বোন গ্রাফটিংয়ের পর্দা ফাঁসঃ শ্মশান থেকে ৪হাজার মৃতদেহ চুরি,বেআইনি কারবার ঘিরে তোলপাড় চিনে
4000 dead bodies stolen from the crematorium, stir around illegal business

The Truth of Bengal: অপরাধের ধরণ বদলাচ্ছে দিন দিন।মুনাফার লোভে মানুষের মৃতদেহও ছাড়ছে না দুষ্কৃতী চক্র।নিম্নমাণের ও নৃশংস সেই কারবার এবার প্রকাশ্যে এল চিনে।সেখানে এক চক্র ৪হাজারের ওপর মৃতদেহ শ্মশান বা শেষকৃত্যের জায়গা থেকে চুরি করার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠল।এই বড়সড় চক্রের মূল লক্ষ্যই ছিল,বোন গ্রাফটিংয়ের জন্য দেহ লোপাট করা,তারপর মেডিক্যাল কলেজের মাধ্যমে স্বার্থ সিদ্ধি করা। উত্তর চিনের এই ঘটনা দশকের পুরনো ষড়যন্ত্র বলেই জানা যাচ্ছে।তদন্তে জানা যাচ্ছে, রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত বায়ো মেটিরিয়াল কোম্পানির কাছে দেহ বিক্রির ভয়ঙ্কর অভিযোগও উঠেছে। দক্ষিণ চিনের মোর্নিং পোস্টের তরফে আরও জানা গেছে,এই ধরণের মৃতদেহ চুরির ঘটনার পিছনে বড়সড় চক্র জড়িত। গত ৮অগাস্ট এই ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় সামনে আসতেই কমিউনিস্ট শাসিত দেশে বড় শোরগোল পড়ে।
চিনের শানঝি প্রদেশের রাজধানী তাইয়ুয়ান কর্তৃপক্ষের তরফে জানা গেছে,বোন ট্রান্সপ্লান্টের জন্যই শ্মশান থেকে দেহ লোপাটের চেষ্টা হয়। আবার সেই হাড় কাজে লাগানো হত সার্জারি বা কাঁটাছেড়ার সময়।বেজিং ব্রেভ লইয়ার কোম্পানির প্রেসিডেন্ট ই শেনঘুয়া এই বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান।ইতিমধ্যে সিচুয়ান হেনগপু প্রযুক্তি কোম্পানি এবং শানজি ওসটিওরাড বায়ো মেটিরিয়াল কোম্পানির মালিক ও অপারের্টসদের বেআইনিভাবে ৪হাজারের ওপর মৃতদেহ কেনাবেচার জন্য মামলা রুজু হয়েছে। যারজন্য অভিযুক্ত সংস্থা ২০১৫ থেকে ২০২৩ এর মাঝে ৫৩মিলিয়ন ডলার উপার্জন করেছে।
তাইয়ুয়ানের ইনস্টিউটিট ফর রাডিয়েশন প্রটোকশনের একটি শাখা হল শানঝি ওসটেরাড নামে সংস্থাটি।এটি আবার চিনের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত ন্যাশানাল নিউক্লিয়ার কর্পোরেশনের অংশীদার সংস্থা। এই সংস্থা প্রায়শই হাড়ের বিকল্প এবং হাড়ের কলম তৈরির কাজে যুক্ত। জানা গেছে,এক দশকে তাদের আয়ের বহর বেড়েছে।তাঁদের আয়ের পরিমাণ এক দশকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। এমনকি সিচুয়ান হেনংপু নামে সংস্থা শেয়ারও এই কারবারে রয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে।
শানঝি প্রদেশের তাইয়ুয়ান পিপলস প্রোকিউরেটোরেট জানিয়েছেন,এই দেহ পাচারের কারবার চলছে চিনের অন্ততঃ ৭টি প্রদেশে। যেসব লোকালয়ে এই বেআইনি কারবার হয় সেখানে দেহ হয় হস্তান্তর করা হয়,না হলে জমা করা হয় বা হাড়ের কলম বা বোন গ্রাফটিংয়ের জন্য লেনদেন চলে। তাইয়ুয়ান মিউসিপ্যাল প্রোসিকিউটোরেট বলেছেন,এর দেহ চুরি ও বেচাকেনার কারবারের পিছনে মোটা টাকা লেনদেন হয় কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সু পদবির এক সন্দেহভাজন জেনারেল ম্যানেজার স্বীকার করেছেন যে তিনি অন্ততঃ ৪হাজার দেহ চুরি করেছেন ইউনান,চংক্যুইং,গুইঝাউয়ের শ্মশান বা সত্কারের জায়গা থেকে। তারপর শুইফু শহরের শ্মশান থেকে হাতিয়ে নেওয়া সেইসব দেহ কিছু কর্মী বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গ্রাফটিংয়ের জন্য প্রস্তুত করত। সন্দেহ করা হচ্ছে অন্ততঃ ৭৫জন ব্যক্তি এই দেহ চুরি ও লেনদেনের বেআইনি কাজে যুক্ত।যার মধ্যে চিকিত্সক,শ্মশানের প্রশাসক,শেয়ার হোল্ডাররাও। এই অবস্থায় এক প্রশাসনের কর্তা জানিয়েছেন,এখনও বিস্তারিত তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে।