লাইফস্টাইলস্বাস্থ্য

সামা চালে খান আর ওজন ঝড়ান কয়েক মাসে

Barnyard Millet

The Truth of Bengal, Mou Basu: কেন্দ্রীয় সরকারের সৌজন্যে গোটা দেশে এখন “মিলেটস” ঝড় বইছে। রাষ্ট্রসংঘ ২০২৩ সালকে “দ্য ইয়ার অফ মিলেটস” বা মিলেটসের বর্ষ বলে ঘোষণা করেছে। সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত জি-২০ আন্তর্জাতিক শীর্ষ সম্মেলনেও বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান ও অতিথি অভ্যাগতদের মিলেটস দিয়ে তৈরি নানান সুস্বাদু খাবার পরিবেশন করা হয়। কিন্তু জানেন কি মিলেটস হল বাঙালির অতি পরিচিত চিরচেনা সামা চাল। পুজো পার্বণের দিনে উপোসের সময় বাঙালিরা অন্ন বা অন্ন বা চাল দিয়ে তৈরি খাবার খান না। বিকল্প হিসাবে অনেকেই সামা চাল দিয়ে তৈরি খাবার খান। ছোট্ট ছোট্ট সাদা রঙের দানার সামা চাল কিন্তু দারুণ উপকারী স্বাস্থ্যকর এক খাবার।

সামা চাল হল ডায়াবেটিস রোগীদের বন্ধু। সামা চালে ক্যালরি কম থাকে। ফাইবার থাকে প্রচুর পরিমাণে। লো গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকায় রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায় না। সামা চালের ইংরেজি নাম হল barnyard millet। বৈজ্ঞানিক নাম Echinochloa frumantacea। নামে চাল থাকলেও সামা চাল কিন্তু শস্য নয় এক ধরনের বুনো ফলের দানা যা মূলত উত্তরাঞ্চলের পার্বত্য অঞ্চলে দেখা যায়। খুব তাড়াতাড়ি বেড়ে ওঠে এই গাছ। চারা রোপণ করার ৪৫ দিনের মধ্যে ফসল মেলে। বাংলায় সামা চাল বলে। হিন্দিতে সানওয়া, কন্নড়ে ও তেলগুতে  উদালু, তামিলে কুত্থিরাইভোল্লি বলা হয়। মিলেটসের খোসা সহজে হজম হয় না। শক্ত খোসা ছাড়ানোর পর ছোট্ট দানা মেলে। তা প্রসেস করার পর খাওয়ার উপযোগী হয়।

কেন খাবেন সামা চাল?

সামা চালে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম পাওয়া যায় বলে তা রক্তচাপ কমায়। হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

সহজে হজম হয় সামা চাল। বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেট ফোলার মতো সমস্যা দূর করে।

সামা চালে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন পাওয়া যায়। জোয়ার, বাজরা, রাগির চেয়ে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কম থাকে।

রক্তে অক্সিজেনের প্রবাহ বাড়ায় ও অক্সিজেনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে সামা চাল।

সামা চালে থাকা অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট ত্বক আর চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। চুলের গোড়া শক্ত করে বৃদ্ধি ঘটায়।

গম আর ভুট্টার চেয়েও বেশি প্রোটিন থাকে সামা চালে। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি থাকে বলে অত্যন্ত পুষ্টিকর। ২৫ গ্রাম সামা চালে ৭৫ ক্যালরি রয়েছে।

প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে বলে কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস হওয়া, পেট ফোলা ও পেট কামড়ে ধরার মতো সমস্যা দূর করে। Food Science and Technology নামক জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে সামা চালে ১২.৬% ফাইবার পাওয়া যায়।

কম কার্বোহাইড্রেট থাকে সামা চালে। যে পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট থাকে তা সহজেই হজম করা যায়। লো গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকায় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা অনায়াসে এই সহজপাচ্য খাবার খেতে পারেন। Food Science and Technology নামক জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে এক সপ্তাহ একজন ডায়াবেটিক রোগী নিয়মিত সামা চাল খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমবে। ফাস্টিং প্লাজমা গ্লুকোজ মাত্রা কমায় সামা চাল। গ্লুটেন ফ্রি খাবার সামা চাল। ১০০ গ্রাম সামা চালে ১৮.৬ মিলি গ্রাম লোহা থাকে। লোহা রক্তের লোহিত কণা তৈরির কাজে সাহায্য করে। রক্তে অক্সিজেনের প্রবাহ বাড়ায়।

Related Articles