পরিকাঠামো প্রস্তুত, নানা জটিলতায় মালদায় যাত্রা থমকে বিমানবন্দরের
Infrastructure ready, airport halts travel to Malda due to various complications

Truth Of Bengal: মালদায় বিমান পরিষেবা নিয়ে শুরু রাজনৈতিক তরজা। দীর্ঘদিন কেটে গেছে। রানওয়ে ইতিমধ্যে প্রায় তৈরি হয়ে গেছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯ আসন বিশিষ্ট ছোট মাপের বিমান মালদায় ওঠানামা করবে। সরাসরি মালদা থেকে কলকাতা এবং শিলিগুড়ি যাওয়ার ব্যবস্থা হবে এই বিমানবন্দরের মাধ্যমে।
বিমানবন্দর বারবার চালু করার কথা হলেও এখনও পর্যন্ত চালু হয়নি। বিষয়টি ইতিমধ্যে বিভিন্ন মহল খুশি প্রকাশ করেছে যে মালদায় আবার বিমান পরিষেবা চালু হবে। কিন্তু তার মধ্যেও শাসক-বিরোধীর তরজা থেমে নেই। যদিও ব্যবসায়ী মহল চাইছে, রাজনৈতিক বাকবিতণ্ডা ভুলে সাধারণ মানুষের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে দ্রুত মালদায় বিমান পরিষেবা চালু করা হোক।
ইংরেজবাজার শহরের পশ্চিম প্রান্তে বাগবাড়ি যাওয়ার পথে মালদা-মানিকচক রাজ্য সড়কের পাশেই রয়েছে বিমানবন্দরটি। আশির দশকে মালদায় বিমান পরিষেবা চালু ছিল। এরপর নানান জটিলতার কারণে সেই বিমান পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর কেটে গিয়েছে দীর্ঘ কয়েক দশক। কিন্তু আজও বিমান পরিষেবা চালু হয়নি। মাঝে পরিত্যক্ত হয়েছিল মালদার বিমানবন্দরটি।
রাজ্য প্রশাসন এবং এয়ারপোর্ট অথরিটি যৌথ উদ্যোগে সেটি সংস্কারকরাহয়।পরবর্তীতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে মালদায় বিমানবন্দর চালুর ক্ষেত্রে বিভিন্ন মহল থেকে আবেদন জানানো হয়। বিমান পরিষেবা চালু করার উদ্যোগী হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ইতিমধ্যে রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে মালদার বিমানবন্দরের রানওয়ে সহ নানান ধরনের পরিকাঠামোর কাজও করে ফেলা হয়েছে। ঘিরে ফেলা হয়েছে বিমানবন্দরের চতুর্দিক। এখন শুধু এয়ারপোর্ট অথরিটির সবুজ সংকেতের অপেক্ষায় রাজ্য প্রশাসন।
মালদা মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি জয়ন্ত কুণ্ডু বলেন, জেলায় ধীরে ধীরে বড় বড় শিল্প গড়ে উঠছে। সেক্ষেত্রে বিমানবন্দর চালু হওয়াটা অত্যন্ত প্রয়োজন। মানুষের হাতে এখন সময় নেই। শর্টকাটে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে চায় সাধারণ মানুষ। শুধু ব্যবসা সংক্রান্তই নয়, চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়েও মালদার বাইরে অনেকে ডাক্তার দেখাতে যান।
সেক্ষেত্রেও বিমান পরিষেবা চালু হলে সাধারণ মানুষ উপকার পাবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি নির্দেশের পর জেলা প্রশাসন অত্যন্ত গভীরভাবে এয়ারপোর্ট চালু করা নিয়ে নানান উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সাধারণ নাগরিক বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সবসময়ই মালদায় বিমান পরিষেবার চালু করার ক্ষেত্রে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু কেন্দ্রের অধীনস্থ এয়ারপোর্ট অথরিটি নানা অজুহাত দেখিয়ে জটিলতা তৈরি করে রেখেছে। তবে এবারে আশা করছি খুব শীঘ্রই মালদায় বিমান পরিষেবা চালু হয়ে যাবে।
বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ি বলেন, ‘২০১৭ সালে বিমানবন্দর সম্পূর্ণ ভাবে পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য রাজ্য সরকার অধিগ্রহণ করেছিল। সেই সময় কেন্দ্র সরকার ১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। এরপর কতটা কী কাজ হয়েছে জানা নেই।
এখনও রাজ্য সরকারের অধীনেই রয়েছে মালদার বিমানবন্দরটি। পরিকাঠামো উন্নয়নের পর সেটি এয়ারপোর্ট অথরিটি হাতে তুলে দেওয়া হয়নি। শুধু তাই নয়, যে রানওয়ে দিয়ে বিমান উঠানামা করবে তার আশেপাশে ইংরেজবাজার পুরসভা বহুতল তৈরির অনুমতি দিয়ে রেখেছে। কাজেই রাজ্য সরকার যতই মুখে বলুক না কেন এটা কতটা কার্যকরী হবে তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান তথা তৃণমূলের রাজ্যের সহ সভাপতি কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী বলেন, বিজেপির অভিযোগ সঠিক নয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি নিজেই মালদার বিমানবন্দর চালু করা নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সমস্ত পরিকাঠামোর কাজ রাজ্য প্রশাসন করেছে। আসলে মানুষের কাছে এখন সময়ের অভাব। তাই এই ধরনের বিমান পরিষেবা চালু করা অত্যন্ত প্রয়োজন। আশা করছি খুব শীঘ্রই মালদায় বিমান পরিষেবা চালু হয়ে যাবে।