সাড়ে ৪০০বছর আগে মায়ের স্বপ্নাদেশ গড়ে ওঠা কনকদুর্গার মন্দির
Kanakdurga temple built 400 years ago in mother's dreams

Truth of Bengal, দেবব্রত বাগ : অরণ্য সভ্যতার এ এক অনন্য ইতিহাস। শহরের সভ্যতার কাছে যা একেবারেই অজানা। প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ থেকে সাধারণ ভক্ত এই অন্যরকম দেবীর প্রাঙ্গনে আসেন। আদিবাসী অধ্যুষিত ঝাড়গ্রামের জামবনির চিল্কিগড়ে রয়েছে মা কনকদুর্গার মন্দির। পুজোর সময় এই চিল্কিগড়ে সবার আনাগোনা বাড়ে। কারণ এই ঝাড়গ্রামে রয়েছে নীলবসনা চতুর্ভুজা দেবী দুর্গা।
অন্যান্য জায়গায় শেখানে দুর্গা মায়ের মূর্তিতে মাকে দশভূজা হিসেবে দেখতে পাওয়া যায়,এখানে মায়ের রূপ নীলবসনা চতুর্ভুজা। কথিত আছে,প্রায় সাড়ে ৪০০বছর আগে মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়ে চিল্কিগড়ের রাজা গোপীনাথ সিংহ রাণীর কাঁকন বালা দিয়ে তৈরি করেছিলেন,কনকদুর্গার মন্দির। প্রথমে এখানে ব্রাক্ষণ রাজা স্বরূপ ত্রিপাঠী পুজো করেন,পরবর্তী সময়ে সামন্ত রাজা এই মায়ের পুজো করেন। তাই কনকদুর্গার আর্শীবাদ পাওয়ার জন্য পুজোর সময় সাধারণ মানুষের ভিড় বাড়ে।
অন্যান্য পুজোর নিয়মাবলীর থেকে এখানে পুজোর রীতি আলাদা। কারণ মা কে অন্ন ভোগের সঙ্গে সকালে ডিম, দুপুরে মাছ আবার রাতে অন্যান্য খাবার দেওয়া হয়। প্রতিবার খাবারের শেষে মায়ের জন্য একটি পান দিয়ে আসতেন এখানকার পুরোহিতরা। রাজ আমলের প্রথা মতো এখন এখানে পাঁঠা বলি দেওয়া হয়।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর দেওয়া অনুদানে চিল্কিগড় কনক দুর্গা মন্দির নতুন রূপ পেয়েছে। চিলকিগড়ে গিয়ে পৌঁছলেই মনে হবে প্রকৃতি তার সব রূপ যেন ঢেলে দিয়েছে। নদী, ছায়াঘন জঙ্গল, গাছে গাছে রঙবেরঙের প্রজাপতি, কি নেই সেখানে। জঙ্গলের মধ্যে কনকদুর্গা মন্দির, ডুলুং নদী এবং জঙ্গলের টানে পর্যটকের ভিড় এখানে লেগেই থাকে বছরভর। কিন্তু, রাতে থাকার ঠিকঠাক ব্যবস্থা না থাকায় মুখ ফেরাচ্ছিলেন পর্যটকরা। এবার সেই কালিমা ঘুচিয়ে নবরূপে তৈরি চিলকিগড়। জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় অতিথিশালা রয়েছে। প্রশাসনের উদ্যোগে মন্দির চত্বরে সৌন্দর্যায়নের কাজ হয়েছে। তাই এবার পর্যটকদের থাকার জন্য কোন অসুবিধায় পড়তে হবে না। রাজবাড়ীর নিয়ম মেনেই প্রতি বছরের মতো এবছর ও কনকদূর্গা মন্দিরে দূর্গা পুজোর আয়োজন করা হয়েছে।