‘জলতরঙ্গ’ কর্মসূচিতে খোশ মেজাজে রাজ্যপাল, সহজ-সরল ভঙ্গিতে মানুষের কাছে রাজ্যপাল
কোথাও রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে চপ খেলেন, কোথাও রাসমেলায় ফুচকার স্বাদ নিলেন, আর কোথাও কীর্তনের তালে খোল-করতাল হাতে নিয়ে যোগ দিলেন সাংস্কৃতিক পর্বে।
Truth Of Bengal: দায়িত্বের তিন বছর পূর্তিতে আবারও নিজের স্বাভাবিক সহজ-সরল ভঙ্গিতেই সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে গেলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত একের পর এক কর্মসূচিতে নদীপথে নাজিরগঞ্জ, সাঁকরাইল ও বজবজ ঘুরে দেখলেন তিনি। কোথাও রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে চপ খেলেন, কোথাও রাসমেলায় ফুচকার স্বাদ নিলেন, আর কোথাও কীর্তনের তালে খোল-করতাল হাতে নিয়ে যোগ দিলেন সাংস্কৃতিক পর্বে। রাজ্যপালের এই সফরজুড়ে ছিল হাসিমুখে হাত মেলানো, মানুষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা এবং তাদের সমস্যার কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা।
Why should I only watch it…You watch it too…
By the way, Ladies & Gentleman – this is the constitutional head of the state of WB – Bengal Governor, Shri CV Ananda Bose. pic.twitter.com/sHq4ztzJmR
— 𝐑𝐢𝐣𝐮 𝐃𝐮𝐭𝐭𝐚 (@DrRijuDutta_TMC) November 22, 2025
রাজভবনের উদ্যোগে ‘আমাদের গ্রাম, আমাদের রাজ্যপাল’ প্রকল্পের অংশ হিসেবে আয়োজন করা হয় ‘জলতরঙ্গ’ কর্মসূচি। রিভার ট্র্যাফিক গার্ডের জেটি থেকে লঞ্চে যাত্রা শুরু করেন রাজ্যপাল। প্রথম গন্তব্য নাজিরগঞ্জ। সেখানে তিনি স্বামী প্রজ্ঞানন্দ সরস্বতী বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেন, তাঁদের পড়াশোনা ও এলাকার অবকাঠামোর খোঁজখবর নেন। এরপর স্থানীয় মন্দিরে পুজো দিয়ে পৌঁছন হুগলি কোচিন শিপইয়ার্ড লিমিটেডে। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক শেষে আচমকাই একটি ছোট দোকানে বসে চপ ও ছোলা সেদ্ধ অর্ডার করেন। স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপের ফাঁকে স্বভাবসুলভ বাংলায় বলেন, ‘দারুণ লাগল।’
এরপর লঞ্চ আসে সাঁকরাইলে। স্কুলে যাওয়ার পথে রাস্তায় জড়ো হওয়া মানুষ দেখে হঠাৎ নেমে পড়েন রাজ্যপাল। অনেকে অভিযোগ জানান, এলাকার একটি জুটমিল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বহু পরিবার অর্থনৈতিক সমস্যায় পড়েছে। তাঁদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন তিনি। এমনকি ভগ্নদশা বাড়ি থেকে এক মহিলা তাঁর আর্থিক অসুবিধার কথা জানান, রাজ্যপাল সেখানে দাঁড়িয়ে সাহায্যের আশ্বাস দেন এবং ২৫ হাজার টাকা সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেন। পরে সাঁকরাইল গার্লস হাইস্কুলে ভারতীয় জাদুঘরের ‘দ্য ওয়ান্ডার’ প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন এবং পড়ুয়াদের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।
দুপুরের পরের সময় বজবজে পৌঁছে ফেরিঘাটে নামতেই রাসমেলার কোলাহল রাজ্যপালকে আকৃষ্ট করে। সঙ্গে থাকা ছেলে-সহ দাঁড়িয়ে ফুচকা খেলেন, মানুষের সঙ্গে ছবি তুললেন এবং আলাপ-আলোচনা চালালেন। সফরশেষে লঞ্চে ফেরার সময় শিল্পীরা কীর্তন পরিবেশন শুরু করলে রাজ্যপালও হাতে খোল-করতাল তুলে নেন। লঞ্চ ভরে ওঠে তালি, গান আর হাসিতে—ফের প্রমাণ মিলল, প্রটোকলের আড়াল ভেঙে নিজে সরাসরি মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে চান তিনি।
পর্যবেক্ষকদের মতে, এই সফর শুধু প্রকল্প পরিদর্শন নয়, বরং রাজ্যপালের জনসংযোগের এক নতুন অধ্যায়। দায়িত্বে তিন বছর পূর্তির পরও মানুষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন আনন্দ বোস—এমনটাই মত স্থানীয়দের।






