
Truth Of Bengal: রাজস্থানের জয়পুরের এক তরুণী ক্রিকেটার অক্সিতা মাহেশ্বরী। এই নামটা ইতিমধ্যে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট মহলে অতি পরিচিত একটি নাম। সম্প্রতি মহিলাদের আইপিএল-এ তাঁকে ২০ লক্ষ টাকা দিয়ে দলে নিয়েছে মুম্বই। যা দেখে অভিভূত এই তরুণী ক্রিকেটার। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সক্ষাৎকারে নিজের এই স্বপ্ন সফল হওয়ায় তিনি যে দারুণ খুশি সে কথাও ব্যক্ত করেছেন।
সেই সম্বন্ধে বলতে গিয়ে অক্সিতা জানান, ক্রিকেটার হিসেবে আমার এই উত্থানের পথটা মোটেই সহজ হয়নি। ছোটবেলা থেকেই আমার পছন্দের অন্যতম সেরা খেলা ছিল ক্রিকেট। কিন্তু আমরা জয়পুরের কাছে যে গ্রামে থাকতাম, সেখানে এখনও ক্রিকেটকে পুরষদের খেলা হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। তাই নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়তে হয়েছিল আমাকে। কিন্তু কঠিন এই সময়ে আমার পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন আমার পরিবারের সদস্যরা।
Akshita on joining the 𝗙𝗔𝕄𝕀𝗟𝗬 💙#OneFamily #AaliRe #TATAWPL #MumbaiIndians pic.twitter.com/kgzcM7olSd
— Mumbai Indians (@mipaltan) December 17, 2024
অনুর্ধ্ব-২৩ মহিলাদের একদিনের ক্রিকেটে দু-দুবার হ্যাটট্রিক করা এই তরুণী ক্রিকেটার আরও বলেন, পুরোনো বাড়ি ছেড়ে আমার বাবা যখন অন্য একটি নতুন বাড়ি কিনেছিলেন, তখন সেই বাড়ির বারান্দায় ভাইদের সঙ্গেই আমি ক্রিকেট খেলতাম সময় পেলেই। আর সময় পেলেই আমি ছুটে যেতাম বাড়ির বাইরে। সেখানে গিয়ে খেলতাম ছেলেদের সঙ্গে। যা একেবারেই ভালভাবে মেনে নেননি সেখানকার স্থানীয়রা। এবং ছেলেদের সঙ্গে আমার ক্রিকেট খেলা নিয়ে বার বার প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল আমার বাবাকে। কিন্তু শত প্রতিবন্ধকতা আশা সত্ত্বেও আমার বাবা এবং আমি লক্ষ্যে অবিচল ছিলাম।
তবে শুধু বাবা একাই নন, আমার মা এবং ভাই-ও সেই সময় আমার পাশে থেকে আমাকে সমর্থন করেছিলেন। তাঁরা বলেছিলেন, খেলো, যে কোনও খেলাই খেলা যায়, তাতে পুরুষ-মহিলা বিভাজন ঠিক নয়। তোমার যে খেলা ভাল লাগে সেটা তুমি খেলার জন্য। অক্সিতা বলেন, এরপরই আমি ক্রিকেট শেখার জন্য, বিভিন্ন অ্যাকাডেমির খোঁজ নিতে শুরু করলাম। এবং সন্ধান পেলাম নীরজ মোদি অ্যাকাডেমির।
কিন্তু আমার কপাল খারাপ। সেই অ্যাকাডেমিতে ভর্তির জন্য গিয়েও আমার ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন সফল হয়নি। কারণ, সেখানে কেবলমাত্র পুরুষদেরই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এরপর আবার আমি অন্য অ্যাকাডেমির সন্ধান করতে থাকি। এবং সন্ধানও পাই কেএল সাইনি ক্রিকেট অ্যাকাডেমির। তারপর সেই অ্যাকাডেমিতে গিয়ে দেখি একজন মহিলাকে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। এই দেখে আমি আমার বাবাকে ফোন করে পুরো বিষয়টি জানাই। এবং কেএল সাইনি ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতেই ক্রিকেটের পাঠ নেওয়া শুরু করি।
অক্সিতা জানান, আগামী ডব্লুপিএল-এ খেলার জন্য আমাকে লড়াই করতে হয়েছিল ১২২ জন খেলোয়াড়েরর সঙ্গে। সেই লড়াই যে যথেষ্ট কঠিন ছিল বলেই জানান অক্সিতা। তবে শেষ মুহূর্তে বাজিমাত করে মুম্বই তাঁকে দলে নেওয়া দারুণ খুশি তিনি। অক্সিতা বলেন, যখন আমাকে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স কর্তৃপক্ষ দলে নিলেন, তখন আমার নিলামের দিকে কোনও নজর ছিল না। আমি আমার সঙ্গে ব্যবসার কাজে ব্যস্ত ছিলাম।
এখন আমার একটাই কাজ ডব্লুপিএল-এ আমার দল মুম্বইয়ের হয়ে ভাল পারফরম্যান্স করা। কর্তৃপক্ষ যে কারণে আমাকে দলে নিয়েছেন তাঁদের প্রত্যাশা পূরণ করা। তাঁর তরফ থেকে চেষ্টার কোনও ত্রুটি থাকবে না বলেো জানান অক্সিতা। দেখা যাক যেভাবে কঠিন লড়াই করে আজ অক্সিতা এত দূর উঠে এসেছেন সেই কঠিন স্বপ্ন এবার তাঁর সফল হয় কি না, তা সময়ই বলবে।