়া রেঞ্জের রাজাবাসার জঙ্গল পেরিয়ে চিয়াবান্ধি এলাকা থেকে ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি থানার অন্তর্গত কাটুচুয়া জঙ্গলে ঢুকে পড়েছিল এই খিলাড়ি বাঘিনী।

এবিষয়ে আরও জানা যায়, ভোরের দিকে বাঘিনির গর্জন শুনতে পান গ্রামবাসীরা। এলাকায় তার পায়ের ছাপও দেখা যায়। তা থেকে গ্রামবাসীরা মনে করে, গ্রাম থেকে  কয়েকশো মিটার দূরে জঙ্গলে লুকিয়ে রয়েছে বাঘিনী। । বাঘিনির গলায় থাকা রেডিয়ো কলার সিগন্যাল ট্র্যাক করে সেখানে পৌঁছে যান বনকর্মীরাও। তাঁরা জানতে পারেন, গ্রামের অদূরেই মুকুটমণিপুর জলাধার লাগোয়া ছোট জঙ্গলে রয়েছে জিনত। এখন জিনত জালে ধরা পড়ায় রাজ্যের বনাঞ্চলের মানুষেরা কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন।

Related Articles