অঝোর ধারায় ঝরছে জলরাশি, সমুদ্রের তলাতেও আছে জলপ্রপাত, কোথায় আছে Underwater Waterfall জানেন?
Know where is the Underwater Waterfall

The Truth of bengal,Mou Basu: ভিক্টোরিয়া ফলস, নায়াগ্রা ফলস, বয়োমো ফলস, ইগুয়াজো ফলসের নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে অঝোর ধারায় ঝরতে থাকা অফুরন্ত জলরাশির ছবি। ভাবছেন এগুলো বিশ্বের বৃহত্তম জলপ্রপাত? আজ্ঞে না। বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো জলপ্রপাত কিন্তু স্থলভাগে নয় রয়েছে সমুদ্রের অতলে। ঠিকই শুনেছেন। বিজ্ঞানীরা বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো জলপ্রপাতের খোঁজ পেয়েছেন সমুদ্রের তলায়। সমুদ্রের তলায় থাকা জলপ্রপাতকে বলা হয় Underwater Waterfall। গ্রিনল্যান্ডের একেবারে দক্ষিণ প্রান্তে রয়েছে ডেনমার্ক স্ট্রেট ক্যাটারাক্ট। এটি বিশ্বের বৃহত্তম Underwater Waterfall। দৈর্ঘ্য ও বহরের বিচারে বৃহত্তম জলপ্রপাত বলা হয় ভিক্টোরিয়া ফলসকে। জাম্বিয়া ও জিম্বাবোয়ার মধ্যে রয়েছে ভিক্টোরিয়া ফলস। ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনার মধ্যে রয়েছে ইগুয়াজু ফলস। ভেনেজুয়েলায় রয়েছে অ্যাঞ্জেল ফলস। কানাডা আর আমেরিকার মধ্যে রয়েছে নায়াগ্রা ফলস। বিজ্ঞানীরা যে বৃহত্তম জলপ্রপাত বা Underwater Waterfall এর খোঁজ পেয়েছেন সমুদ্রের তলায় সেই ডেনমার্ক স্ট্রেট ক্যাটারাক্ট লম্বায় সাড়ে ৩ হাজার মিটার। অ্যাঞ্জেল ফলসের ৩ গুন বড়ো। নায়াগ্রা ফলসে প্রতি সেকেন্ডে ২৪০৭ কিউবিক মিটার জলরাশি ঝরছে। কিন্তু ডেনমার্ক স্ট্রেট ক্যাটারাক্টে প্রতি সেকেন্ডে আনুমানিক ৫ মিলিয়ন কিউবিক মিটার জলরাশি ঝরছে। ডেনমার্ক স্ট্রেটে দক্ষিণমুখী নরডিক সি’র ঠান্ডা জল আর ইরমিঙ্গার সি’র গরম জল মিশে তৈরি হয়।
আইসল্যান্ড আর গ্রিনল্যান্ডের মধ্যে রয়েছে ডেনমার্ক স্ট্রেট ক্যাটারাক্ট। এর পাশাপাশি মরিশাস দ্বীপে রয়েছে মরিশাস ইলিউশন নামে আরও একটি Underwater Waterfall। মরিশাসে স্থলভাগেই রয়েছে ১০০টির বেশি জলপ্রপাত।
কীভাবে তৈরি হয় সমুদ্রের তলায় এই জলপ্রপাত বা Underwater Waterfall?
সমুদ্রের তলায় জলস্রোত ও তাপমাত্রার হেরফেরের জেরে তৈরি হয় Underwater Waterfall। যেমন, ভূমধ্য সাগরের জল অতলান্তিক মহাসাগরের জলের তুলনায় বেশি গভীর। তাই ভূমধ্যসাগরের জল অতলান্তিক মহাসাগরের নীচে চলে যায়। Underwater Waterfall। জীববৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে অপরিসীম গুরুত্ব রয়েছে Underwater Waterfall এর। সমুদ্রের তলায় থাকা জলপ্রপাত সমুদ্রের নোনতা ভাব ও আবহাওয়া ঠিকঠাক রাখতে সাহায্য করে। সমুদ্রের তলার উদ্ভিদ ও প্রাণীর বেঁচে থাকতে সাহায্য করে। ইউনেস্কোও natural sites for needed and natural value হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে Underwater Waterfall কে। ১৮৭০ সালের আগে পর্যন্ত এই Underwater Waterfall বা সমুদ্রের তলায় থাকা জলপ্রপাতের কথা কেউ জানতেন না। ছয়ের দশকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতির সাহায্যে Underwater Waterfall এর খোঁজ মেলে। বিজ্ঞানীরা শুধু অতলান্তিক মহাসাগরেই এমন ৬টি ক্যাটারাক্টের খোঁজ পেয়েছেন। ১৯৮৯ সালে Woods Hole Oceanographic physical oceanography Department এর সিনিয়র সায়েন্টিস্ট জন এ হোয়াইটহেড Underwater Waterfall এর ওপর নিবন্ধ লেখেন।