রাশিয়ার বড়সড় হামলার জেরে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের আশঙ্কা ইউক্রেনে, জারি করা হয়েছে সতর্কতা
A warning has been issued in Ukraine due to the threat of power failure due to Russia's large-scale attack

The Truth of Bengal: ২বছরের ওপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলছে। স্থলপথের মতোই আকাশপথেও চলছে হামলা। যুদ্ধে কিছুতেই ইতি পড়ছে না। গত এপ্রিলে ড্রোন মারফত কিয়েভের বিদ্যুৎ কেন্দ্র ধ্বংস করার অভিযোগ ওঠে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ।সেই ধাক্কা সামলা উঠতে না উঠতেই আবারও বড়সড় রুশ হামলার মুখে পড়েছে ইউক্রেনের বিদ্যুত কেন্দ্র। ড্রোনও মিসাইল দুই মাধ্যমেই সেদেশে চলছে হামলা। এরমধ্যে মস্কো দুটো সীমান্তবর্তী গ্রামের ওপর দখলও কায়েম করেছে। এই অবস্থায় রাশিয়ার লাগাতার আক্রমণের মুখে পড়ে ইউক্রেনের বাহিনী প্রতিরোধ বাড়ানোর চেষ্টা করছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসিদের আক্রমণের ও বিজয়ের দিনেই এই হামলা চালানো হয়েছে। পুতিনকে নাৎসি বলে কটাক্ষও করেছেন জেলেনস্কি। ইউক্রেনের বিদ্যুৎ পরিকাঠামোর ওপর লাগাতার হামলার জেরে বিদ্যুৎ বিভ্রাট বাড়ছে।যার জন্য বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের আশঙ্কাও রয়ে গেছে।পাওয়ার অপারেটর ইউক্রেনারগো জানিয়েছেন,ঘরে ঘরে এরজন্য বিদ্যুৎ ঘাটতি দেখা দেবে। শিল্প প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ সংকট দেখা দিতে পারে।রাশিয়ার হামলার জেরে বিদ্যুৎ সংকট দেখা দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এবিষয়ে আরও জানা গেছে, বুধবার সকালে রাশিয়ান এই হামলায় ৫৫টির মধ্যে ৩৯টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং আক্রমণে ব্যবহৃত ২১টি আক্রমণাত্মক ড্রোনের মধ্যে ২০টি মাটিতে নামানোর কথা তুলে ধরেছে ইউক্রেনের বিমান বাহিনী। ইউক্রেনের জ্বালানি মন্ত্রী জার্মান গালুশচেঙ্কো তাঁর টেলিগ্রাম অ্যাপে জানিয়েছেন, সেদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থার ওপর এটি আরও একটি বড় আক্রমণ। এই আক্রমণে কিরোভোহরাদ, জাপোরিজজিয়া, এলভিভ, ইভানো-ফ্রাঙ্কিভস্ক ও ভিনিৎসিয়া অঞ্চলের বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন গালুশচেঙ্কো। ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইহোর ক্লাইমেনকো আরও জানিয়েছেন, প্রায় ৩৫০ জন উদ্ধারকারী রাশিয়ান হামলায় একাধিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, ৩০টি বাড়ি, গণপরিবহনের গাড়ি ও একটি ফায়ার স্টেশনের আগুন নেভানো ও উদ্ধার কাজ চালানোর চেষ্টা করেন।খারকিভ অঞ্চলের কিসলিভকা এলাকায় রাশিয়ান বাহিনী দখলদারি কায়েম করেছে বলে জানা গেছে।মস্কোর তরফে আরও জানানো হয়েছে, যে ইউক্রেনের একাধিক অঞ্চলের মতোই প্রায় ২০কিলোমিটার জায়গা তাদের আয়ত্তে এসেছে।রাশিয়া ইউক্রেনের রাজধানী শহর কিয়েভে একাধিক ক্রুজ হামলা চালানোয় শহরটি অবিন্যস্তও বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে।রাশিয়ার ক্রমাগত আক্রমণের মুখে পড়ায় ইউক্রেন আমেরিকা এই অবস্থায় সামরিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে চায়। এমনকি ওয়াশিংটন জানিয়েছে তারা ৬১ বিলিয়ন প্যাকেজ সাহায্য প্রদান করতে চায়।
জেলেনস্কি ধারাবাহিক হামলার মুখে পড়ে বন্ধুদেশের সহযোগিতা প্রার্থনা করেছে। মস্কোর এই উপুর্যপরি আক্রমণের মুখে বিধ্বস্ত হয়েছে বিদ্যুৎ পরিষেবা। উত্তরপূর্বের খারকিভের প্রায় ২লক্ষ বাড়িতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। রাশিয়ান ফেডারেশন বিভিন্ন বিদ্যুৎ উত্পাদন কেন্দ্রে দীর্ঘতর হামলা চালানোয় ঘরে ঘরে জ্বালানির সমস্যা তীব্রতর হয়েছে। বিশেষ করে ইউক্রেনের সামরিক শিল্প অঞ্চলে শক্তি উত্পাদন মুখ থুবড়ে পড়ায় আশঙ্কায় রয়েছে। এর আগে কিয়েভ রাশিয়ার তেল পরিশোধনকারী সংস্থা ও তেল মজুতকারী ডিপোয় ড্রোন হামলা চালিয়েছিল। এই বিদ্যুৎ ঘাটতির ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য ইউক্রেন জানিয়েছে,তাঁরা পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার আপ্রাণ চেষ্টা করছে।ইউরোপিয়ান দেশ থেকে বিদ্যুতের যোগান বাড়ানোর চেষ্টাও চলছে। অন্ততঃ ৬টি এলাকার বিদ্যুৎ কেন্দ্র আক্রান্ত হওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে তা মেরামতের চেষ্টা চলছে। ইউক্রেনের জ্বালানি মন্ত্রী জার্মান গালুশচেঙ্কো জানিয়েছেন,শক্তি উত্পাদন অব্যাহত রাখার প্রয়াস নেওয়া হচ্ছে,যাতে ইউক্রেনের আলোর ঘাটতি না হয়। ইউক্রেনের এনার্জি অপারেটর ডিটেক জানিয়েছে, বিদ্যুতের বড়সড় ব্যক্তিগত ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শামিগল জানিয়েছেন,এই আপত্কালীন পরিস্থিতি সামাল দিতে তাঁরা টাস্ক ফোর্স গড়েছেন। সামগ্রিক সমন্বয় গড়েই বিদ্যুতের এই বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে।