মাটি খুঁড়ে উদ্ধার শিবলিঙ্গ, পঁচেটেগড় রাজবাড়ির পঞ্চেশ্বর মন্দির ঘিরে আছে অলৌকিক কাহিনি
Pancheswar Temple of Panchetgarh Rajbari

The Truth of Bengal: এই রাজ্যে বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে আছে প্রচুর শিবমন্দির। সেই সব মন্দিরগুলির সঙ্গে জড়িয়ে আছে নানা মিথ। তেমনই একটি মন্দির হল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর ২ নম্বর ব্লকের পঁচেটেগড় রাজবাড়ির পঞ্চেশ্বর শিব মন্দির। মাটির ঢিপির ওপর গরুর বাঁট থেকে ঝরে পড়ত দুধ। সেই ঢিপি খনন করতেই উঠে আসে শিবলিঙ্গ। ৫০০ বছরের প্রাচীন পূর্ব মেদিনীপুরের পঁচেটেগড় রাজবাড়ির পঞ্চেশ্বর শিব মন্দির নিয়ে রয়েছে এমনই নানা ইতিহাস ও অলৌকিক কাহিনি। মহাশিবরাত্রি উপলক্ষে সেজে ওঠে জেলার বিখ্যাত এই শিব মন্দির।
পঁচেটগড় বাজবাড়ি প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ওড়িশার কালুমুরারি দাস মহাপাত্র। জগন্নাথ দেবের সামনে নিত্য সঙ্গীত পরিবেশন করতেন। সেই সঙ্গীতে মুগ্ধ হয়ে রাজা তাঁকে মন্দির পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। পরে মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গিরের নজরে পড়ে যান। তাঁকে বাংলা, বিহার ও তাম্রলিপ্ত বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব দেন মুঘল সম্রাট। কাজটি ভাল করে করতে পটাশপুর এলাকার খাঁড়কল্যাণপুরে বসবাস করতেন তিনি। সেই সময় রাজা কালুমুরারি মহাপাত্র রাজকর্মচারিদের থেকে জানতে পারেন ওই এলাকার কোনও এক গভীর জঙ্গলের মাটির ঢিপির ওপর প্রতিদিন কিছু গরু গিয়ে দাঁড়ায়। গরুগুলির বাট থেকে দুধ ঝরে পড়ে মাটির ঢিবির ওপর। অলৌকিক এই ঘটনা শুনে রাজা কালুমুরারি নির্দেশ দেন ওই জঙ্গল কেটে সাফ করতে। সেই মাটির ঢিবি খনন করলে বেরিয়ে আসে একটি শিবলিঙ্গ। আঘাতে শিবলিঙ্গটি যাতে ভেঙে না যায় তার জন্য শিবলিঙ্গের চারপাশে বেনারস থেকে এনে আরও চারটি শিবলিঙ্গ বসানো হয়। ওই শিবলিঙ্গগুলি দিয়ে কালামুরারি দাস মহাপাত্র তৈরি করেন পঞ্চেশ্বর মন্দির। এমনই ইতিহাস জড়িয়ে আছে পঁচেটেগড় রাজবাড়ির পঞ্চেশ্বর শিব মন্দিরের সঙ্গে।
শ্রী চৈতন্যদেব যখন পটাশপুর হয়ে পুরী গিয়েছিলেন তখন জমিদার বাড়ির সদস্যরা শৈব থেকে বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষা নেন। পরে জমিদার বাড়ির কুলদেবতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন কিশোররাই জিউ। যাকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর কার্তিক পূর্ণিমা থেকে শুরু হয় রাস উৎসব। এছাড়াও রাজবাড়িতে রয়েছে নারায়ণ জিউ মন্দির ও শীতলা মন্দির। পঁচেট গড় রাজবাড়ির এই শিব মন্দিরে শিব চর্তুরদশিতে জল ঢালতে আসেন এলাকার মহিলারা।