কলকাতা

ট্যাংরা কান্ডে ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য! সিসিটিভি ফুটেজে প্রকাশ্যে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র

Mystery deepens in Tangra case! CCTV footage reveals important clues

Truth Of Bengal: এক ভয়াবহ ঘটনায় ট্যাংরার একটি বাড়ি থেকে একই পরিবারের তিনজনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন দুই গৃহবধূ ও এক কিশোরী। একইসঙ্গে, পরিবারের বাকি তিনজনকে বাইপাসের ধারে দুর্ঘটনাগ্রস্ত একটি গাড়ি থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আহত প্রণয় দে, প্রসূন দে ও তাদের ১৫ বছর বয়সি ছেলেকে বাইপাসের ধারে, কবি সুকান্ত মেট্রো স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। তাদের গাড়িটি রাস্তার পিলারে ধাক্কা মারে, যার ফলে তিনজনই গুরুতর আহত হন। বর্তমানে তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এই ঘটনায় পুলিশের তদন্তে একাধিক মিসিং লিঙ্ক উঠে এসেছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র সিসিটিভি ফুটেজ।

  • রাত ১২টা ৫১ মিনিটে বাড়ির গ্যারাজ থেকে গাড়িটি বের করা হয়।
  • গাড়িতে দুজনকে উঠতে দেখা যায়—একজন সামনে, অপরজন পিছনে।
  • পিছনের ব্যক্তির হাতে বোতলের মতো কিছু ছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
  • রাত ১২টা ৫৪ মিনিটে গাড়িটি রওনা দেয়।

তবে এরপর ৩টা ৩১ মিনিটে দুর্ঘটনা ঘটে। প্রশ্ন উঠছে, ট্যাংরা থেকে অভিষিক্তা মোড় (প্রায় ১৩ কিমি) যেতে এত সময় লাগল কেন? মাঝের সময়টা তারা কোথায় ছিলেন?

এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে পুলিশ রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে যে আহতদের বয়ান অনুযায়ী, তারা দীর্ঘদিন ধরে আত্মহত্যার চেষ্টা করছিলেন। এমনকি, ছাদ থেকে লাফ দেওয়ার কথাও ভেবেছিলেন, কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। পরিবারের সদস্যরা চরম আর্থিক সংকটে ছিলেন, যার জেরে তারা এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে আরও কিছু রহস্যজনক বিষয় সামনে এসেছে—

  • গাড়ির পেছনের সিট থেকে একটি ব্রেসলেট পাওয়া গেছে।
  • বড় ভাইয়ের নাবালক সন্তানের হাতে কাটার দাগ রয়েছে, যা সন্দেহজনক।
  • সেফটি বেল্ট পরা নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠছে।

প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকেই ওই বাড়িতে অন্ধকার ছিল। সাধারণত, প্রতিদিন সন্ধ্যায় সেখানে আরতি হত, কিন্তু সেদিন তা হয়নি। কয়েকজন দরজায় বেল বাজালেও কেউ দরজা খোলেনি, বাড়ির ভেতরে কোনো আলোও দেখা যায়নি।

পরে, পুলিশ তিনটি আলাদা ঘরে তিনজনের দেহ উদ্ধার করে। কিশোরীর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই, যা পুলিশকে ভাবাচ্ছে—এটি খুন, নাকি আত্মহত্যা?

পুলিশ ইতিমধ্যেই প্রমাণ সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে। আত্মহত্যা নাকি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড—তা জানতে পরিবারের আর্থিক লেনদেন ও ব্যক্তিগত সম্পর্ক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে, গাড়ির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে এবং আহতদের জবানবন্দি নিয়েই তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।

Related Articles