ইলিশ বাঁচাতে ফিশিং ব্যানে কড়া নজরদারির দাবি মৎস্যজীবীদের
Fishermen demand strict monitoring of fishing ban to save Hilsa

Truth Of Bengal: লোকেশ হালদার,দক্ষিণ ২৪ পরগনাঃ ১৪ই এপ্রিল থেকে শুরু হতে চলেছে বহুল প্রতীক্ষিত ফিশিং ব্যান পিরিয়ড। প্রতি বছরের মতোই এই সময় সমুদ্র এবং নদী মোহনার জলরাশিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়, যাতে মাছের প্রজনন নির্বিঘ্নে হয় এবং সামুদ্রিক জীব বৈচিত্র্য রক্ষা পায়। তবে বাস্তব চিত্র বলছে, নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বহু মৎস্যজীবী সেই নির্দেশিকা লঙ্ঘন করে চুপিসারে মাছ ধরার কাজ চালিয়ে যান।
এই প্রবণতা রুখতে এবার সরব হয়েছে মৎস্যজীবী সংগঠনগুলি। সংগঠনের পক্ষ থেকে জাননো হয়েছে, শুধুমাত্র প্রশাসনের উপর দায় চাপিয়ে দিলে চলবে না, ইলিশ বাঁচাতে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সচেতনতা জরুরী। তারা বলেছেন, সকলের সম্মিলিত উদ্যোগ ছাড়া এই অবৈধ মাছ ধরার প্রবনতা বন্ধ করা সম্ভব নয়।
বিশেষত এই সময় অনেকেই ছোট আকারের মাছ, এমনকি খোকা ইলিশ পর্যন্ত ধরে থাকেন। মৎস্যজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট ভাবে জানানো হয়েছে যে, এর ফলে ভবিষ্যতে বড় ইলিশের সরবরাহ কমে যেতে পারে।
হারাধন ময়রা, সংগঠনের এক সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ছোট ইলিশ ধরা সম্পূর্ণ বেআইনি। প্রশাসনের আরও কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। এখনই যদি ব্যবস্থা না নেওয়া হয় , আগামী দিনে বাঙালির পাতে ইলিশ তুলে দেওয়া সত্যই অসম্ভব হয়ে উঠবে।”
স্থানীয় মানুষ জনও এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের প্রশ্ন, “যদি এইভাবে ছোট মাছ ধরা চলতেই থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে কি আমাদের প্রিয় ইলিশ পাবো?” এ প্রশ্ন শুধু তাদের নয়, বরং বঙ্গবাসীর মনের চিন্তার প্রতিফলন।
মৎস্যজীবী সংগঠনের মতে, প্রশাসনের তৎপরতার ঘাটতি এই সমস্যার বড় কারণ। হারাধন ময়রা আরও জানান, “প্রশাসনের তরফে একাধিকবার বৈঠকে বলা হয়েছে এই সময় ছোট মাছ ধরা চলবে না। তবু কেউ যদি এই নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করে, প্রশাসনকে কঠোরতম পদক্ষেপ নিতে হবে।”
নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে হলে শুধু আইন নয়, দরকার সচেতনতারও। গ্রামের প্রতিটি স্তরে, মৎস্যজীবী মহলে, এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি ছাড়া এই অবৈধ কাজ বন্ধ করা যাবে না বলে মনে করছেন সংগঠনের নেতারা।
নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা হতেই ইতিমধ্যে ধীরে ধীরে ঘাটে ফিরতে শুরু করেছে একের পর এক ট্রলার। দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘি ঘাটে দেখা গেল, মৎস্যজীবীরা ট্রলার থেকে জাল, সরঞ্জাম নামিয়ে নিচ্ছেন। নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন মাছ ধরা বন্ধ রাখতে বাধ্য হবেন তাঁরা। যদিও এই সময়ে কোনও অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে প্রশাসনের নজরদারি বজায় রাখা হবে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানানো হয়েছে।
এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন এবং মৎস্যজীবী সংগঠনের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এবারে কতটা সফল হয় ফিশিং ব্যান পিরিয়ড। কারণ, এই নিয়ম মেনে না চললে ভবিষ্যতে ইলিশের জোগান সংকুচিত হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা।