Uncategorizedভ্রমণ
Trending

ট্রেকিংয়ের আদর্শ স্থান মহারাষ্টের ‘মালশেজ ঘাট’

The ideal place for trekking is 'Malshej Ghat' in Maharashtra.

The Truth Of Bengal : আপনি যদি আকাশ-উচ্চ পাহাড়ের উপর ঝরে পড়া প্রবল বৃষ্টি এবং সাদা ফেনাযুক্ত জলপ্রপাত, সবুজ গালিচায় ঘন মেঘের ভিড়,সুড়ঙ্গের দিকে যাওয়া বাঁকানো রাস্তা অনুভব করতে চান তবে আপনাকে মহারাষ্ট্রের মালশেজ ঘাটে যেতে হবে। মহারাষ্ট্রের পশ্চিমঘাট পর্বতমালায় অবস্থিত এই ঘাটের উপরের অংশ পুনে জেলায় এবং ঘাটের প্রধান অংশ থানে জেলায়। অসংখ্য জলপ্রপাত,হ্রদ, পর্বতমালা ও সবুজায়নের মেলবন্ধন দেখতে হলে আপনাকে একবার ঘুরে আসতেই হবে মালসেজ ঘাট-এ। সুন্দর সুগঠিত বাঁধ,সুউচ্চ দুর্গ,এবং মন্ত্রমুগ্ধ করা জলপ্রপাতের নৈস্বর্গিক দৃশ্য আপনার চোখকে আরাম দেবে। শহরের কোলাহল থেকে দূরে মহারাষ্ট্রের পশ্চিম ঘাট পর্বতে অবস্থিত এই মালশেজ ঘাট প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য খুব প্রিয় হিল স্টেশন।

চারিদিকে জলপ্রপাত ,সুন্দর লেক ,অদ্ভুত সব গাছপালা এবং বন্যপ্রাণীতে ভরা এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য মনের কোন দাগ কেটে যায়।হাইকার এবং ট্রেকারদের জন্য জায়গাটি খুবই আদর্শ। তাছাড়া কাছেপিঠে দুর্গে ট্রেকিং করা , বিভিন্ন মন্দির দর্শন আপনার মন ভালো করে দেবে। স্থানীয় লোকগাথা হিসেবে কথিত আছে যে এই ঘাটে অবস্থিত অজোবাগদ দুর্গটি ভগবান শ্রী রামের কাছ থেকে আলাদা হয়ে সীতার আবাসস্থলে পরিণত হয়। দুর্গটির নামকরণ করা হয়েছে এই ঘটনা থেকেই। এই ঘাটের পাথরের দেওয়ালগুলিতে রাম-সীতার কাহিনি বর্ণিত আছে। এই দুর্গের কাছাকাছি অবস্থিত দারকোবা শিখরটি রক ক্লাইম্বিং ও ট্রেকিংয়ের জন্য আদর্শ স্থান। খ্রিষ্টীয় ১৬ শতকের নির্মিত এই ঘাটের মন্দিরগুলি স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন। এছাড়া মালসেজ ঘাট জলপ্রপাত,আজোবা হিলফোর্ট,পিম্পলগাঁও জোগা বাঁধ হল এখানকার প্রধান আকর্ষণ যা আপনাকে বাকরুদ্ধ করে দেবে।এই স্থানটির বিশেষত্ব হল ‘ রোহিত পাকশি ‘ যা ইংরেজিতে ফ্ল্যামিঙ্গো নামে পরিচিত। প্রতি বছর এই জলাধারে বিদেশী দর্শনার্থীরা আসেন। সাইবেরিয়া থেকে আগত এই গোলাপি রঙয়ের ফ্ল্যামিঙ্গো সবচেয়ে বেশি দেখা যায় জুলাই এবং সেপ্টেম্বরে। সেই সময় এখানে বিদেশী পর্যটকরা বেশি পরিমাণে আসেন।

এছাড়া মালশেজ ঘাটের পিছনে রয়েছে হরিশচন্দ্র দুর্গের সুউচ্চ পাহাড়ি শ্রেণী। সামনের উপত্যকার নীচে ঘন জঙ্গল থাকায় এখানে খরগোশ, ঘোরপড়, মঙ্গুস, চিতাবাঘের মতো হিংস্র প্রাণী বসবাস করে। আপনি অনেকভাবেই এই অফবিট স্থানে পৌঁছতে পারবেন। পুনে থেকে নারায়ণগাঁও হয়ে বা মুম্বাই থেকে কল্যাণ-মুরবাদ হয়ে মালশেজ ঘাটে যাওয়া যায়।আবার থানে জেলার শাহাপুর থেকে কিনওয়ালি সাতরাগাঁও হয়ে মালশেজ ঘাট যাওয়া যায়। এছাড়া ২২২ নং জাতীয় মহাসড়ক হল মহারাষ্ট্রের অন্যান্য অংশ থেকে আসা লোকদের জন্য প্রধান রুট এবং মারাঠওয়াড়া, বিদর্ভ থেকে লোকেরা এই পথ দিয়েও মালশেজ ঘাটে আসে। নিউ পুণে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মাত্র ৫৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই স্থানটি। তাই আকাশপথে আপনি এখানে যেতে পারেন। রেলপথেও আপনি এখানে আসতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে কল্যাণ স্টেশনে নেমে গাড়ি করে যেতে হবে এই মালসেজ ঘাট-এ।আপনার থাকা খাওয়ার জন্য কল্যাণ মালশেজ সড়কের ঘাটের পাদদেশে গড়ে উঠেছে বেশকিছু হোটেল ও রিসর্ট। অক্টোবর থেকে মার্চ মাস হল মালসেজ ঘাটে ভ্রমণ করার উপযুক্ত সময়। তাই, আর দেরি না করে কয়েকদিনের ছুটিতে মালশেজ ঘাটের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়ুন আর আনন্দ উপভোগ করুন।

Free Access

 

Related Articles