স্বাস্থ্য

মানসিক অবসাদ দূর করে, অ্যাজমার ঝুঁকি কমায় আতা, জানুন সীতাফলের গুণ

Health Benefits

The Truth of Bengal,Mou Basu: ফাইবার, খনিজ পদার্থ আর ভিটামিনে সমৃদ্ধ আতাকে বলা হয় পুষ্টির ‘পাওয়ার হাউজ’। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি পাওয়া যায় আতায়। শরিফা, চেরিমোয়া, কাস্টার্ড আপেল, সুগার আপেল, অনেক নামে ডাকা হয় আতাকে। আতার আরেক নাম সীতাফল। আতা ফল শরীরে ডোপামিন হরমোনের নিঃসারণ বাড়িয়ে তোলে ফলে এই ফল খেলে মানসিক অবসাদ কেটে যায়। প্রাচীন সময় মেক্সিকোতে মানসিক উদ্বেগ, অবসাদ, দুশ্চিন্তা কমাতে আতা খাওয়ার প্রচলন ছিল। এমনকী, আতার দানাও চিবিয়ে খাওয়া হত শরীর থেকে স্ট্রেস সৃষ্টিকারী টক্সিন পদার্থ বের করতে। অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি গুণ আছে বলে আতা খেলে অ্যাজমার ঝুঁকি কমে। এমনই প্রমাণ পাওয়া গেছে বৈজ্ঞানিক গবেষণায়।পুষ্টিতে ভরপুর আতা: আতায় মেলে প্রচুর পরিমাণে এনার্জি।

১০০ গ্রাম আতায় মেলে ২৩.৬৪ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট। ৩৬.৬ গ্রাম ভিটামিন সি পাওয়া যায়। ক্যারোটেনয়েড মেলে যা ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিকেলস প্রতিরোধ করে। আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচারের তথ্য অনুযায়ী, ১০০ গ্রাম আতায় মেলে ১২% ভিটামিন বি৬ (পাইরিডক্সিন) যা সেরোটোনিন ও ডোপামিন হরমোনের নিঃসারণে সাহায্য করে। এসব নিউরোট্রান্সমিটার আমাদের মুড ঠিক রাখতে সাহায্য করে। কোলেস্টেরল নেই আতায়। ফ্যাটের পরিমাণ মাত্র ০.২৯ গ্রাম আর ফাইবারের পরিমাণ মাত্র ৪.৪ গ্রাম। তাই আতাকে বলা হয় সুপার ফুড। এছাড়াও আতায় মেলে থায়ামিন, রাইবোফ্লেভিন, নায়াসিন, ফোলেটের মতো ভিটামিন বি। সোডিয়াম খুব কম থাকে বলে উচ্চ রক্তচাপ থাকা ব্যক্তিরা নিরাপদে আতা খেতে পারেন। প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম আর ফসফরাস থাকে।

১) ভিটামিন এ আর ক্যারোটেনয়েড অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট লুটেইন আছে বলে আতা খেলে চোখ ভালো থাকে। ফ্ল্যাভোনয়েড অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ফোলা ভাব কমে।
২) ভিটামিন সি আর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকে বলে আতা খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
৩) ফাইবার থাকে বলে আতা হজমশক্তি বাড়িয়ে তোলে। ডায়েরিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা দূর করে। শরীর থেকে ক্ষতিকারক টক্সিন বের করতে সাহায্য করে।
৪) আতায় মেলে ফেনোলিক কম্পাউন্ড আর কোরেনয়েক অ্যাসিডের মতো অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট যা হার্টের রোগ আর ক্যানসার সৃষ্টিকারী ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিকেলসের বৃদ্ধি আটকায়।
৫) ফ্ল্যাভোনয়েড সমৃদ্ধ আতা খেলে ব্রেস্ট ক্যানসার, কোলন ক্যানসার, পাকস্থলীর ক্যানসার সৃষ্টিকারী কোষের বৃদ্ধি আটকায়।
৬) ভিটামিন বি৬ থাকে বলে আতা খেলে মুড ভালো থাকে। মন থেকে অবসাদ দূর হয়।
৭) ফোলেট, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ আতা খেলে অ্যানেমিয়া বা রক্তাল্পতার সমস্যা দূর হয়।
৮) আন স্যাচুরেটেড ফ্যাট আর স্বাস্থ্যকর ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড আছে আতায়, তাই আতা খেলে হার্ট ভালো থাকে।
৯) আতায় গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকে বলে তা রক্তের শর্করার মাত্রা বাড়ায় না। ডায়াবেটিকরাও নিরাপদে আতা খেতে পারেন।
১০) প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি রয়েছে আতায়। এছাড়াও মেলে ফ্রুকটোজ আর গ্লুকোজ যা শরীরে এনার্জি বাড়িয়ে তোলে।
১১) ভিটামিন এ, বি৬ আর সি মেলে আতায়। দস্তা, তামাও প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় বলে আতা ত্বকের যাবতীয় সমস্যা দূর করে।
১২) ভিটামিন বি থাকে বলে আতা খেলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ে।
১৩) ফসফরাস আর ভিটামিন কে আছে আতায়, হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
১৪) ভিটামিন সি, ফ্ল্যাভোনয়েড, আছে বলে আতা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। কাটাছেঁড়ার সমস্যা দূর করে।

Related Articles