নিঃসন্তান দম্পতিরা বরাবরই সামাজিক নিগ্রহের স্বীকার! বন্ধ্যাত্বের আসল কারণ জানেন?
Know the real cause of infertility

The Truth of Bengal: বর্তমান সময়ে বন্ধ্যাত্ব বিষয়টিকে নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করা ভীষণ প্রয়োজনের। এখনও পর্যন্ত এই বন্ধ্যাত্ব বিষয়টি অদ্ভুত ভাবে মানুষজনের কাছে কু-প্রথার মতো থেকে গেছে। প্রকাশ্যে খুব কম মানুষই রয়েছেন যারা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করেন। যারা এই রোগের স্বীকার, তাদের নানান ভাবে সামাজিক ভাবে হেনস্থার স্বীকার হতে হয় প্রায়শই। বাবা না হতে পারার চিন্তা, কিংবা মা ডাক না শুনতে পারার অভিযোগ, কেবলমাত্র যেন একজন নারীকেই শুনতে হয় সবসময়। কেন? যেখানে বন্ধ্যাত্বের কারণ একমাত্র মহিলা নন।
তবে বন্ধ্যাত্ব একটি জটিল চিকিৎসা পদ্ধতি যা গোটা বিশ্ব জুড়ে পুরুষ এবং মহিলাদের প্রভাবিত করছে। ভারতের মতো বৃহৎ জনসংখ্যার দেশে বন্ধ্যাত্বের জন্য এখনও সরাসরি ভাবে এখনও মহিলাকেই দায়ী করা হয়ে থাকে। কিন্তু যেখানে বন্ধ্যাত্ব পুরুষ ও মহিলা দুজনেরই হতে পারে।
বিশেষ এক সমীক্ষায় পাওয়ার তথ্য অনুসারে, ভারতে প্রায় ২৮ মিলিয়ন দম্পতি রয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফ থেকে বলা হয়েছিল যে, সন্তান ধারণের চেষ্টা করার পর টানা এক বছর সময়কাল যদি কেউ সফল না হন তাহলে তাকে ইনফার্টাইল বা সন্তান ধারণে অক্ষম হিসেবে গণ্য করা হবে। যদিও বিশেষজ্ঞরা অনেক কারণকেই ব্যাখ্যা করেছেন ভারতে প্রজনন হার হ্রাসের কারণ হিসেবে, দেশের দম্পতিদের মধ্যে বন্ধ্যাত্বের বিষয়টিকে সেখানে গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি।
চিফ ক্লিনিক্যাল মেন্টর, ডাঃ সোনিয়া মালিক এক বিশেষ প্রতিবেদনে বলেছেন, “বিশ্বব্যাপী প্রতি ৬ জনের মধ্যে ১ জন দম্পতি বন্ধ্যাত্ব অনুভব করেন, জীবনযাত্রার পছন্দ এবং জৈবিক কারণ সহ বিভিন্ন কারণের কারণে। ভারতীয় মহিলারা, উদাহরণস্বরূপ, তাদের ককেশীয় প্রতিপক্ষের তুলনায় ডিম্বাশয়ের কার্যকারিতা ত্বরান্বিতভাবে হ্রাস পায়, যার প্রভাব উর্বরতা স্বাস্থ্যের জন্য রয়েছে”।
ডাঃ জানি এই বিষয়টিকে পয়েন্ট করেছেন এবং বলেন যে ফাইব্রয়েড, ডিম্বাশয়ের সিস্ট এবং এন্ডোমেট্রিওসিসের মতো অবস্থার বৃদ্ধিও মহিলাদের মধ্যে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা সৃষ্টি করেছে।
অন্যদিকে, “পুরুষরা হাইপোথ্যালামাস, পিটুইটারি সংক্রান্ত অসুস্থতা বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে” – বলছেন ডাঃ মালিক।
তাছাড়াও পুরুষদের আরও বেশ কিছু কারণকে বন্ধ্যাত্বের জন্য দায়ী করা হয়ে থাকে, যেমন-
* শুক্রাণুর পরিমাণ যথেষ্ট হারে না থাকা।
* তাছাড়াও আরও বেশ কিছু কারণ রয়েছে তাদের মধ্যেই একটা কারণ এজোস্পার্মিয়া, অর্থাৎ বীর্যের মধ্যে শুক্রাণু নেই। কিংবা নালির কোথাও বাধা সৃষ্টি হয়েছে তাই শুক্রাণু মিলতে পারছে না। শুক্রাণু তৈরিই হয়নি।
*কিংবা প্রজনন অঙ্গে আঘাত।
*ডায়াবেটিশকেও বন্ধ্যাত্বের কারণ হয়েই থাকে।
এবং মহিলাদের যেকারণ গুলির জন্য বন্ধ্যাত্বের শিকার হয়ে থাকেন সেগুলি হল,
* জরায়ুর কিছু সমস্যা থাকে মহিলাদের যা জন্মগত হতে পারে আবার অসুখের কারণে হতে পারে।
* তাছাড়াও যথাসময় ওভাম না আসা।
*হরমোনের কারণেও বন্ধ্যাত্ব হতে পারে।
*যৌনবাহিত রোগ গুলির কারণে মেয়েদের অনেক সময় প্রজনন অঙ্গগুলোর ক্ষতি হয়ে থাকে। সেকারণেও বন্ধ্যাত্ব হতে পারে।
সুতরাং বন্ধ্যাত্ব যে কেবল মহিলাদের শারীরিক কারণেই হয়ে থাকে এটা একেবারেই মিথ্যা। সেই বিষয়গুলিকে ভারতের মতো দেশে আলোচনা করাটা অত্যন্ত প্রয়োজনের। একজন দম্পতির বিয়ের পর সন্তান না হওয়া জেরে মানসিক অবসাদেও ভুগে থাকেন একটা গোটা পরিবার। তবে সময় নষ্ট না করেই চিকিৎসকদের কাছে থেকে পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।