অফবিট

নারী ক্ষমতায়ণের প্রতীক যে টেম্পল

Divorce Temple

The Truth of Bengal, Mou Basu: স্বামী বা স্ত্রীর মঙ্গল কামনায় মন্দিরে পুজো দেওয়া খুব নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। বিয়ের দিন বা বিবাহবার্ষিকীর দিন দীর্ঘ বৈবাহিক জীবনের মঙ্গল কামনাতেও অনেকে পুজো দেন মন্দিরে। কিন্তু জানেন কি আমাদের এই অজানা অচেনা বিপুলা পৃথিবীতে আছে ডিভোর্স মন্দির। না না, এটা ভাববেন না সেই মন্দিরে গিয়ে আবার কেউ ডিভোর্স বা বিবাহ বিচ্ছেদের কামনায় পুজো দেন। জাপানে আছে এমন অভিনব ‘ডিভোর্স টেম্পল’।

জাপানের কানাগাওয়া প্রদেশের কামাকুরা শহরে রয়েছে ‘মাৎসুগাওকা টোকেইজি’ মন্দির বা ডিভোর্স টেম্পল। এই মন্দিরের বয়স পেরিয়েছে ৬০০ বছর। এই মন্দিরের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে হৃদয়বিদারক ঘটনা। ১২৮৫ সালে বৌদ্ধ সন্ন্যাসিনী কাকুসান শিদো-নি এই মাৎসুগাওকা টোকেইজি মন্দির নির্মাণ করেন। এই বৌদ্ধ মন্দির আজ জাপানের নারী ক্ষমতায়ন ও স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। ৬০০ বছর আগে এই বৌদ্ধ মন্দির যখন তৈরি হয় তখন জাপানের সামাজিক অবস্থা অনেক রক্ষণশীল ছিল। সে সময় জাপানি মহিলাদের আইনি কোনো অধিকার ছিল না।

সামাজিক পরিসরও অনেক রক্ষণশীল ছিল। জাপানে মহিলাদের জন্য ডিভোর্স বা বিবাহ বিচ্ছেদের কোনো আইনি অধিকার ছিল না। বৈবাহিক জীবনে অসুখী, স্বামীদের হাতে শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতিত মহিলারা এসে আশ্রয় নিতেন ওই মন্দিরে। সেই থেকে জাপানে ওই মন্দিরের পরিচয় হয় Kakekomi-dera বা ডিভোর্স টেম্পল হিসাবে। প্রাচীন জাপানে এই মন্দির নারীদের কাছে নিরাপদ আশ্রয় ও ভরসাস্থল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। বৈবাহিক নির্যাতনের হাত থেকে জাপানি মহিলাদের মুক্তির পথ দেখায় এই মন্দির। স্বনির্ভর ও সম্মানের সঙ্গে বেঁচে থাকার পথ দেখায় এই ডিভোর্স টেম্পল। “tsuifuku-ji” বা অফিশিয়াল ডিভোর্স শংসাপত্র বিতরণ করা হত এই মন্দির থেকে। আইনত এই শংসাপত্র বিবাহ বিচ্ছেদের অধিকার দিত প্রাচীন সময়ের জাপানি মহিলাদের।

Related Articles