কলকাতা

আগামীর বাংলা কেমন হবে? দিশা দেখাচ্ছে বাবুবাগান

Durga Pujo 2023

The Truth of Benga,Mou basu: দুর্গাপুজোর মতো রাজসূয় যজ্ঞের হ্যাপা সামলানো এমনিতেই কঠিন। করোনা কাঁটা বিদায় নিলেও রয়েছে ডেঙ্গু জ্বরের রক্তচক্ষু। ঘরে ঘরে এখন জ্বর, সর্দিকাশি। এরমধ্যে নিম্নচাপের মুষলধারে বৃষ্টির হ্যাপা সামলে পুজোর আয়োজন করা সবুজ পিচে ক্লাইভ লয়েডের নেতৃত্বাধীন ভয়ঙ্কর পেস ব্যাটারিকে সামলানোর মতোই যে কঠিন কাজ তা এখন ভালোই বুঝতে পারছেন বাবুবাগানের পুজো কমিটির ২ কর্মকর্তা ডঃ সুজাতা গুপ্ত ও সরোজ ভৌমিক। কিন্তু দমতে নারাজ বাবুবাগান পুজো কমিটির কর্মকর্তারা। প্রবল দুর্যোগের মধ্যেও যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে পুজোর আয়োজন।প্রত্যেক বছরই নিত্য নতুন থিমের মাধ্যমে সামাজিক বার্তা দিয়ে সবাইকে চমকে দেয় দক্ষিণ কলকাতার ঐতিহ্যবাহী পুজো কমিটি বাবুবাগান। ৬২তম বছরে এবার তাদের থিম “আগামীর বাংলা”। ভবিষ্যতে আধুনিক বাংলা কেমন হবে? তার এক টুকরো ঝলক মিলবে বাবুবাগানে।পরিবেশের ক্ষতি করে নয় বরং প্রযুক্তির হাত ধরেই পরিবেশকে রক্ষা করেই আধুনিকতা ও ঐতিহ্যের সুন্দর মেলবন্ধন কেমন করে ঘটাতে হয়। তারই সুন্দর বার্তা অসাধারণ মণ্ডপসজ্জার মাধ্যমে তুলে ধরা হচ্ছে বাবুবাগানে। সামগ্রিক সৃজনের দায়িত্বে ও পরিকল্পনায় আছেন অধ্যাপিকা ডক্টর সুজাতা গুপ্ত।

প্রতিমা রূপায়ণ করছেন সনাতন পাল। সুরে সুরে সুন্দর আবহ তৈরি করছেন বিশিষ্ট সুরকার কল্যাণ সেন বরাট।থিম শিল্পী অধ্যাপিকা ডক্টর সুজাতা গুপ্ত জানান, “বাংলার মানুষ হিসাবে আগামী দিনে বাংলার শহরকে আমরা কেমন ভাবে দেখতে চাই তাই তুলে ধরা হচ্ছে। এমন নগরায়ন চাই যা দূষণ মুক্ত হবে। তাই আমরা বৈদ্যুতিক গাড়ি ব্যবহার করছি। সৌর শক্তি ব্যবহার করা হবে। রাসায়নিক সার ব্যবহার না করে জৈব সার ব্যবহার করে চাষ করা হয়েছে এমন পণ্য তুলে ধরব। চারপাশে সবুজের সমারোহ থাকবে। মণ্ডপে যে ভবিষ্যতের বাংলার শহর কেমন হবে তা দেখানো হবে। দূষণ মুক্ত পরিবেশ তুলে ধরতে গাছপালা, পশুপাখি প্রতীকী স্বরূপ রাখা হবে।

ফিউচারিস্টিক সিটিতে কলকাতার নানান আইকনিক বা ঐতিহ্যবাহী ইমারত তুলে ধরা হবে। গোটা মণ্ডপই ল্যান্ডস্কেপ হিসাবে ব্যবহার করা হবে। সাবেকি সনাতনী ঠাকুর হবে। তবে থিমের সঙ্গে, সবুজায়নের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে হবে। তবে মায়ের স্বরূপ “শান্তিপ্রিয়”। মা আমাদের রাগী নন। মহিষাসুর মায়ের পায়ের তলায় আত্মসমর্পণের ভঙ্গিতে বসে থাকবে।”ভবিষ্যতের বাংলায় আধুনিক ভাবে পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নগরায়ন কীভাবে হবে? তার ঝলক মিলবে বাবুবাগানে। পরিবেশ দূষিত না করেও কীভাবে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারে ইকো ফ্রেন্ডলি আধুনিক নাগরিক জীবনযাত্রা তৈরি করা সম্ভব তার উত্তর দিচ্ছে বাবুবাগান। তবে নতুনকে আপন করে নেওয়া মানে পুরনোকে বাতিলের দলে ফেলে দিয়ে ব্রাত্য করে রাখা নয়। শহর কলকাতার একের পর এক ইমারত যা কল্লোলিনী কলকাতার সংস্কৃতি এবং আধুনিকতার প্রতীক তাও তুলে ধরা হবে মণ্ডপে। গোটা বিশ্বই আজ পরিবেশ দূষণ ও বিশ্ব উষ্ণায়নের সমস্যায় জর্জরিত। সময়ের দাবি মেনে দূষিত পরিবেশমুক্ত শহর কেমন হওয়া উচিত? কেমন করে এনার্জি কনজারভেশন বা প্রাকৃতিক সম্পদকে সংরক্ষণ করতে হবে? তার পথও বাতলে দিচ্ছে বাবুবাগান।

Related Articles