অফবিট

ভারতের অধিকাংশ মানুষ জানেন না, শ্রীরামভক্ত হনুমানের বিবাহ কোথায় হয়েছিল, জানুন পুরো ঘটনা

Hanuman was married to whom

The Truth Bengal: রামায়ণ মহাকাব্য অনেকে পড়েছেন, অনেকে পড়েননি, কিন্তু রামায়ণ মহাকাব্যের নাম শোনেন এমন লোকের সংখ্যা এ ভূ বিশ্বে অনেক কমই রয়েছে। আর রামায়ণ বললেই যতগুলি চরিত্র সবার আগে চোখের সামনে ভেসে ওঠে, তার মধ্যে অন্যতম অঞ্জনিপুত্র হনুমান। তাঁর একাধিক নাম রয়েছে, তার মধ্যে একটি হল মারুতি। তিনি যেহেতু পবন বা মরুতের বরপুত্র তাই তাঁকে মারুতিও বলা হয়।ভারতে রামায়ণের যতগুলি আঞ্চলিক সংস্করণ রয়েছে, প্রায় সবকটিতেই হনুমানকে অকৃতদার দেখানো হয়েছে। অর্থাৎ তিনি সদা সর্বদা ব্রহ্মচারী ছিলেন, এখনও আছেন। বলা ভালো তিনি কোনও বিবাহ সম্পর্কে কারও সঙ্গে সংযুক্ত হননি। তাহলে প্রশ্ন, তিনি বিবাহ করলেন কবে, আর সেই তথ্য সূত্র কোথায় লিপিবদ্ধ রয়েছে ?হনুমানের বিয়ের ঘটনা লুকিয়ে রয়েছে একটি ছোট্ট পৌরাণিক কাহিনীতে। ঘটনাটি ঘটেছিল, রামসেতু তৈরির সময়। ভারত থেকে লঙ্কায় পৌঁছতে মূল সমস্যায় পড়তে হয়েছিল ভারত মহাসাগরে। রামের বানরসেনা অসম লড়াই শুরু করে রামসেতু নির্মাণে স্বার্থে। অবশেষে তৈরি হয় রামসেতু। কিন্তু এই সেতু অত্যন্ত সহজে তৈরি হয়নি। এর জন্য যেন কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছিল, তেমনই এসেছিল বহু প্রতিবন্ধকতা।

আর এখানেই আসে এক কাহিনি। রামসেতু তৈরির সময় এক সমস্যা বারবার তৈরি হচ্ছিল। কেউ বা কারা যেন তৈরি হওয়া রামসেতু বারবার ভেঙে দিচ্ছিল। ঘটনার পরেই চিন্তিত হয়ে পড়ে হনুমান।  সেতু নির্মাণের পর একদিন ক্লান্ত বানর সেনা যখন বিশ্রাম নিচ্ছিল, সেই সময় পুরো সেতু পাহারা দিতে শুরু করে হনুমান। অনভিপ্রেত সমুদ্রের জলতরঙ্গে কোনও এক অশনি সঙ্কেত বুঝতে পারলেন তিনি। এক লাফে জলের তলায় ডুব দিয়ে পাকড়াও করলেন এর মৎস্যকন্যাকে। অপরূপা সুন্দরী, তেমন ক্ষিপ্র, হনুমানকে দেখে বিদ্যুতের বেগে পালানোর চেষ্টা করেন ওই মৎস্যকন্যা।কিন্তু হনুমানের ক্ষিপ্র গতির কাছে হার মানতে বাধ্য হন তিনি। হনুমান তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে জলদেবী, ভগবান শ্রীরামের নামে সেতু নির্মাণ হচ্ছে, মাতা সীতাকে উদ্ধারের জন্য। কেন বাধা দিচ্ছেন বারবার?উত্তরে, মৎস্যকন্যা তাঁকে বলেন, আমিই ভাঙছিলাম, আমার নাম সুবর্ণামৎস্য। আগে আমার কাছে হার স্বীকার করো।

নয়তো, এই সেতু ফের ভেঙে দেবো। এটা আমাদের এলাকা, আপনারা লঙ্কায় যেতেই পারবেন না।হনুমান উত্তর দেযন, আমি ভগবান শ্রীরাম ছাড়া কারও কাছে হার স্বীকার করি না। তাই এ ছাড়া আর কী শর্ত রয়েছে? আমি মানতে প্রস্তুত, কারণ আমি স্ত্রীলোকের সঙ্গে যুদ্ধ করি না।সুবর্ণমৎস্য বললেন, এর একমাত্র উপায় আছে মারুতিনন্দন, তুমি আমাকে বিয়ে করো। আমি তোমার প্রেমপ্রার্থী। হনুমান প্রতিশ্রুতি মতো তাঁকে বিবাহ করলেন। এবং বললেন, এই সেতু নির্মাণে কোনও শত্রু শক্তি যেন আসতে না পারে, সে ব্যাপারে আমি তোমার কাছে সাহায্যপ্রার্থী। সুবর্ণমৎস্যা প্রতিশ্রুতি দিলেন, তোমরা নির্ভয়ে সেতু নির্মাণ করো। তবে সেতুর কাঠামো যেন, তোমার ভগবানের ধনুকের মতো যেন হয়। তারপরেই হনুমানের নির্দেশে রামসেতু তৈরি করা হয়, ভগবান শ্রীরামের ধনুকের নক্সার আদলে। সেই থেকে রামসেতুর যেখান থেকে শুরু হয়েছিল, তার নাম হয় ধনুষকোটি। অর্থাত ধনুকের শেষ অংশ।