ফের পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু, ওড়িশায় বাংলার শ্রমিক খুনের অভিযোগ
সেখানে সুতির আরও সাত জন পরিযায়ী শ্রমিক এক সঙ্গে একটি ঘরে ছিলেন।
Truth Of Bengal: ফের পরিযায়ী শ্রমিককে বাংলাদেশি বলে মারধর করে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ ওড়িশার সম্বলপুরে, জখম আরও দু’জন। পরিবার সুত্রে জানা গিয়েছে, মৃত পরিযায়ী শ্রমিকের নাম জুয়েল রানা, বয়স ২১। বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলার সুতি থানার চক বাহাদুরপুর এলাকায়। মাত্র দিন পাঁচেক আগে ওড়িশার সম্বলপুরে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গিয়েছিলেন জুয়েল। সেখানে সুতির আরও সাত জন পরিযায়ী শ্রমিক এক সঙ্গে একটি ঘরে ছিলেন।
বুধবার সন্ধ্যায় একটি ঘরে জুয়েল, আতিউর রহমান ও সানোয়ার হোসেন তিন জন রান্না করছিলেন। অন্য ঘরে আরও পাঁচ জন ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। হঠাৎই বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতী এসে তাঁদের তিনজনকে বিনা প্ররোচনায় মারধর শুরু করে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁরা লুটিয়ে পড়লে দুষ্কৃতীরা সেখান থেকে পালিয়ে যায় বলে জানা গিয়েছে। তাঁদের চিৎকার শুনে আশেপাশের পরিযায়ী শ্রমিকরা ছুটে এসে তাঁদের উদ্ধার করে স্থানীয় সম্বলপুর হাসপাতালে ভর্তি করে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জুয়েল শেখের মৃত্যু হয় বলে জানা যায়। বাকি দুজন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। ঘটনার খবর মুর্শিদাবাদের বাড়িতে এসে পৌঁছতেই পরিবারের লোকেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে পরিবার। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
জুয়েলের কাকা আনোয়ার শেখ বলেন, চলতি বছরের জুন মাস থেকে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলার শ্রমিকদের হেনস্থা, তাঁদের ওপর নির্যাতন, এমনকি মৃত্যুর খবর পর্যন্ত সামনে এসেছে।
ওড়িশা থেকে মহারাষ্ট্র, দিল্লি থেকে উত্তরপ্রদেশ, ছত্তিশগড় থেকে রাজস্থান। একের পর এক বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলাভাষী শ্রমিকদের ওপর অত্যাচার। বাংলাদেশি তকমা লাগিয়ে দিয়ে তাঁদের ওপর নামিয়ে আনা হয়েছে অকথ্য অত্যাচার। এর প্রতিবাদে পথে নেমেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা সহ বোলপুর ও ঝাড়গ্রামেও পদযাত্রা করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। সেই প্রতিবাদের আঁচ গিয়ে পৌঁছয়। দিল্লিতেও পার্লামেন্টে ওঠে বাঙালি হেনস্থা ইস্যু। সংসদের বাদল অধিবেশন চলাকালীন সংসদ ভবন চত্বরেও বিক্ষোভ সাংসদদের বিজেপি বিরোধী সাংসদরা বাঙালি হেনস্থার ঘটনার প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছিলেন।
বিজেপি শাসিত রাজ্যে আবার এমন জঘন্য ঘটনায় প্রশাসনিক ব্যর্থতা এবং রাজনৈতিক সঙ্কীর্ণতার অভিযোগ করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী ডাঃ শশী পাঁজা। জবাব চেয়েছেন ভারতীয় জনতা পার্টির কাছে।
মন্ত্রী ডাঃ শশী পাঁজা এই ঘটনায় বলেন, সুতির আরও পাঁচ শ্রমিক ওই ওড়িশার সম্বলপুরে রয়েছেন। তাঁদের পরিবারের লোকজন আতঙ্কে ভুগছেন। ঘটনার খবর পেয়ে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা করতে যান সুতির বিধায়ক ইমানি বিশ্বাস, রঘুনাথগঞ্জের বিধায়ক রাজ্যের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আখরুজাম্মান, সুতি থানার আইসি সুপ্রিয় রঞ্জন মাঝি, সুতির বিডিও। বিধায়ক আখরুজ্জামান বলেন, ‘ডবল ইঞ্জিন সরকারের রাজ্যগুলোতেই বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের মারধর, হেনস্থা করা হচ্ছে।’
রঘুনাথগঞ্জ বিধায়ক আখরুজাম্মান বলেন, বারবার বিজেপি শাসিত রাজ্যে আক্রমণের সামনে পড়তে হচ্ছে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের। অবস্থা ফিরবে কবে? কবে ব্যবস্থা নেবে কেন্দ্রে সরকার? প্রশ্ন বিভিন্ন রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া বাংলাভাষী শ্রমিকদের।






