
The Truth of Bengal,Mou Basu: বাঙালির অতি প্রিয় খাবার হল চিংড়ি মাছের মালাইকারি। চিংড়ি মাছ ছাড়া এই সুস্বাদু পদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ হল নারকেলের দুধ। সাধারণত নারকেলের দুধ বা কোকোনাট মিল্ক আমরা বিভিন্ন রান্নায় গ্রেভি তৈরিতেই ব্যবহার করি। কিন্তু আদতে এমনিই নারকেলের দুধ অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর খাবার। হার্টের বন্ধু বলা হয় নারকেলের দুধকে।নারকেলে কার্বোহাইড্রেট খুব কম থাকে। প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট থাকে। নারকেল গাছকে বলা হয় Coconut Palm (Cocos nucifera)। এই গাছের ফল হল নারকেল। নারকেল বা ডাবে পাওয়া যায় প্রোটিন, ম্যাঙ্গানিজ, তামা, লোহার মতো খনিজ পদার্থ, কম পরিমাণে বি ভিটামিন। ম্যাঙ্গানিজ হাড় ভালো রাখে, কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, কোলেস্টেরলের মেটাবলিজম রেট ঠিক রাখে। তামা আর লোহা রক্তে লোহিত কণিকা তৈরি করতে সাহায্য করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সেলেনিয়াম কোষের গঠনের জন্য দরকারি।
মাত্র ২ গ্রাম টাটকা নারকেল কোড়ায় ৩৫ ক্যালরি শক্তি, ১ গ্রামের কম প্রোটিন, ৩ গ্রাম ফ্যাট, ২ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১ গ্রাম ফাইবার, ১ গ্রাম শর্করা মেলে।নারকেলের দুধে মেলে মিডিয়াম চেন ট্রাইগ্লিসারাইড (MCT)। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে এমসিটি এনার্জি স্টিমিউলেট করে থার্মোজেনেসিস নামের একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। চর্বি গলিয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে ভুঁড়ি কমায়। ২০১৮ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে এমসিটি ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বাড়ায়। এই প্রক্রিয়া মেদ ঝরাতে সাহায্য করে। ইনসুলিন রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে সব খাবারে প্রচুর পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট আর হাই কোলেস্টেরল থাকে তা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে। কিন্তু নারকেলের দুধ ব্যাড কোলেস্টেরল বা লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন (LDL)- এর মাত্রা বাড়ায় না।
বাড়ায় গুড কোলেস্টেরল বা হাই ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন (HDL)-এর মাত্রা। এইচডিএল কোলেস্টেরল হার্ট ভালো রাখে।নারকেলকে বলা হয় থাইরয়েডের সমস্যার যম। বিশেষজ্ঞদের মতে নারকেলের দুধ খেলে জব্দ হবে থাইরয়েডের সমস্যা।গলার কাছে থাকা প্রজাপতির আকৃতির থাইরয়েড গ্ল্যান্ড থেকে বেরোয় T3 আর T4 হরমোন। মেটাবলিজম থেকে শিশুদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি, বৌদ্ধিক বিকাশ, মহিলাদের ঋতুস্রাব, গর্ভাবস্থা সবই নিয়ন্ত্রণ করে এই ২টি হরমোন। রক্তে এই ২ হরমোনের নিঃসারণে তারতম্যের কারণেই নানান রকম শারীরিক সমস্যা হয়। রক্তে থাইরয়েডের মাত্রা বেড়ে গেলে হয় হাইপারথাইরয়েডিজম আর কমে গেলে হয় হাইপোথাইরয়েডিজম। মূলত, অপুষ্টি আর দুশ্চিন্তাই থাইরয়েডের সমস্যার জন্য দায়ী। বাড়িতে নারকেলের দুধ তৈরি করে সকালে অথবা রাতে শুতে যাওয়ার আগে খাওয়া যেতে পারে।
Free Access