অনশনকারী জুনিয়র ডাক্তার পুলস্ত্য কেমন আছেন? জানালেন এনআরএসের জয়দীপ
Health update of Junior doctor Pulastya Acharya

Truth Of Bengal : নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের (এনআরএস) মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. জয়দীপ দেব জানিয়েছেন যে অনশনকারী জুনিয়র ডাক্তার পুলস্ত্য আচার্যকে সময় মতো হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও তাঁর শারীরিক অবস্থা এখনও সঙ্কটজনক। তবে চিকিৎসায় কিছুটা সাড়া দিচ্ছেন তিনি।
পুলস্ত্য আচার্য, যিনি ধর্মতলায় আমরণ অনশন শুরু করেছিলেন, আট দিন পর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে এনআরএসের সিসিইউতে ভর্তি করানো হয়। টানা অনশনের ফলে তাঁর কিটোন বডির পরিমাণ বেড়ে যায় এবং তলপেটে যন্ত্রণা ও বমি ভাব শুরু হয়।
ডা. জয়দীপ দেব আরও জানান, পুলস্ত্যের শারীরিক অবস্থা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে এবং তাঁর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অনশনকারীদের শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত গুরুতর হয়ে উঠেছে, যা তাঁদের আন্দোলনের গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে পুলস্ত্যের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছে তাঁর পরিবার ও সহকর্মীরা। আন্দোলনকারীরা দাবি জানিয়েছেন, তাঁদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত তাঁরা অনশন চালিয়ে যাবেন, তবে তাঁদের শারীরিক অবস্থা দেখে সবার মধ্যেই উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।
জয়দীপ বলেন, “পুলস্ত্য আচার্য সাত দিন ধরে অনশনে ছিলেন। টানা অনশনে থাকার ফলে তাঁর মানসিক সচেতনতা কমে যায়। তাঁর অবচেতন হওয়ার মতো পরিস্থিতি হয় এবং দীর্ঘ সময় ধরে না খাওয়ার কারণে তাঁর পেটে ব্যথা হয়।”
তিনি আরও বলেন, “সময় মতো তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও এখনও পরিস্থিতি সঙ্কটমুক্ত নয়। সোডিয়াম, পটাশিয়াম পরীক্ষা করা হয়েছে। রিপোর্টে দেখা গিয়েছে তাঁর শরীরে সোডিয়াম, পটাশিয়াম এবং অ্যাসিড বেসের মাত্রার পরিবর্তন হওয়ার ফলে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। দীর্ঘ সময় না খাওয়ার জন্য মূলত এই সমস্যাগুলি হয়েছে। তাঁর এখন চিকিৎসা চলছে। আরও নানা রকমের পরীক্ষানিরীক্ষা করা হবে। শরীরে জলশূন্যতা রয়েছে। তাঁকে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। তাঁর অবস্থা এখন স্থিতিশীল হলেও বিপদ কাটেনি।”
ইতিমধ্যেই পুলস্ত্যের চিকিৎসার জন্য একটি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। এনআরএসে পাঁচ সদস্যের দ্বারা গঠন হওয়া টিমে রয়েছেন জেনারেল মেডিসিন, চেস্ট, কার্ডিও, নেফ্রো এবং অ্যানাস্থেসিয়া বিভাগের বিশেষজ্ঞেরা। বর্তমানে তাঁদের তত্তাবধানেই পুলস্ত্যের স্বাস্থ্যপরীক্ষা এবং চিকিৎসা চলবে।
প্রসঙ্গত, গত ৫ অক্টোবর ধর্মতলায় আমরণ অনশন শুরু করেছিলেন ছয়জন জুনিয়র ডাক্তার। তাঁদের মধ্যে ছিলেন অ্যানাস্থেসিয়া বিভাগের প্রথম বর্ষের পিজিটি পড়ুয়া পুলস্ত্য। টানা আট দিন ধরে সেখানেই অনশন চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি ও অন্যরা।
রবিবার সন্ধ্যায় পুলস্ত্যের তলপেটে যন্ত্রণা শুরু হয় এবং সঙ্গে বমি ভাবও ছিল। অনশনমঞ্চে উপস্থিত চিকিৎসকেরা তাঁকে পরীক্ষা করে দেখেন, তাঁর কিটোন বডির পরিমাণ বেড়ে গেছে। এই অবস্থায় আন্দোলনকারীরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরে পুলস্ত্যকে এনআরএস মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি করানো হয়। তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার কারণে তাঁকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
এই ঘটনা ধর্মতলার অনশনের প্রতি নতুন করে নজর কেড়েছে এবং আন্দোলনকারীদের পরিস্থিতির গুরুত্ব তুলে ধরেছে। চিকিৎসকরা অনশনের কারণে শরীরের উপর যে প্রভাব পড়ছে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন, এবং পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।