The Truth of Bengal: চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে উত্তেজনা অব্যাহত থাকার মধ্যেই চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন মূলভূমির সঙ্গে তাইওয়ানের পুনরেকত্রীকরণ অবশ্যই সম্পূর্ণ করতে হবে। মি. শি বলেছেন, এই পুনরায় একত্রীকরণ শান্তিপূর্ণভাবেই অর্জিত হওয়া উচিত, কিন্তু একই সঙ্গে তিনি সতর্ক করে দেন যে বিচ্ছিন্নতাবাদের বিরোধিতার ক্ষেত্রে চীনের “গৌরবময় ঐতিহ্য” রয়েছে। মি. শি ১৯১১ সালে যে বিপ্লবে চীনের শেষ রাজপরিবারের উচ্ছেদ ঘটেছিল – তার বার্ষিকী উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে একথা বলেন। চীনের প্রতিষ্ঠাতা মাও সে–তুংয়ের ১৩০তম জন্মদিন উপলক্ষে ওই ভাষণ দেন জিনপিং। তিনি বলেন, ‘মাতৃভূমির সঙ্গে পুনরেকত্রীকরণের প্রক্রিয়া শেষ করাটা উন্নয়নের অনিবার্য শর্ত। এটি ন্যায়নিষ্ঠ প্রক্রিয়া, যা জনগণ চায়। মাতৃভূমি অবশ্যই আবারও একত্র হবে।’তাইওয়ানের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট সাই ইং ওয়েনকে যুক্তরাষ্ট্রঘেঁষা বলে মনে করা হয়। তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে ডেমোক্রেটিক প্রোগ্রেসিভ পার্টি থেকে এবার ভাইস প্রেসিডেন্ট লাই চিং তে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এখন পর্যন্ত তিনি এগিয়ে আছেন। নির্বাচনী লড়াইয়ে অপর দুই প্রার্থী হলেন হো ইয়ু ইহ ও কো ওয়েন জে।
কুয়োমিনতাং পার্টির ইয়ু ইহ ও তাইওয়ান পিপলস পার্টির কো ওয়েন জেকে বেইজিংঘনিষ্ঠ বলে মনে করা হয়। চীনের কমিউনিস্ট পার্টি তাইওয়ানকে নিজস্ব ভূখণ্ড বলে দাবি করে থাকে। যদিও এ অঞ্চলে কখনো তাদের নিয়ন্ত্রণ ছিল না। চীনা আধিকারিকরা বারবারই শান্তিপূর্ণভাবে তাইওয়ানকে চীনের সঙ্গে যুক্ত করার ইচ্ছা প্রকাশ করে আসছেন। তবে প্রয়োজনে জোর খাটানোর সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁরা। ভাষণে সি বলেন, ‘তাদের অবশ্যই আন্তপ্রণালি সম্পর্ককে শান্তিপূর্ণভাবে উন্নত করার জন্য কাজ করতে হবে। যেকোনোভাবেই হোক, চীন থেকে তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্ন করতে চাওয়া যে কাউকেই প্রতিরোধ করতে হবে।’ জিনপিং এই সতর্কবাণী শুধু তাইওয়ানবাসীর জন্যই নয়, ওয়াশিটংনের জন্যও দিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
গত মাসে সান ফ্রান্সিসকোতে সম্মেলন চলার সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে চীনা প্রেসিডেন্ট সি বলেছিলেন, চীনের সঙ্গে তাইওয়ানের পুনরায় একত্রীকরণকে থামানো যাবে না। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ কথা জানানো হয়েছিল।২০২২ সালের আগস্টে তৎকালীন মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ান সফর করেন। এরপর তাইওয়ান ঘিরে কয়েক দিন ধরে সামরিক মহড়া চালাতে থাকে চীন। চীনের ওই মহড়ার কারণে তাইওয়ান প্রণালিতে জাহাজ চলাচল যেমন বন্ধ ছিল, তেমনি তাইওয়ানে আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনসগুলো তাদের ফ্লাইট বাতিল করতে বাধ্য হয়। এভাবে রীতিমতো তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছিল চীন। যুক্তরাষ্ট্র অনানুষ্ঠানিকভাবে তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছে। আবার তারা ‘এক চীন নীতি’র সমর্থক। এ নীতি অনুযায়ী তাইওয়ান চীনের অংশ। তবে ওয়াশিংটন কখনোই আনুষ্ঠানিকভাবে তাইওয়ানকে বেইজিংয়ের অংশ হিসেবে স্বীকার করেনি।
